Lataguri Giant Screen Wildlife: জঙ্গল বন্ধ। তাতে কী? জঙ্গলের বাইরে ঘোরাফেরা করাতে কোনও বাধা নেই। তাই অনেকেই বর্ষার ডুয়ার্সে ভিড় জমাচ্ছেন। এদিকে জঙ্গলের কয়েকটি জায়গায় আংশিক প্রবেশের সুযোগ রয়েছে। যদিও তাতে জঙ্গল দর্শনের স্বাদ মেটে না।
তাই এবার জঙ্গলপ্রেমীদের জন্য যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন দফতর। লাটাগুড়িতে গরুমারা জঙ্গলের বন্যপ্রাণীদের দেখা যাবে জঙ্গলে না ঢুকেই। এমন পদক্ষেপ ও উদ্যোগে হইচই পড়ে গিয়েছে পর্যটনমহলে।
পড়ন্ত বিকেলে নেওড়া নদী থেকে হাতির দলের জল পান করার দৃশ্য কিংবা পেখম মেলে ময়ুরের নাচ, জঙ্গলের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বাইসনের পাল। গাছে গাছে ঝুলছে বাঁদর কিংবা জঙ্গলের কোর এলাকায় ফুটে থাকা জানা-অজানা নানা ফুল-অর্কিড। গণ্ডারের গায়ে বসে থাকা কাক কিংবা হরিণের পালের লাজুক পলাতকা। কোনটা ছেড়ে কোনটার কথা বলবেন।
এসব কিছুই দেখতে পাবেন জঙ্গলের বাইরে দাঁড়িয়েই। তার জন্য জঙ্গলে একটুও পা রাখতে হবে না। ভাবছেন এটা কী করে সম্ভব? জঙ্গল সাফারি করেও যা দেখা যায় না, তা বাইরে থেকে কীভাবে দেখবেন? আসুন তাহলে জেনে নিই, কীভাবে হবে এই অসাধ্য সাধন।
জঙ্গলে ঢোকার আগেই জায়েন্ট স্ক্রিনে এই সমস্ত দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা। উদ্যোগে বন দফতরের লাটাগুড়ি রেঞ্জ। নতুনভাবে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে নেওড়া জঙ্গল ক্যাম্পকেও। পর্যটক টানতে এই বিশেষ বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।
এই উদ্যোগ পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে বলে আশাবাদী পর্যটন ব্যবসায়ীরা। ১৬ জুন থেকে প্রতিবছরের মতো এবারও ভারতের প্রতিটি অভয়ারণ্যের মতো লাটাগুড়ির জঙ্গলে পর্যটকদের প্রবেশ তিন মাসের জন্য বন্ধ ছিল। আর এই সময়কে কাজে লাগাতে উদ্যোগী লাটাগুড়ি রেঞ্জ।
জঙ্গল খোলা থাকলে জিপসিতে করে জঙ্গল সাফারির সুযোগ পান পর্যটকরা। এর জন্য লাটাগুড়ি বাজারে বন দপ্তরের টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট কাটতে হয়। ভিড় থাকলে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় পর্যটকদের। তারপরও যে বন্যপ্রাণীর দেখা মিলবে, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। তাই পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য একগুচ্ছ বন্দোবস্ত করতে চলেছে বন দফতরের লাটাগুড়ি রেঞ্জ।
লাটাগুড়ি রেঞ্জের তরফে সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়েছে, দুটি স্ক্রিন লাগানো হবে। পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য লাটাগুড়িতে জঙ্গল সাফারির টিকিট কাউন্টারে জায়ান্ট স্ক্রিন লাগানো হচ্ছে। রাখা হবে বসার জায়গাও। যেখানে প্রায় সারাদিনই অডিও ভিজুয়াল মাধ্যমে আগে থেকে রেকর্ড করা জঙ্গলের আনাচে-কানাচে থাকা জীবজন্তু থেকে শুরু করে কোন পথে সাফারি হয়, সে সমস্ত কিছু দেখানো হবে।
টিকিট কাউন্টারের পাশাপাশি নয়, নেওড়া নদীর পাড়ে থাকা লাটাগুড়ি নেওড়া জঙ্গল ক্যাম্পে কলাখাওয়া ওয়াচটাওয়ারেও এ ধরণের একটি জায়েন্ট স্ক্রিন বসানো হবে। সাফারির মাঝে নেওড়া জঙ্গল ক্যাম্পে থাকা কলাখাওয়া ওয়াচটাওয়ারে কিছুক্ষণ সময় কাটান পর্যটকরা।
একই সঙ্গে জঙ্গলের আশপাশের এলাকাকে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে দপ্তরের। বর্ষার সময় জঙ্গলের বেশ কিছু রাস্তাঘাটের হাল বিগড়ে গিয়েছে। সেগুলিকে পর্যটকদের চোখে মনোরম করে তোলার কাজ শুরু হয়েছে।
সব মিলিয়ে অফসিজনেও জমজমাট হচ্ছে লাটাগুড়ি। অন্যদিকে সিজন চালু থাকলেও এই বিনোদন বজায় রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে।