Eye Care Tips: চোখের জল শরীরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এগুলি আপনার চোখের প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং কণা-ধুলো দূর করতে সাহায্য করে। অশ্রুও ইমিউন সিস্টেমের একটি অংশ, যা আপনাকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
চোখের পাতার ত্বকের নীচের গ্রন্থিতে অশ্রু তৈরি হয়। যাতে জল এবং লবণ থাকে। চোখের পাতা ফেললে চোখে জল ছড়িয়ে পড়ে। যার কারণে চোখে আর্দ্রতা থেকে যায়। অন্যান্য গ্রন্থিগুলি তেল তৈরি করে। যা অশ্রুকে খুব দ্রুত বাষ্পীভূত হতে বা আপনার চোখ থেকে বেরিয়ে যেতে বাধা দেয়।
চোখের জল সাধারণত অশ্রু নালী দিয়ে বের হয়। এবং তারপর বাষ্পীভূত হয়। কিন্তু যখন খুব বেশি কান্না পায়, তখন তারা অশ্রু নালী আটকে দেয় এবং চোখে আরও জল আসে। জলীয় চোখ যা এপিফোরা বা টিয়ারিং নামেও পরিচিত, এমন একটি অবস্থা যেখানে চোখ থেকে অবিরাম অশ্রু বা জল আসে। জল এলে কেউ যদি চোখে খুব জোরে ঘষে, তাহলে তার চোখও লাল হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: গরু-পাচার: দেবের পর এবার অনুব্রতকে সিবিআই-তলব
আরও পড়ুন: অমঙ্গল ঠেকাতে শিবপুজোর নিয়ম-বিধি বিস্তারিত জানুন
আরও পড়ুন: রাজ্য পুলিশে নিয়োগ, পরীক্ষার দিনক্ষণ-সিলেবাস-সহ সব তথ্য
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, চিকিৎসা ছাড়াই চোখের জল বন্ধ হয়ে যায়। তবে কখনও কখনও এমন পরিস্থিতি দেখা দেয় যার কারণে চোখ দিয়ে জল আসতে থাকে। এটি একটি মোটামুটি সাধারণ সমস্যা। যদি আপনার চোখে অনেকক্ষণ ধরে জল পড়ে এবং চোখ লাল হয়ে যায়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে। চোখে একটানা জল পড়ার কিছু কারণ থাকতে পারে। তাহলে চলুন জেনে নিই যেসব কারণে বেশি জল আসে বা চোখে জল আসে।
১. শুকনো চোখ
কারো চোখে পর্যাপ্ত পরিমাণে অশ্রু তৈরি না হলে চোখ দ্রুত শুকিয়ে যায়। এমন অবস্থায় চোখে জল ও তেলের সঠিক ভারসাম্য তৈরি হয় না। এই অবস্থার কারণ বায়ু থেকে চিকিৎসা অবস্থা পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। যে কারণে অনেক সময় হঠাৎ করে বেশি জল বের করে চোখ শুষ্ক হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
২. পিঙ্ক আই/কনজাংটিভাইটিস
এটা শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের চোখের জলের একটি সাধারণ কারণ। এই অবস্থায় চোখ গোলাপি বা লাল হয়ে যেতে পারে এবং চুলকানি ও কাঁটাযুক্তও অনুভব করতে পারে। ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণ পিঙ্ক আইয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ। ভাইরাল সংক্রমণের জন্য চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। তবে অ্যান্টিবায়োটিক চোখের ড্রপের প্রয়োজন হতে পারে।
আরও পড়ুন: হিজাব বিতর্ক: আগে নিজের ঘর সামলান,পাকিস্তানকে কড়া জবাব ভারতের
আরও পড়ুন: ডেলিভারি বয়-গিগ ওয়ার্কারদের নিয়ে নয়া সংগঠন তৈরির পথে সিটু
৩. অ্য়ালার্জি
জলযুক্ত, চুলকানি চোখ প্রায়ই কাশি, সর্দি এবং অন্যান্য অ্যালার্জির লক্ষণগুলির সঙ্গে আসে। কিন্তু কোনও কারণে চোখের অ্যালার্জি হওয়াটাও বেশ সাধারণ ব্যাপার। তাই চোখের পরিচ্ছন্নতার বিশেষ যত্ন নিন।
৪. ব্লকড টিয়ার ডাক্ট (Blocked Tear Duct)
চোখের উপরে অশ্রু গ্রন্থি থেকে অশ্রু প্রবাহিত হয়। গ্রন্থি থেকে মুক্তির পর অশ্রু চোখের পৃষ্ঠে ছড়িয়ে পড়ে এবং কোণে তৈরি নালীগুলোতে যায়। এই নালীগুলো বন্ধ থাকলে অশ্রু তৈরি হয়, কিন্তু বের হতে পারে না। অনেক কিছুর কারণে সংক্রমণ, আঘাত, এমনকি বার্ধক্যের মতো সমস্যা হতে পারে।
৫. পলকের সমস্য়া
আমাদের চোখের পাতা উইন্ডশিল্ড ওয়াইপারের মতো কাজ করে। যখন আমরা পলক ফেলি, তখন তারা চোখের অশ্রু ছড়িয়ে দেয় এবং এটি অতিরিক্ত আর্দ্রতা ফেলে দেয়। কিন্তু অনেক সময় তারা ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। চোখের পাতা ভিতরের দিকে বেঁকে গেলে চোখের মণিতে ঘষা হয়, যাকে এনট্রোপিয়ন বলে। এ কারণে চোখ থেকে জল পড়তে থাকে। যদি আপনার চোখের পাতা ভিতরের দিকে কাত হয়ে থাকে, তাহলে এর জন্য অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।
৬. চোখের উপর আঘাত
ময়লা, ধুলোবালি এবং কন্টাক্ট লেন্স পিউপিল এবং কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এমনটা হলে চোখ থেকে জল আসতে শুরু করে কারণ এটি খুবই স্পর্শকাতর অংশ। যা হোক, এই ক্ষতগুলি সাধারণত ১ বা ২ দিনের মধ্যে ভাল হয়ে যায়। আপনার কর্নিয়ায় ক্ষত হলে ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করা গুরুত্বপূর্ণ।
৭. চোখের পাতার সমস্যা
ভ্রুর লোম যেমন ভুল দিকে গজায়, তেমনি কখনও কখনও চোখের পাপড়িও ভুল দিকে গজাতে পারে। এটি ঘটলে, তারা চোখ ঘষে এবং তাদের থেকে অশ্রু আসতে শুরু করে।
৮. ব্লেফারাইটিস
এই অবস্থার কারণে আপনার চোখের পাতা ফুলে যায়। এই অবস্থায় চোখে কাঁটা হয়, জল আসে, চোখ লাল হয়, চুলকানি শুরু হয়। এর কারণ হতে পারে অ্যালার্জি এবং সংক্রমণ।
৯. অন্যান্য অসুবিধা
বেলস পালসি, সজোগ্রেনের সিন্ড্রোম, দীর্ঘস্থায়ী সাইনাস সংক্রমণ, থাইরয়েড সমস্যা এবং বাতজনিত রোগের মতো বেশ কয়েকটি মেডিকেল অবস্থার কারণে চোখ জল আসতে পারে। আপনার যদি ঘন ঘন চোখে জল আসে তবে ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করুন।