একে ইলিশ মিলছে না। তার উপর খরচ বাড়ছে। এর মধ্য়ে ফের ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটল বঙ্গোপসাগরে। ঘটনায় নিখোঁজ দশ মৎস্যজীবী।
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ফের দুর্ঘটনার কবলে পড়ল একটি ট্রলার। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চরে ধাক্কা মেরে মাঝ সমুদ্রে ডুবে যায় এফবি হৈমবতী নামের ট্রলারটি।
বারো জন মৎস্যজীবী জলমগ্ন হলেও বৃহস্পতিবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ন জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে এখনও পর্যন্ত।
বাকি দশজন মৎস্যজীবী নিখোঁজ। বুধবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে বঙ্গোপসাগরের রক্তেশ্বরী চরের কাছে। দিনভর চলে নিখোঁজদের খোঁজে তল্লাশি।
দিন পনেরো আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানার দশ মাইল এলাকা থেকে এই ট্রলারটি বারোজন মৎস্যজীবীকে নিয়ে গিয়েছিল বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরতে।
এদিন সকালে যখন তাঁরা মাছ ধরে ফিরছিলেন, ঠিক তখনই দুর্ঘটনাটি ঘটে। সম্ভবত রাতভর মাছধরার ক্লান্তিুতে চরা ঠিকমতো দেখতে পায়নি ট্রলার চালক।
পাশে থাকা অন্য ট্রলারের তৎপরতায় তৎক্ষণাৎ উদ্ধার হয় দুজন। কিন্তু বাকি মৎস্যজীবীদের সঙ্গে সঙ্গে কোনও খোঁজ মেলেনি।
ঘটনার খবর পেয়ে ফ্রেজারগঞ্জ উপকূল থানার পুলিশ ও কোস্টগার্ডের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করতে হাত লাগান।
কিন্তু সমুদ্রে প্রচণ্ড ঢেউয়ের ফলে নিখোঁজ কাউকেই উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এমনকী জলে নেমে খোঁজার মত পরিস্থিতি ও পরিকাঠামো ট্রলারগুলির কাছ ছিল না।
তবে ডুবে যাওয়া ট্রলারটিকে অন্য চারটি ট্রলারের সাথে দড়ি দিয়ে বেঁধে কোনও মতে ফ্রেজারগঞ্জের দিকে নিয়ে আসা হয়।
কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী সংগঠনের নেতা বিজন মাইতি বলেন, “ বুধবার সকালে ফেরার সময় প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে চড়ায় ধাক্কা খেয়ে এফবি হৈমবতী নামের ট্রলারটি ডুবে যায়।
কোস্টগার্ডের আধিকারিক অভিজিত দাশগুপ্ত বলেন, “ ঘটনার খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করেছি। প্রথম দিন তেমন উদ্ধার করা যায়নি।
তবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নিখোঁজের মধ্যে ৯ জনের দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফের উদ্ধার কাজ শুরু হয়।
অবশেষে উদ্ধার ৯ জন মৎসজীবীর মৃতদেহ। ফ্রেজারগঞ্জ মৎস্য বন্দরে এনে রাতভর জল সিঁচে নেওয়ার পর কেবিন থেকে উদ্ধার হয় মৃতদেহগুলি।
তাদের পাঠানো হয় কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে, ময়না তদন্তের জন্য। মৃত মৎসজীবীদের পরিচয় সামনে এসেছে।
জানা গিয়েছে তাঁরা হরিপুরের অনাদি শাসমল, শঙ্কর শাসমল, নারায়ন সাসমল গোপাল জানা রবীন বর, পাতিবুনিয়ার বুদ্ধদেব মাইতি, মহারাজগঞ্জের বাসিন্দা অজিৎ বেরা, গৌতম পারুই, শিবপুরের সন্তোষ মন্ডল, রাধানগরের গৌরহরি দাস।
ভোর তিনটে নাগাদ তাঁদের দেহ উদ্ধার হয়। দেহ মিলতেই শোকের ছায়া নেমে আসে এলাকায়।