২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঘটে যাওয়া সুনামির ভয়াবহতা ও ধ্বংসলীলার স্মৃতি আজও ভুলতে পারেনি মানুষ। ওই দিন ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের উপকূলে সমুদ্রগর্ভে সংঘটিত ভূমিকম্পের প্রভাবে সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হয় মানবসভ্যতাকে।
২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঘটে যাওয়া সেই ভয়ঙ্কর সুনামির ফলে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিশ্বের ১৪টি দেশ। ষোল বছের আগের এই প্রলয়ঙ্কর ঘটনায় প্রাণ হারান প্রায় ২ লক্ষ ৩০ হাজার মানুষ। এই ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল প্রায় ১,৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের সমান।
সমুদ্রগর্ভের ৩০ কিলোমিটার নিচে ছিল এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রবিন্দু৷ রিখটার স্কেলে ৯.৩ শক্তির জোরালো ভূকম্পন চলে প্রায় ৮-১০ মিনিট ধরে! বিজ্ঞানীরা এই প্রবল ভূমিকম্পের নাম দিয়েছেন সুমাত্রা-আন্দামান ভূমিকম্প৷
২০০৪ সালের ওই সুনামির জলোচ্ছ্বাস কোথাও কোথাও ৩০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়ে উপকূলীয় নিচু জমিতে আছড়ে পড়ে, ভাসিয়ে নিয়ে যায় বাড়িঘর, মানুষজনকে৷ এর পরই ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সেন্টারে ফর ওশান ইনফরমেশন সার্ভিসেস (INCOIS)-এ বিশেষ সুনামি ওয়ার্নিং সিস্টেম তৈরি করা হয় যা এ পর্যন্ত ৬.৫ ম্যাগ্নিটিউটের (6.5 magnitude) প্রায় ৬৩০টি ভূমিকম্পের তথ্য দিয়েছে।
বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় ৬৮ কোটি মানুষ উপকূলীয় নিচু জমিতে বসবাস করেন। ২০৫০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা ১০০ কোটিতে পৌঁছে যাবে। তাই সুনামি সম্পর্কে প্রয়োজন আগাম সতর্কতা ও সচেতনতার। সুনামির বিপদ আগে থেকে বোঝার উপায় কী? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কতগুলি লক্ষণ থেকে সুনামির বিপদ সম্পর্কে আগে থেকে সতর্ক হওয়া যায়।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, শক্তিশালী কোনও ভূমিকম্পের পর সুনামির আশঙ্কা তৈরি হয়। ২০০৪-এর ২৬ ডিসেম্বর ভারত মহাসাগরের তলদেশে ভূমিকম্পের ফলে ভয়ঙ্কর সুনামির সম্মুখীন হতে হয় বিশ্বের ১৪টি দেশের কয়েক লক্ষ মানুষকে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সুনামির আগে সমুদ্র উপকূলে বড় বড় ঢেউয়ের আনাগোনা বেড়ে যায়।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সুনামির আগে সমুদ্রের গর্জন বা ঢেউয়ের গুরুগম্ভীর শব্দ অনেকটাই বেড়ে যায়।
সুনামির আগে সমুদ্রের উপকূল অনেকটাই জলশূন্য হয়ে যায়। ভাটার সময় নদীর পাড় থেকে যেমন জল সরে যায়, অনেকটা তেমন।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সুনামির আগে সমুদ্রের ঢেউ বা জলের উচ্চতা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।