আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৩ মে থেকে ২৫ মে-র মধ্যে সুন্দরবন অঞ্চলে আছড়ে পড়তে পারে সুপার সাইক্লোন ইয়াস (Super Cyclone Yaas)। এখান থেকেই সাইক্লোনের অভিমুখ বাংলাদেশের দিকে বাঁক নিতে পারে।
ইতিমধ্যেই ঘন ঘন বৃষ্টি, ঝোড়ো হাওয়া আর আকাশজুড়ে জমে থাকা কালো মেঘে মাঝে মাঝে বিদ্যুতের ঝিলিকে মিলছে সুপার সাইক্লোন ইয়াসের (Super Cyclone Yaas) আগমনের অশনি সঙ্কেত! প্রবল তাণ্ডবের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত বছর ঠিক এই সময়েই সুপার সাইক্লোন আমফানের (Super Cyclone Amphan) দাপটে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল তছনছ হয়ে গিয়েছিল। এ বার পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরের মায়ানমার উপকূল ও আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের মাঝে ফের ভারী নিম্নচাপ সৃষ্টির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
গত বছর লকডাউনে সুপার সাইক্লোন আমফানের (Super Cyclone Amphan) দাপটে বাংলা যে চরম বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছিল, এ বারেও সুপার সাইক্লোন ইয়াসের (Super Cyclone Yaas) আগমনে তেমনই ভয়াবহ অবস্থার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আমফানের বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নিয়ে সুপার সাইক্লোন ইয়াস (Super Cyclone Yaas) আসার আগেই সেরে নিন জরুরি প্রস্তুতি! প্রাকৃতিক বিপর্যয় রোখা যাবে না। তবে উপযুক্ত জরুরি প্রস্তুতি নেওয়া থাকলে ঝড়ের পরবর্তী দিনগুলোয় বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা সহজ হতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কী কী আগাম প্রস্তুতির প্রয়োজন...
গত বছর সুপার সাইক্লোন আমফানের (Super Cyclone Amphan) দাপটে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল তছনছ হয়ে গিয়েছিল। অনেক এলাকাতেই ৫-৬ দিন পর্যন্ত বিদ্যুত ছিল না। ফলে আলো, পাখা তো দূরের কথা, মোবাইল ফোনের চার্জটুকু ফুরিয়ে গিয়েছিল। তাই আগে থাকলেই মোবাইল ফোনের চার্জ দিয়ে রাখবেন। পাওয়ার ব্যাঙ্ক থাকলে সেটিতেও ফুল চার্জ দিয়ে রাখুন।
আমফানের (Super Cyclone Amphan) পরবর্তী ৩-৪ দিন রাজ্যের বহু অঞ্চলেই জল ও পানীয় জলের চরম সঙ্কটের মুখে পড়তে হয়েছিল হাজার হাজার বাসিন্দাদের। অন্তত ৩-৪ দিন পানীয়, হাত-মুখ ধোয়ার জল না থাকায় প্রবল জলকষ্টের মধ্যে পড়তে হয়েছিল হাজার হাজার মানুষকে। অতীতের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে এ বার তাই আগে থেকেই অন্তত ৩-৪ দিনের পানীয় ও হাত-মুখ ধোয়ার জল ধরে রাখুন।
গত বছর আমফানের (Super Cyclone Amphan) পরবর্তী অন্তত এক সপ্তাহ পর্যন্ত দুধ, পাউরুটি, ডিমের মতো জরুরি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের আকাল দেখা দেয় বিভিন্ন এলাকায়। বাড়িতে এই সমস্ত খাদ্য সামগ্রি যতটা সম্ভব মজুত করে ফেলুন, যাতে অন্তত দিন তিনেক চালিয়ে নেওয়া যায়।
বাড়িতে পচনশীল নয় এমন কিছু খাদ্য সামগ্রি মজুত করে রাখুন অন্তত দিন সাতেকের মতো। কারণ, এলাকায় যদি আমফানের (Super Cyclone Amphan) পরে ৫-৬ দিন পর্যন্ত বিদ্যুত না থাকে, তাহলে ফ্রিজের খাবার সব নষ্ট হয়ে যাবে। তখন, চিড়ে, মুড়ি, গুড়, চাউমিন বা যে কোনও ‘রেডি টু কুক’ নুডলস এনে রাখা থাকলে সমস্যায় পড়তে হবে না।
বাড়িতে বয়ষ্ক বা শিশুদের কথা মাথায় রেখে তাঁদের প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র, হেল্থ ড্রিঙ্ক ইত্যাদি বাড়িতে পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে কী না তা দেখে নিন। না থাকলে ওষুধপত্রের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে এনে রাখুন।
এলাকায় ঝড়ের ধাক্কায় ফের বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট পরিষেবা বিপর্যস্ত হওয়ার আগে প্রয়োজন মতো হাতে রাখুন নগদের জোগান। অতীতে আমফানের (Super Cyclone Amphan) ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে এ বার তাই আগে থেকেই অন্তত ৩-৪ দিনের মতো প্রয়োজন বুঝে ATM থেকে প্রয়োজনীয় টাকা তুলে নিন।
বাড়িতে আন্দাজ মতো মোমবাতি এনে রাখতে ভুলবেন না। যদি ঝড়ের পর এলাকায় বিদ্যুতের সংযোগ না থাকে, তাহলে এগুলি কাজে লেগে যাবে। বাড়িতে সৌর বাতি (সোলার ল্যাম্প) থাকলে সেগুলিতে চার্জ রয়েছে কী না তা দেখে নিতে ভুলবেন না।