আফগানিস্তানের সঙ্কটাপন্ন সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে জোর চর্চা চলছে বিশ্বজুড়ে। ইতিমধ্যেই তালিবানদের দখলে গোটা আফগানিস্তান। তবে এ বারের তালিবানি শাসন গতবারের থেকে অনেকটাই আলাদা হবে বলে দাবি করছে তারা। তালিবানদের বক্তব্য, আফগানিস্তানের ভিতরে বা বাইরে শত্রু তৈরি করতে চায় না তারা।
এই পরিস্থিতিতে তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে চলেছে তা নিয়ে আতঙ্ক আর ধন্দে গোটা বিশ্ব। পাকিস্তান, চিন তালিবানদের পূর্ণ সমর্থন দিলেও ভারতের তরফে এখনও কোনও বার্তা দেওয়া হয়নি। তবে ইতিমধ্যেই ভারতের বাজারে আফগানি সঙ্কটের আঁচ লেগেছে!
দক্ষিণ এশিয়ায় আফগান পণ্যের সবচেয়ে বড় বাজার হল ভারত। ভারতে প্রচুর পরিমাণে আখরোট, পেস্তার মতো শুকনো ফল আসে আফগানিস্তান থেকে। সে দেশের বর্তমান পরিস্থিতির জেরে, কিছুটা জোগানের অভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আখরোট, পেস্তার মতো শুকনো ফলের দাম!
ভারতে আফগানিস্তান থেকে প্রচুর পরিমাণে শুকনো ফল আমদানি করা হয়। ভারতে আমদানি করা শুকনো ফলগুলির মধ্যে রয়েছে পেস্তা, ডুমুর, আখরোট, শুকনো কিশমিশ, বাদাম এবং শুকনো এপ্রিকট।
এছাড়াও, হিং, তরমুজ, আপেল, চেরি, ডালিম, জাফরান এবং জিরাও আফগানিস্তান থেকে কিছু পরিমাণে ভারতে আমদানি করা হয়। ভারতের বাজারে আফগানি সঙ্কটের প্রভাব ইতিমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে। সমস্ত শুকনো ফলের দাম ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে বেড়ে গিয়েছে।
দিল্লির খড়ি বাওলির ব্যবসায়িক সমিতির প্রাক্তন সভাপতি সন্তেন্দ্র সিং চৌহান জানান, আফগানিস্তানের খবর আসার পর থেকেই বাজারে শুকনো ফলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। বাজারের ব্যবসায়ীরা পণ্য মজুদ করতে শুরু করেছে। যার ফলে সমস্ত শুকনো ফলের দাম ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে বেড়ে গিয়েছে। গত এক সপ্তাহে শুকনো ফলের দাম প্রায় ২০০ টাকা বেড়ে গিয়েছে।
গড়িয়াহাট কর্পোরেশন মার্কেটের ব্যবসায়ি কার্তিক মণ্ডল বলেন, “আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির প্রভাব এখনও পড়েনি কলকাতার বাজারে। এখানে এখনও কাজু, পেস্তা, আখরোটের মতো শুকনো ফলের দাম বাড়েনি। পুজোর আগে এগুলোর দাম এমনিতেই কিছুটা বাড়ে। তাই তালিবানি শাসনের প্রভাব কলকাতার মেওয়া কারবারে পড়বে কিনা তা এখনই বলা মুশকিল।”
বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধুমাত্র আফগানি সঙ্কটের প্রভাবে নয়, শুকনো ফলের দাম বৃদ্ধির পিছনে অন্য একটি কারণও রয়েছে। ভারতে উৎসবের মরসুম শুরু হতে চলেছে। এই সময়টায় যে কোনও ফলের দামই কিছুটা বেড়ে যায়। তাঁদের মতে, শুকনো ফলের দামও কিছুটা সেই কারণেই বেড়েছে।