উৎসবের মরশুম মানেই গয়নার দোকানে ভিড়। দশেরা কেটে দীপাবলির আগে থেকেই সোনার দোকানগুলোতে চলছে অফারের হিড়িক, “০% মেকিং চার্জ”, “ফ্রি ডিজাইনিং” ইত্যাদি নানা ছাড়ের বিজ্ঞাপন।
কিন্তু এই অফারের আড়ালেই লুকিয়ে রয়েছে গোপন চার্জের ফাঁদ। সম্প্রতি এক ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার, সার্থক অনুজা, জানিয়েছেন কীভাবে জুয়েলার্সরা "০% মেকিং চার্জ" ঘোষণা করেও গ্রাহকদের কাছ থেকে বাড়তি দাম আদায় করেন।
লিঙ্কডইনে পোস্ট করা তাঁর সতর্কবার্তায় অনুজা লিখেছেন, “গ্রাহকরা মনে করেন ‘০% মেকিং চার্জ’ মানেই কম দাম। কিন্তু বাস্তবে তারা গয়নার জন্য আরও বেশি দিচ্ছেন।” তিনি জুয়েলার্সদের ৫টি লুকানো চার্জের কৌশল তুলে ধরেছেন—
গুগলে যেভাবে সোনার দাম দেখা যায়, অনেক জুয়েলারি দোকানে তার চেয়ে প্রতি গ্রামে প্রায় ২০০ বেশি দাম নেওয়া হয়। অর্থাৎ ৫০ গ্রাম সোনায় গ্রাহককে অতিরিক্ত ১০,০০০ দিতে হচ্ছে, যা প্রায় ২% লুকানো ফি।
সোনার গয়না তৈরির সময় ২-৩% অপচয় স্বাভাবিক হলেও, অনেক দোকান জটিল নকশার অজুহাতে ৫% পর্যন্ত বর্জ্য চার্জ নেন। আরও সমস্যা হল—এই হিসাব নেওয়া হয় বর্তমান সোনার দামে, গয়না তৈরির সময়কার দামে নয়।
‘০% মেকিং চার্জ’ গয়নাগুলির মধ্যে সাধারণত দামি পাথর বা অলঙ্করণ জুড়ে দেওয়া হয়, যার দাম বাজারমূল্যের তুলনায় অনেক বেশি। এইভাবেই অফার দেওয়া ফি-র ক্ষতি পূরণ করে নেয় জুয়েলাররা।
অনেক দোকান বলে থাকে যে তারা সোনার গয়না ৯০% দামে কিনে নেবে। কিন্তু যেসব গয়না ০% মেকিং চার্জে বিক্রি হয়, সেগুলোর ক্ষেত্রে সেই হার নেমে আসে ৭০%–৮০% পর্যন্ত। এতে গ্রাহকের ক্ষতি হয় আরও বেশি।
জুয়েলার্সরা পাইকারি দামে সোনা কিনলেও, সেই দামের সুবিধা সাধারণত ক্রেতাদের দেওয়া হয় না। ফলে ক্রেতা বাজারদরের তুলনায় বেশি দামেই গয়না কিনে ফেলেন।
শেষে অনুজা পরামর্শ দিয়েছেন, প্রতিটি গয়নার BIS HUID কোড BIS Care অ্যাপে চেক করা উচিত, কারণ এটি সোনার বিশুদ্ধতা ও হলমার্কিংয়ের প্রমাণ।
তাই সোনা কেনার সময় আগে লুকোন চার্জ জানুন। তারপর কিনুন।