সরকারি খাতায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে মায়ের। মৃত্যুর শংসাপত্রও রয়েছে ছেলের হাতে। সে প্রায় মাস সাতেক আগের কথা। অথচ রবিবার রাতে মৃত মহিলার মোবাইলে আসে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার শংসাপত্রের মেসেজ।
সেই মোবাইলটি এখন মৃতার ছেলের কাছে রয়েছে। যা নিয়ে রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে হুগলির ডানকুনির দক্ষিণ সুভাষ পল্লিতে। মা মারা গিয়েছেন, তিনি সেকেন্ড ডোজ নিলেন কীভাবে? প্রশ্ন ছেলের।
গত মার্চ মাসে মারা যান সরস্বতী দাস। মৃত্যুর মাসখানেক আগে কোভিডের প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন তিনি। এদিকে কোভিডের ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় শংসাপত্র আসার পর রীতিমতো অস্বস্তিতে ছেলে বিলাস দাস।
তিনি জানান, মা যদি বেঁচে না থাকে তাহলে শংসাপত্র এল কীভাবে? বলেন, 'আমার সরকারের কাছে আর্জি মা যদি বেঁচে থাকে, তাহলে তাঁকে যেন আমার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।'
বিলাসবাবুর মা স্বর্গীয় সরস্বতী দাস কোভিড টিকার প্রথম ডোজ নেন চলতি বছরের ২২শে মার্চ। মাসখানেক পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিলাসবাবু তাঁর মাকে বুকে নিয়ে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পরীক্ষায় কোভিড ধরা পরে সরস্বতীদেবীর। গত এপ্রিলের ২৯তারিখ সেই হাসপাতালেই মারা যান তিনি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রশাসনই সরস্বতী দেবীর মৃতদেহ দাহ করেন।
দিন পনেরো পর মায়ের মৃত্যুর শংসাপত্রও তুলে নেন বিলাসবাবু। মায়ের মোবাইল নম্বরটি আপাতত বিলাসবাবু নিজের কাছেই সচল রেখেছেন। এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু রবিবার সন্ধেবেলা হঠাৎ করেই সরস্বতীদেবীর দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া সম্পন্ন হয়েছে বলে বিলাসবাবুর মোবাইলে মেসেজ আসে।
সত্যি কি না যাচাই করতে তড়িঘড়ি তিনি কো-উইন অ্যাপ খুলে দেখেন সত্যিই তো! শনিবার না কি মৃত মা চণ্ডীতলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন। অবাক করা সেই শংসাপত্রের প্রিন্ট আউট বের করেন বিলাসবাবু।
এনিয়ে BJP-র বক্তব্য আমরা বারংবার এই রাজ্যে ভ্যাকসিন দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ করেছি। দলের ডানকুনির সাধারণ সম্পাদক গুঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, একজন মৃত মানুষের নামে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়ে গেল। এটা ভ্যাকসিন দুর্নীতি ছাড়া কী?
এই বিষয়ে হুগলি জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য সুবীর মুখার্জী বলেন ভুল তো অবশ্যই হয়েছে। আমি এবিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের সাথে কথা বলব। তবে এর সাথে দুর্নীতির কোনও যোগ নেই।