দেশের আর্থিক রাজধানী মুম্বাইয়ে করোনার চেয়ে হার্ট অ্যাটাকে বেশি মৃত্যু ঘটছে। জানা গিয়েছে, গত বছরের জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে মুম্বাইয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১৮০০০ জন মারা গেছেন।
২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে করোনার কারণে ১০,২৮৯ জন মারা গেছেন। একটি RTI-তে এই তথ্য উঠে এসেছে। এই আরটিআই-এর অধিনে চেতন কোঠারি নামে একজন কর্মীর প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে BMC।
RTI-তে দেওয়া উত্তর অনুযায়ী, ২০১৮ সালে হার্ট অ্যাটাকের কারণে ৮,৬০১ জন মারা গিয়েছিল। ২০১৯ সালে, এই সংখ্যাটি ৫,৮৪৯-এ নেমে এসেছে। ২০২০ সালেও হার্ট অ্যাটাকের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। ওই বছর হার্ট অ্যাটাকের কারণে ৫,৬৩৩ জন মারা গেছেন।
তবে, ২০২১ সালে, হার্ট অ্যাটাকের কারণে প্রাণ হারানো মানুষের সংখ্যা তিন গুণেরও বেশি বেড়ে গিয়েছে। গত বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত, ৬ মাসে মুম্বাইয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ১৭,৮৮০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। অর্থাৎ, ওই ৬ মাসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন প্রায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
আরটিআই অনুসারে, করোনা মহামারী আসার আগে ক্যান্সার ছিল সবচেয়ে মারাত্মক রোগ। ২০১৮ সালে মুম্বাইতে ১০ হাজার ৭৩ জন এবং ২০১৯ সালে ক্যান্সারের কারণে ৯,৯৫৮ জন মারা গিয়েছিল। যেখানে, ২০২০ সালে ৮,৫৭৬ জন এবং ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে ৬,৮৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে হার্ট অ্যাটাকের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির তিনটি কারণ রয়েছে। প্রথম: করোনা থেকে সেরে ওঠার পর থ্রম্বোসিসের কারণে এটি হতে পারে। দ্বিতীয়: মহামারী রোগীদের চিকিৎসা বিলম্বিত করেছে। তৃতীয়: এখন ডেটা ভালভাবে রেকর্ড করা হচ্ছে।
মুম্বাই একা নয়, মহামারী চলাকালীন বিশ্বব্যাপী হার্ট অ্যাটাকের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। একাধিক গবেষণায় জানা গেছে, করোনা হওয়ার পর আক্রান্তের হার্ট ও রক্তনালিতে সমস্যা হয়, যা রক্ত জমাট বাঁধা, হার্টে প্রদাহ এবং হার্ট ফেইলিউরের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
২০২১ সালের অগাস্টে, বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকা ল্যানসেটে প্রকাশিত একটি গবেষণায় জানা গেছে যে, করোনা থেকে সেরে ওঠার কয়েক সপ্তাহ পরে, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ৩-৪ গুণ বেড়ে যায়।