ম্যালকম মার্শালের মতো বোলিং অ্যাকশনে পিচে বিধ্বস্ত হওয়া মাখায়া অ্যান্টিনি আজ (৬ জুলাই) ৪৪ বছর বয়সে পা রেখেছেন। অ্যান্টিনি ১৯৯৮ সালে ওয়ানডে এবং টেস্ট অভিষেকের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসেন তিনি। গায়ের রং কালো হলেও প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে দক্ষিণ আফ্রিকা দলে এসেছিলেন তিনি। বর্ণ নিয়ে কোনওভাবেই কোনও জগতে গুন বিচার করা উচিত নয়। তবুও দক্ষিণ আফ্রিকায় এমনটা হতো অতীতে। ফলে সেই প্রথা ভেঙে দিয়েছিলেন অ্যান্টিনি। তবে পরের বছরই মনে হয়েছিল তাঁর কেরিয়ার শেষ হয়ে যাবে।
আসলে অ্যান্টিনি ধর্ষণের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল। যদিও তার ভাগ্য ভাল ছিল। ও তিনি খালাস পেয়েছিলেন কোর্টের থেকে। এর পরে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার দলের নিয়মিত সদস্য হন। অ্যান্টিনি ১০১ টেস্টে ৩৯০ উইকেট এবং ১৭৩ ওয়ানডেতে ২৬৬ উইকেট নিয়েছিলেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ১০১ টেস্ট খেলেছেন মাখায়া অ্যান্টিনি বর্ণবাদের শিকার হয়েছিলেন এবং সর্বদা নিজেকে নিঃসঙ্গ মনে করেতেন। ২০২০ সালে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার প্রায় ১০ বছর পরে, তিনি দলের তৎকালীন খেলোয়াড়দের অভিযুক্ত করেছিলেন যে তারা তাকে দূরে রেখেছিল।
প্রাক্তন খেলোয়াড় শন পোলক, জ্যাক ক্যালিস, মার্ক বাউচার এবং ল্যান্স ক্লুসেনারের মতো স্টলওয়ার্টদের সাথে ড্রেসিংরুম শেয়ার করেছেন। লক্ষণীয় বিষয়, অ্যান্টিনি ৩০ জন দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড়দের মধ্যে ছিলেন যারা গত বছর 'ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার' (কালোদের জীবনেও গুরুত্বপূর্ণ) এর সমর্থনে তাদের আওয়াজ তুলেছিলেন।
তিনি একটি সাক্ষাত্কারে প্রকাশ করেছিলেন, 'খাবারের সময় কেউ আমাকে সঙ্গ দিত না। সতীর্থরা আমার সামনে পরিকল্পনা তৈরি করতেন, তবে এতে আমাকে জড়াননি। সকালের ব্রেকফাস্টে ঘরে কেউ আমার সাথে বসতেন না। ' তাঁর সময়কে স্মরণ করে তিনি বলেছিলেন, 'আমরা একই ইউনিফর্ম পরিধান করি এবং একই জাতীয় সংগীত গাইতাম, তবে আমাকে এই সমস্ত (বিচ্ছেদ) মোকাবেলা করতে হয়েছিল।'
বিচ্ছিন্নতাবাদ থেকে মুক্তি পেতে অ্যান্টনি টিম বাসে যেতে এড়িয়ে চলতেন এবং বাসের পেছনে দৌড়াতেন। এই আফ্রিকান অভিজ্ঞ এই কথাটি বলেছিলেন, 'আমি বাসের পিছনে মাটিতে দৌড়াতাম, বাসের চালককে আমার ব্যাগ দিয়েছিলাম, ফেরার সময়ও আমি একই কাজ করতাম। লোকেরা কখনই বুঝতে পারে না আমি কেন এটি করতাম। আমি কী করার চেষ্টা করছি তা তাদের কখনও বলিনি। এটি আমার পক্ষে ভাল ছিল কারণ এটি আমাকে কারও মুখোমুখি হতে বাঁচিয়েছিল।
অ্যান্টিনির সহযোদ্ধাদের আচরণ মোটেই ভাল ছিল না। তিনি নিজেই বলেছেন, "আমি যদি বাসের পিছনে বসে থাকতাম তবে সে সামনে বসে থাকত। আমরা যখনই জিততাম, পরিবেশটি মনোরম ছিল, কিন্তু হেরে যাওয়ার পরে, দোষটি আমার মাথায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল।
শুধু তাই নয়, তার ছেলে থান্ডোও বর্ণবাদের মুখোমুখি হয়েছেন। অনূর্ধ্ব -১৯ বিশ্বকাপ শিবিরে যেতে ঠান্ডোর প্রায় নিষেধাজ্ঞা ছিল।