বিজেপির কাছে একের পর এক নির্বাচনে হারতে হারতে ক্লান্ত জেলা তৃণমূলের নেতারা দীর্ঘদিন বাদে মুখে মিষ্টির স্বাদ পেলেন। ভবানীপুরে বিধানসভা উপনির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রীর বিরাট ব্যবধানে জয়ের পর বিজেপির দাপটে একেবারে কোণঠাসা হয়ে পড়া তৃণমূল ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে।
আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূলের অন্দরে ফের ফুরফুরে মেজাজ। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর জেলার আকাশে সবুজ আবিরের দেখা মেলেনি। গায়ে সবুজ আবির মেখে দলীয় নেতাদের বুক চিতিয়ে মিছিলে শামিল হতে দেখেনি জেলার মানুষ।
এদিন উপনির্বাচনে মমতা বন্দোপাধ্যায় বিরাট ব্যবধানে জয়ের পরেই আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব দীর্ঘ শীত ঘুমের বিরতি নিয়ে ফের সবুজ আবিরে ভরিয়ে দিল জেলার রাজনৈতিক আকাশ। দীর্ঘদিন বাদে উপনির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রীর জয়ের সুবাদে মিষ্টিমুখ আর সবুজ আবিরে মাততে দেখা গেল। টানা পরাজয়ে ক্লান্ত জেলা তৃণমূল নেতাদের।
মাত্র ছয় মাস আগেই জেলার রাজনৈতিক চিত্রটা ছিল একদম উল্টো। ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্যের একমাত্র জেলা আলিপুরদুয়ারে পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রেই বিজেপির কাছে ল্যাজেগোবরে পরাজিত হতে হয়েছে শাসকদলকে।
বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর একমাত্র প্রান্তীয় এই জেলার নেতাদের খুঁজে পেতে বেশ কিছুটা সময় লেগেছে। শোচনীয় পরজয়ের পর জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব কার্যত গর্তে ঢুকে পড়েছিল।
জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব শেষ জয়ের স্বাদ পেয়েছিল প্রায় ছয় বছর আগে। তারপরে জেলায় আর কোন বড় নির্বাচনে জয়ের মুখ দেখেনি তৃণমূল নেতারা।
বিজেপির কাছে একের পর এক নির্বাচনে পরাজয়ের পর হারের আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছিল জেলা নেতাদের। ধারাবাহিক হারের আতঙ্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে যে জেলার দুই পুরসভার নির্বাচনে জয়ের ব্যপারে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন জেলার প্রথম সারির অনেক নেতাই।
যদিও এই বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ তৃণমূলের নেতারা। বিধানসভা নির্বাচনে দলের ভরাডুবির পর তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্ব জেলা সংগঠনে ব্যাপক রদবদল ঘটায়। জেলা সভাপতির পদ থেকে মৃদুল গোস্বামীকে সরিয়ে দিয়ে জেলা সভাপতি করা হয় আদিবাসী চা শ্রমিক নেতা প্রকাশ চিক বড়াইককে।
ঠিক সে পথেই জেলা যুব সংগঠন থেকে শুরু করে, জেলা শ্রমিক সংগঠন সব ক্ষেত্রেই পরিবর্তন আনে রাজ্য নেতৃত্ব। জেলা তৃণমূলের সভাপতি প্রকাশ চিকবড়াইক বলেন, রাজনীতিতে জয় পরাজয় আছেই। সে জন্য দলের জেলা নেতাদের মনোবল এতটুকু ভাঙেনি। আমরা নতুন উদ্যমে পুরসভা নির্বাচনে জয়ের জন্য তৈরি হচ্ছি। আর দলনেত্রীর জয় বলে কথা। সবাই সেই আনন্দ উপভোগ করতে চায়।