আপনিও নিশ্চয়ই শুনেছেন যে ঠান্ডা ঋতুতে শরীর গরম রাখতে আমাদের ডিম খাওয়া উচিত। কিন্তু শীতকালে কি রোজ ডিম খাওয়া উচিত? আগে জেনে নিন, তারপর শরীর বুঝে খান।
ডিমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমরা মোটামুটি সকলেই প্রায় জানি। সুসম আহারের তালিকার একেবারে উপরের দিকেই রয়েছে ডিম। শিশুর সম্পূর্ণ শারীরিক বিকাশে, রোগমুক্ত হওয়ার পর শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে ডিমের জুড়ি মেলা ভার! তবে যাঁদের উচ্চ কোলেস্টরল, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা বা ইউরিক অ্যাসিডের মতো সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে ডিমের কুসুম এড়িয়ে চলাই ভাল।
পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, ১০০ গ্রাম ওজনের মুরগির ডিমে মোট ২৫৫ মিলিগ্রাম আর ১০০ গ্রাম ওজনের হাঁসের ডিমে মোটামুটি ৩৫৫ মিলিগ্রাম কোলেস্টরল থাকে। পুষ্টিবিদদের মতে, দিনে দু-একটা ডিম খেলে তা রক্তের কোলেস্টরলের মাত্রাকে তেমন একটা প্রভাবিত করে না।
কিন্তু কাদের ক্ষেত্রে ডিম খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে! পুষ্টিবিদদের মতে, যাঁদের ডায়াবেটিস বা কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা রয়েছে অথবা যাঁদের অত্যাধিক স্থুলতার সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ডিম এড়িয়ে চলাই ভাল। তবে ডিমের কুসুম বাদ দিয়ে সাদা অংশটি তাঁরাও খেতে পারেন।
এবার আসা যাক শীতকালে ডিম খাওয়া উচিত কি-না, সেই প্রসঙ্গে। পুষ্টিবিদদের মতে, শীতকালে ঠাণ্ডায় শরীর আর বাইরের তাপমাত্রার তারতম্যে অনেকেরই হজমের সমস্যা বাড়ে। এই পরিস্থিতিতে ডিমের মতো উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাদ্যউপাদান হজম করতে সমস্যা হতে পারে।
‘ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন’-এর বিশেষজ্ঞদের মতে, বছরের কোনও সময়েই দিনে ৩টের বেশি ডিম (কুসুম সহ) খাওয়া উচিত নয়। কারণ, এটি উচ্চ কোলেস্টেরল, প্রোটিন যুক্ত খাদ্য যা ভবিষ্যতে কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।
তবে ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টরল, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা বা ইউরিক অ্যাসিডের মতো সমস্যা যাঁদের নেই, তাঁদের ক্ষেত্রে শীতকালে ডিম খাওয়া খুবই উপকারী! ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় প্রতিদিন ২টি ডিম খেলে শরীরে উষ্ণতা আসে। শীতকালে ডিম খাওয়া সাধারণ মৌসুমী সর্দি-কাশির ঝুঁকিও কমায়।
শিশু ছাড়াও গর্ভাবস্থায়ও ডিম স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী! এটি ভ্রূণের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সাহায্য করে। এছাড়া এটি শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দেয়। এই কারণে চিকিৎসকরাও গর্ভাবস্থায় মহিলাদের ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন। সুতরাং, ডিম খেতে পারেন সারা বছরই, তবে অবশ্যই নিজের শরীর বুঝে।