বাঙালির সাধের ‘রুপালি শস্য’ ইলিশ এখনও সে ভাবে বাজারে ঢোকেনি। হীমঘরের কিছু মাল (ফ্রোজেন মাছ) এখন কছুটা সস্তায় কেনার সুযোগ পাচ্ছেন আম বাঙালি।
বাজারে এখন যা রয়েছে, তার বেশিরভাগই গুজরাতের ইলিশ, যাকে বম্বে ইলিশও বলা হয়। তবে ইলিশ গুজরাতের হোক বা ডায়মন্ড হারবারের— ভোজনরসিক বাঙালির পাতে পড়লেই ‘দিল খুশ’!
গত মরসুম থেকেই বাজারে ইলিশের আকাল! বাজারে যে টুকু মাছ পৌঁছেছিল, তা-ও বেশ চড়া দামে বিক্রি হয়েছে! এখন একটা ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৫৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
কিন্তু সর্ষে ইলিশ, ভাপা ইলিশ, ইলিশ পোলাও, ইলিশের মালাইকারী বা পাতুরি খাবেন বলে বাজার থেকে দাম দিয়ে ইলিশের বিজাতিয় যমজ মাছ কিনে ঠছেন না তো?
বাজারে এখন ইলিশের মতোই দেখতে আর একটি মাছের খুব চালান বেড়েছে। এটির নাম সার্ডিন (Sardine) মাছ। ৪৫০-৫৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ আর একটি পরিনত সার্ডিন মাছের আকার প্রায় এক। এটিও একটি সামুদ্রিক মাছ।
ইলিশের ‘কার্বোন কপি’ সার্ডিন মাছের ভূমধ্যসাগরের (Mediterranean Sea) দ্বীপ সার্ডিনিয়ার (Sardinia) চারপাশে এই মাছের আধিক্য বেশি থাকায় এর নাম দেওয়া হয় সার্ডিন (Sardine)।
সার্ডিন (Sardine) মাছ বেশ সুস্বাদু হলেও এর সঙ্গে ইলিশের স্বাদের কোনও তুলনাই চলে না। ভিটামিন, ফসফরাস, ক্যালশিয়াম-সহ একাধিক পুষ্টিগুণে ভরা এই মাছ খেতেই পারেন। তবে ইলিশ ভেবে চড়া দামে কিনেছেন, কী ঠকেছেন!
ইলিশ আর সার্ডিন (Sardine) মাছের আকৃতিগত একটা বড় ফারাক রয়েছে, যেটা ধরতে পারলে ভুল হওয়ার বা ঠকার কোনও ঝুঁকি থাকে না। ইলিশের পিঠ ও পেটের দিক প্রায় সমান ভাবে গোলাকৃতির হয়। কিন্তু সার্ডিনের পেটের দিকটা গোলাকৃতির হলেও পিঠের দিকের অংশ লেজ পর্যন্ত প্রায় সমানতরাল।
সার্ডিনের শরীর পার্শ্বীয়ভাবে পুরু এবং পিঠের দিকের চেয়ে পেটের দিক অপেক্ষাকৃত চ্যাপ্টা। সার্ডিনের দুটি প্রজাতি রয়েছে বঙ্গপোসাগরে, চাপিলা ও কলম্ব। সার্ডিন বড়জোড় ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। ইলিশ লম্বায় এর দ্বিগুণ হতে পারে। আকৃতিগত এই ফারাক সম্পর্কে ধারণা থাকলে কেনার সময় ঠকতে হবে না।