ব্রাজিল মানেই ফুটবল। পেলে, রোমারিও, রোনাল্ডিনহো, নেইমারের দেশ। ব্রাজিল মানেই এক ঝাঁক সুন্দরির তালে তালে সাম্বা। এই ব্রাজিলেই এমন একটা গ্রাম রয়েছে যেখানে ঘরে ঘরে শুধুই মেয়েদের বসবাস।
এই গ্রামে প্রায় ৬০০ জন মহিলার বাস যার মধ্যে তিনশোরও বেশি বিবাহযোগ্যা, অবিবাহিতা সুন্দরী তরুণী। বয়স ১৮ বছর থেকে ৩২ বছরের মধ্যে। বিয়ে করতে চান এরা সকলেই। তবে তার জন্য ৩-৪টে সহজ শর্ত রয়েছে।
প্রথম শর্ত, এঁরা কেউই বিয়ের পর নিজেদের গ্রাম ছেড়ে যাবেন না। এছাড়াও, ‘সুপাত্র’ হিসাবে নিজেকে প্রমাণ করতে বিয়েতে ইচ্ছুক পুরুষটিকে তিনটি সাধারণ গুণের অধিকারী হতে হবে। আর অবশ্যই ছেলে-মেয়ের একে অপরকে ভালবাসা বা মনে ধরা খুবই জরুরি।
যে সব ছেলে ভাল রান্না জানেন, বিয়ের পর বউকে রেঁধে খাওয়াতে পারবেন, বাসন বাজতে জানেন আর ঘর-বাথরুম পরিষ্কার রাখতে জানেন তিনিই এই গ্রামের মেয়েদের কাছে একেবারে খাঁটি ‘সুপাত্র’।
এই গ্রামটির নাম নোইভা ডো কোরডোইরো (Noiva do Cordeiro)। এটি দক্ষিণ-পূর্ব ব্রাজিলের একটি পাহাড়ে ঘেরা গ্রাম। এটি মূলত মহিলা প্রধান গ্রাম। পশুপালন আর কৃষিকাজই এখানকার মানুষের মূল জীবিকা।
এখানে কোনও ঘরে ছেলে জন্মালে, তার ১৮ বছর বয়স হলেই তাকে গ্রামের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অথচ গ্রামের অধিকাংশ সুন্দরী, যুবতীরা মনের মতো জীবনসঙ্গীর অপেক্ষায় ব্যাচেলর হয়েই দিন কাটাচ্ছেন। কেন?
শোনা যায়, ১৮৯০ সালে মারিয়া সেনহোরিনা ডি লিমা নামের এক তরুণীকে তাঁর ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে বেশিদিন থাকেননি তিনি। পালিয়ে চলে আসে এই গ্রামে।
তার পর ১৮৯১ সাল থেকে তিনি এই গ্রামটি নিজে হাতে, নিজের মতো করে গড়ে তোলেন। আর সেই থেকেই এই গ্রামের মেয়েরা বিয়ের পরও এখানেই থেকে যান।
এই গ্রামে একটিই রেওয়াজ মেনে চলতে হয় সকলকে। এই গ্রামের মেয়েদের বিয়ে হলে, তাঁরা কেউ শ্বশুরবাড়িতে যাবেন না। তাঁদের সঙ্গে স্বামীদের এই গ্রামেই বসবাস করতে হবে।
প্রায় দেড়শো বছর পরেই ব্রাজিলের এই গ্রামে তরুণীরা এই নিয়ম মেনে চলেন। তাই ভিন-গ্রামের সুপাত্র পাওয়াটা ক্রমেই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বয়স পেরিয়ে গেলেও অবিবাহিত থাকতে হচ্ছে গ্রামের সুন্দরী যুবতীদের অনেককে।
ছবি নোইভা ডো কোরডোইরো (Noiva do Cordeiro)-র ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত।