গরুমারার জঙ্গলে ঘুরতে গিয়ে স্থানীয় মহিলাদের হাতে তৈরি পাট, বাঁশ ও পরিবেশবান্ধব নানা সামগ্রী দেখে অনেক পর্যটকই পছন্দ করেন। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে কেনা না গেলে আর পরে পাওয়া যায় না, এই সমস্যার সমাধান এবার মিলেছে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সরাসরি ফোন বা হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করলেই বাড়িতে পৌঁছে দেবেন বনবস্তির মহিলারা। গরুমারা সংলগ্ন কয়েকটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর উদ্যোগে তৈরি নানান সামগ্রী বিক্রির জন্য এভাবেই নতুন ব্যবস্থার পথ খোলা হয়েছে।
বিছাভাঙ্গা, সুরসুতি, সরস্বতী, ধূপঝোরা, পানঝোরা। এই সব বনবস্তির মহিলাদের আয় এখন অনেকটাই কমে গিয়েছে। চলতি বছর থেকেই জঙ্গলে প্রবেশমূল্য তুলে দিয়েছে বন দফতর। আগে প্রবেশ টিকিটের সঙ্গে স্থানীয় হস্তশিল্পের দাম যুক্ত থাকত। ফলে পর্যটকরা বহু সময় সেই সামগ্রী কিনতেন। এখন নিখরচায় প্রবেশের সুযোগ থাকায় বনবস্তির তৈরি পণ্য আর আগের মতো বিক্রি হচ্ছে না।
এই অবস্থায় প্রায় দুইশোর বেশি মহিলাই নিজেদের তৈরি সামগ্রী নিজেদের চেষ্টায় বিক্রি করার পথে হাঁটছেন। মাদুর, পাটের শো-পিস, ব্যাগ, টেবিল ম্যাট, সাজসজ্জার সামগ্রী থেকে শুরু করে ফুলদানি। অনেক কিছুই তৈরি করেন তাঁরা।
বিছাভাঙ্গার কয়েকজন বিক্রেতা জানালেন, এখন নিজেরাই পর্যটকদের মোবাইল নম্বর দিয়ে রাখেন। অ্যাডভান্স টাকা জিপে বা ফোন পে-তে নেন। সাড়া খুব ভালো মিলছে বলেও জানান তিনি।
পর্যটকদের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি হয় কীভাবে? কেউ লোকনৃত্য করেন, কেউ জঙ্গল সাফারির মাঝে দলে দলে পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলেন। তখনই নিজেদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন বনবস্তির মহিলারা। কেউ সঙ্গে সঙ্গে কিনে নেন, কেউ ফোন নম্বর নিয়ে পরে অর্ডার দেন।
হস্তশিল্প ইউনিটের কর্মকর্তা সুখদেব সাহা সংবাদমধ্যমকে জানান, প্রবেশমূল্য মকুব হওয়ায় বিক্রি তলানিতে এসে ঠেকেছে। তাই মহিলাদের সঙ্গে আলোচনা করে এবার সরাসরি পর্যটকদের নম্বর সংগ্রহ করে ফোন, হোয়াটসঅ্যাপ, স্পিড পোস্ট ও কুরিয়ারের মাধ্যমে পণ্য পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গরুমারার ডিএফও দ্বিজপ্রতিম সেন জানিয়েছেন, আগে টিকিট কাউন্টার থেকেই হস্তশিল্পকে সাহায্য করা যেত। এখন কেবল একটি টোকেন ইস্যু করা হয় বলে তাঁদের কিছু করার নেই। তবে মহিলাদের বিকল্প উদ্যোগকে বন দফতর স্বাগত জানাচ্ছে।