দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি জেলায় আচমকাই শিশুদের সর্দি, জ্বর এবং পেট ব্যথার লক্ষণকে ঘিরে আতঙ্ক। জানা গেছে গত কয়েকদিনে আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। এতেই উদ্বেগ বাড়ছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের। তবে শিশুরা আদৌ কোনো ভাইরাস ঘটিত রোগে সংক্রমিত তা জানতে তাদের লালা রস ও নাকের টিস্যু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে পাঠানো হচ্ছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ কিছুটা স্বাভাবিক হতেই বিশেষজ্ঞদের মতে আসতে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ। তবে বলা হচ্ছে এতে শিশুরাও আক্রান্ত হতে পারে। কিন্তু এর আগেই আচমকাই জলপাইগুড়ি ও শহর শিলিগুড়িতে শিশুদের জ্বর, সর্দি ও পেট ব্যথায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ক্রমশ আতঙ্ক বাড়ছে শহরে। শুধু তাই নয় শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে এবং উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বহির্বিভাগে গত কয়েক দিনে এই সংক্রমণের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে।
জেলা হাসপাতাল সূত্রে খবর শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুদের করোনা পরীক্ষা করা হলেও তাদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তবে সবচেয়ে বেশি চিন্তার বিষয় এই শিশুরা করোনা বা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত না হলেও তাদের প্লেটলেটের সংখ্যা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই নীচে নেমেছে। আর এতেই উদ্বিগ্ন বাড়ছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের।
অন্যদিকে একই অবস্থা জলপাইগুড়ি জেলায় । জানা গেছে জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর শিশুরা জ্বর-সর্দি ও পেটব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি। এর মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাদের শিলিগুড়ি উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে চিকিৎসাধীন ৯ মাসের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মেডিকেল সূত্রে খবর মৃত শিশুর নাম নুসরাত আলী। শিশুটি জলপাইগুড়ির রানিডাঙ্গার বাসিন্দা। সে চলতি মাসের ১১ তারিখ থেকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিল।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে জ্বর, সর্দি এবং পেট ব্যথা নিয়ে ১৩০ টি শিশু এবং শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ৭০ টি শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছেন। একই সাথে জানা গেছে জেলা হাসপাতালে সাধারণত প্রতি মাসে গড়ে ৬০ থেকে ৭০ টি শিশু জ্বর সর্দি ও পেট ব্যথা নিয়ে বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে আসে। তবে গত কয়েকদিনে সেই সংখ্যা বেড়ে প্রায় তিনশোর কাছাকাছি ঠেকছে। একইভাবে উত্তরবঙ্গ মেডিকেলেও বহির্বিভাগের এই সংখ্যা বাড়ছে।
বিষয়টি নিয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে শিশু বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান ডাক্তার সুবীর ভৌমিক বলেন, গত এক মাস আগে জ্বর ,সর্দি ,কাশি শ্বাসকষ্ট ও পেট ব্যথা নিয়ে যে পরিমান শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসত গত কয়েকদিনে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় চারগুণ। যারা এই ধরনের লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসছে তাদের সাথে সাথে চিকিৎসা করা হচ্ছে। চিকিৎসায় দেরি হলে সেক্ষেত্রে ওই শিশুর শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হচ্ছে।
অন্যদিকে এই প্রসঙ্গে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে সুপার প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, গত কয়েকদিনে জ্বর সর্দি-কাশি পেট ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসা শিশুর সংখ্যা বেড়েছে তবে এর কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তবে হাসপাতালে শিশুদের জন্য আলাদা পেডিয়াট্রিক ওয়ার্ড সহ অন্যান্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।