টিম ইন্ডিয়ার স্টার লেগ স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল আজ নিজের ৩২ তম বার্থডে সেলিব্রেট করছেন। ৩২ বছরের চাহাল আজকে ক্রিকেট ময়দানে যতই চমক দেখাক না কেন, কিন্তু আপনি জেনে অবাক হবেন যে তিনি তার ক্রীড়াজীবন শুরু করেছিলেন দাবারু হিসেবে।
তার প্রথম প্রেম কখনোই ছিল না ক্রিকেট। অনেকেই জানেন না যে, তিনি হরিয়ানার জিন্দ শহরের বাসিন্দা এবং লেগ স্পিনার চাহালের কাছে দাবার মস্তিষ্ক রয়েছে। যাকে তিনি চেস্টবোর্ডে পরীক্ষা করে ফেলেছেন। ক্রিকেটে ডেবিউ হওয়ার আগে চাহাল দাবার মাস্টার ছিলেন।
চাহাল ক্রিকেট ছাড়া চেসেও ভারতের জন্য ইন্টারন্যাশনাল লেভেলে খেলে ফেলেছেন। তিনি আন্ডার টুয়েলভ ন্যাশনাল চেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও অংশ নিয়েছিলেন। তিনি কোঝিকোরে এশিয়ান ইউথ চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেন। এরপরে চাহাল গ্রিস ওয়ার্ল্ড ইউথ চ্যাম্পিয়নশিপেও ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন দাবারু হিসেবে।
চাহালের নাম ফিকির আধিকারিক ওয়েবসাইটে রয়েছে এখনও। তিনি ১৯৪৬ ফিডে রেটিং পেয়েছিলেন। চাহালের আর্থিক স্থিতি ঠিক ছিল না। এই কারণে তিনি দাবা খেলা ছেড়ে দিয়ে ক্রিকেটে নিজের কপাল ঠুকতে চলে আসেন।
যুজবেন্দ্র চাহালের বাবা উকিল ছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, যে চাহাল দাবায় উদীয়মান খেলোয়াড় ছিলেন। জাতীয় দলেরও একাধিকবার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এরপর তার চেয়ে বেশি এগিয়ে যাওয়ার জন্য পঞ্চাশ লাখ টাকা বাৎসরিক প্রয়োজন ছিল। যা তাঁর পক্ষে খরচ করা সম্ভব ছিল না। তিনি কোনও স্পনসরও পাননি। যে কারণে তাকে দাবা খেলা ছেড়ে দিতে হয়।
দাবারু হওয়া থেকে পিছিয়ে গেলেও হতোদ্যম হননি চাহাল। তিনি ক্রিকেটে মনোনিবেশ করেন। এর আগে অল্প বিস্তর খেললেও কখনও ক্রিকেটকে পেশা হিসেবে নেবেন তা ভাবেননি। এরপর চাহালের নাম তখন শিরোনামে আসে, যখন তিনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টি ফাইনালে রয়াল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু-র বিরুদ্ধে তিন ওভারে নয় রান দিয়ে দুই উইকেট নেন। তার দৌলতেই মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ২০১৩ খেতাব জিতেছিল।
এই পারফরমেন্সের পরে চাহালের ক্রিকেটীয় জীবন বদলে যায়। এরপর রয়াল চ্যালেঞ্জার বেঙ্গালুরু তাকে কিনে নেয়। যখন ২০১৬ সালের চাহাল টিম ইন্ডিয়ার জন্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটে ডেভিউ এর সুযোগ পান। জিম্বাবুয়ে সফরে চাহাল প্রথম ওয়ানডে ইন্টারন্যাশনাল খেলেন।
যুজবেন্দ্র চাহাল ডিসেম্বর ২০২০ সালে ধনশ্রী বর্মার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। লকডাউনের সময় দুজনে বিয়ে করে নেন এবং এই প্রোগ্রামে তাই তিনি খুব কাছের কিছু লোকজনকেই ডেকেছিলেন। ধনশ্রী বর্মা পেশায় একজন কোরিওগ্রাফার যিনি সোশ্যাল মিডিয়াতে অত্যন্ত জনপ্রিয়।
তাই দাবারু হওয়া না হোক ক্রিকেটার হিসেবে তিনি যে সাফল্য অর্জন করেছেন, সারা জীবন শুধুমাত্র ক্রিকেটে মনোনিবেশ করে অনেকে সেই জায়গায় পৌঁছতে পারেন না। চাহালকে ৩২ তম জন্মদিনে রইল অনেক শুভেচ্ছা।