ভারতীয় দল এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ বৃহস্পতিবার খেলা হয়েছে। এটি টিম ইন্ডিয়ার ২০০ তম টি-টোয়েন্টি ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচ। ম্যাচে ভারতীয় অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়ার নেতৃত্বে দুজন খেলোয়াড়ের অভিষেক হয়।
এই ম্যাচে সুযোগ মেলে হায়দরাবাদের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে আইপিএল খেলা তিলক ভার্মা এবং বাংলার হয়ে ঘরোয়া ও দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে খেলা পেস বোলার মুকেশ কুমারের টি-টোয়েন্টি ডেবিউ হয়।
এই জায়গা পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য তিলক ভার্মা সফর খুব একটা সহজ ছিল না। তিনি ধার করে ব্যাট চেয়ে এনে সেঞ্চুরি করেন। তারপরে তার টিম ইন্ডিয়া পর্যন্ত সফর নিজেই তৈরি করেন। তার বাবা ইলেক্ট্রিশিয়ান এবং তিলকের কাছে নিজের বাড়িও নেই।
হায়দ্রাবাদের তিলকের জন্ম ৮ নভেম্বর ২০০২ সালে হয়। তার পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি খুব একটা ভালো ছিল না। তিলক ছোটবেলায় টেনিস ক্রিকেট খেলতেন। তখনই কোচ সালাম বায়সের তার ওপর নজর পড়ে এবং তিনি তিলককে শুধুমাত্র ফ্রিতে ক্রিকেট একাডেমিতে খেলা শেখানোর প্রস্তাব দেন। পাশাপাশি তিনি তিলকের বাবাকে রাজি করিয়ে তার একাডেমিতে ক্রিকেট খেলার অনুমতিও জোগাড় করেন।
তিলক এর বাবাও পরে ছেলের ইচ্ছা মেন নেন এবং ৪০ কিলোমিটার দূরে একাডেমি হওয়ার কারণে তিনি তিলককে নিয় যাতে একাডেমির কাছাকাছি থাকতে পারেন, তাই সেখানে কাছে চাকরি খুঁজে নেন। যাতে তিলক এই একাডেমির আশপাশে থাকতে শুরু করেন।
তিলকের কাছে শুরুতে ব্যাট কেনার পয়সা ছিল না। এক বছর ক্রিকেট প্র্য়াকটিসের পর তিলক ধার করে একটি ব্যাট নিয়ে সেঞ্চুরি করেন এবং তারপর কখনও পেছন ফিরে দেখাতে হয়নি। তিলক চার বছর জমিয়ে খেলেন এবং প্রচুর রান সংগ্রহ করেন। এরপর ভারতীয় ঘরোয়া ক্রিকেটে ২০২১-২২ এ বিজয় মার্চেন্ট ট্রফিতে তার প্রথম পদক্ষেপ হয়। এই টুর্নামেন্টের দিলক ১৮০ রান করেন।
এরপরে আইপিএল ২০২২ এ মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের টিমে তিনি শামিল হন। যেখানে তিনি নিজের ব্যাটিং এর দ্বারা বড় বড় বোলারদের মাঠের বাইরে ফেলেন। তিলক প্রথম সিজনে ১৪ ম্যাচে ৩৯৭ রান করেন। তাঁর উইকেটের চারদিকে রানের ফুলঝুরি এবং শট ভক্তদের মন জয় করে নেয়।
এরপরে আইপিএল ২০২৩-এ ১১ ম্যাচে ৩৪৩ রান করেন। তিনি যেখানে ঘরোয়া ক্রিকেটে হায়দ্রাবাদের জন্য ৭ টি ফাস্ট ক্লাস ম্যাচ খেলে ৪০৯ রান , ২৫ লিস্ট এই ম্যাচে ১২৩৬ রান এবং ৪৭টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১৪১৮ রান করেছেন তিনি। এই কারণেই তাকে টি-টোয়েন্টিতে টিম ইন্ডিয়ার হয়ে খেলার সুযোগ এনে দেয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে অভিষেকের প্রথম ম্যাচেও তিনি নজর করেন। যদিও শেষমেষ জয় পর্যন্ত দলকে পৌঁছে দিতে পারেননি। তবে তার ব্যাটিংয়ে প্রতিশ্রুতির ছাপ দেখতে পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।