ইয়াসের জেরে প্রবল ক্ষতিগ্রস্থ গোসাবা। বেশিরভাগ এলাকা এখনও জলমগ্ন। প্রবল দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। সেই সঙ্গে নয়া আশঙ্কা দেখা গিয়েছে এই এলাকাকে ঘিরে।
নতুন করে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে এই এলাকাগুলিতে। পাশাপাশি বিভিন্ন রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন এই এলাকার মানুষ। এমন অবস্থায় জল পেরিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছেন গোসাবা ব্লকের স্বাস্থ্যকর্মীরা। রোগীদের দেখভালের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সরবরাহ করা হচ্ছে গোসাবায় জলমগ্ন এলাকাগুলিতে।
ঘূর্নিঝড় ইয়াসের প্রভাবে গোটা গোসাবা ব্লকের নটি দ্বীপই জলমগ্ন। বহু জায়গায় বাঁধ ভেঙে দুর্ভোগে প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ। জমা জলে ইতিমধ্যেই জলবাহিত নানা অসুখ দেখা দিয়েছে এলাকায়।
পাশাপাশি জলবন্দী হয়ে পড়ার কারণে বহু প্রসূতি মায়েদের চিকিৎসার সমস্যা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে এই দ্বীপাঞ্চলে করোনা সংক্রমণও জাকিয়ে বসতে শুরু করেছে।
এই পরিস্থিতিতে এলাকার মানুষজনকে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে জল কাদা পেরিয়ে গ্রামে গ্রামে গিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে শুরু করেছেন গোসাবা ব্লকের স্বাস্থ্যকর্মীরা। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ইন্দ্রনীল বর্গীর নেতৃত্বে চলছে এক দ্বীপ থেকে আরেক দ্বীপে চিকিৎসা।
প্রাথমিক ভাবে গোসাবার প্রতিটি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ও গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে মেডিকেল ক্যাম্প শুরু করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। পাশাপাশি এলাকায় যে সমস্ত ত্রাণ শিবির হয়েছে সেখানে গিয়েও চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা দুর্গত মানুষজনের চিকিৎসা করছেন।
গত শুক্রবার থেকেই গোটা ব্লক জুড়ে সাধারণ মানুষজনকে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যে সমস্ত এলাকায় মানুষজন এখনও জলবন্দি হয়ে রয়েছেন সেখানে গিয়ে ও মানুষজনকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার কাজ শুরু করে দিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। রোগী দেখার পাশাপাশি তাদেরকে সমস্ত ধরনের প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের তরফ থেকে।
ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এলাকায় জল জমে যাওয়ার কারণে মানুষজন পেটের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি। তাছাড়া গত কয়েকদিনে গোসাবার কুমিরমারি, ছোট মোল্লাখালি এলাকায় করোনা সংক্রমণ ও বৃদ্ধি পেয়েছে।
ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, দুর্গতদের পক্ষে এই পরিস্থিতিতে তাদের পক্ষে ব্লক হাসপাতাল বা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়। তাই তাঁরাই গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষজনকে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিচ্ছেন। পাশাপাশি এই সময় প্রসূতি মায়েরা যাতে অপুষ্টিতে না ভোগেন সেদিকে লক্ষ্য রেখে তাদের হাতে পুষ্টিকর খাবারও তুলে দেওয়া হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় যাদের মধ্যে উপসর্গ রয়েছে তাদের সকলকেই এন্টিজেন টেস্ট করা হচ্ছে। সংক্রমণ ধরা পড়লে সেফ হাউসে পাঠানোর ব্যাবস্থা করা হচ্ছে আক্রান্তদের।