বেশি মিষ্টি খেলেই যে সুগার বেড়ে যাবে, এ ধারণা সম্পূর্ণ সঠিক নয়। শুধু মিষ্টি নয়, দুশ্চিন্তা, অবিরত মানসিক চাপ, পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাবেও রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। তবে বেশি মিষ্টি খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা না বাড়লেও, ভাটা পড়তে পারে যৌন জীবনে!
একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অতিরিক্ত মাত্রায় চিনি বা মিষ্টি খেলে কমে যেতে পারে টেস্টোস্টেরন হরমোনের নিঃসরণ। বলে রাখা ভাল, এই টেস্টোস্টেরন হরমোনই আমাদের যৌন স্ফুর্তি ও ইচ্ছাকে সরাসরি প্রভাবিত করে। টেস্টোস্টেরন হরমোনের নিঃসরণ কমলে কমে যাবে কামেচ্ছাও।
যৌবনে যথেষ্ট পরিমাণে টেস্টোস্টেরন হরমোন ক্ষরিত হয় বলে যৌন মিলনের স্ফুর্তি ও ইচ্ছা ষোলো আনা চাঙ্গা থাকে। কিন্তু, বার্ধক্যে টেস্টোস্টেরন হরমোনের ক্ষরণের মাত্রা কমে যায়। ফলে যৌন জীবনের ক্ষেত্রেও তার প্রভাব পড়ে।
দুর্বল যৌনজীবন, যৌনতায় অক্ষমতার জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দায়ী অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান বা ধূমপানের অভ্যাস, অতিরিক্ত ওজন এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা। এর পাশাপাশি অনেক সময় এই সমস্যা থাইরয়েড বা ডায়াবেটিসের কারণেও হতে পারে। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় চিনি বা মিষ্টি খেলেও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে যৌন জীবন।
বছর খানেক আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক (Cleveland Clinic)-এর বিশেষজ্ঞদের মতে, রক্তে শর্করা বাড়লে ডায়াবিটিসের ঝুঁকি তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে মানসিক অবসাদ ও স্থুলতার সমস্যা বাড়তে থাকে। এর প্ররোক্ষ প্রভাব পড়ে আমাদের যৌন জীবনেও।
মার্কিন বিশেষজ্ঞদের মতে, খাবারে অতিরিক্ত চিনি থাকার ফলে মহিলাদের ঋতুস্রাব অনিয়মিত হয়ে যায় এবং শরীরে লেপটিনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে। যৌন স্ফুর্তি ও ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে লেপটিনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লেপটিনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের নিঃসরণও কমে যায়।
প্রতিদিন খাবারে ঠিক কতটা চিনি খাওয়া উচিত? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী, পুরুষরা প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৯ চামচ আর মহিলারা সর্বোচ্চ ৬ চামচ চিনি খেতে পারেন। এর বেশি চিনি খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। কারণ, তাতে শরীরে নানা রকম অসুস্থতা দানা বাঁধতে শুরু করে।