Advertisement

পশ্চিমবঙ্গ

PHOTOS : এই ৩ তোরণ দিয়েই ঢুকত নবাবের খাজনা, মুর্শিদাবাদের 'ইতিহাস' ধ্বংসের পথে

গোপাল ঠাকুর
  • মুর্শিদাবাদ,
  • 09 Jul 2021,
  • Updated 9:39 PM IST
  • 1/9

নবাব সুজাউদ্দিন তিনটি সুবা বাংলা, বিহার ও ওডিশার নামানুসারে তোরণ তিনটি নির্মাণ করান। কথিত আছে বাংলা তোরণ দিয়ে বাংলার রাজস্ব, বিহারের তোরণ দিয়ে বিহারের রাজস্ব এবং ওডিশার তোরণ দিয়ে ওডিশার রাজস্ব নবাবের কাছে আসত।

  • 2/9

সংরক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে ধীরে ধীরে ধ্বংসপ্রাপ্ত হতে বসেছে প্রায় তিনশো বছরের প্রাচীন মুর্শিদাবাদ শহরের নবাবি স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন তিনটি তোরণ। দীর্ঘদিনের অবহেলা ও নজরদারির অভাবে তোরণগুলির গায়ে থাবা বসিয়েছে ক্ষয়রোগ। জরাজীর্ণ তোরণের গায়ে গজিয়ে উঠেছে বট, অশ্বত্থ এবং নাম না জানা আগাছা। সময়ের সঙ্গে বট ও অশ্বত্থের শিকড় তোরণের গভীরে যত প্রবেশ করছে ফাটল তত চওড়া হচ্ছে। কমছে নবাবি স্থাপত্যের নিদর্শনগুলির স্থায়িত্ব। এখনই সংরক্ষণের ব্যবস্থা না হলে অচিরেই মুশিদাবাদের বুক থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে নবাবি আমলের তোরণগুলি। নবাবি স্থাপত্যের এই নিদর্শণগুলি সংরক্ষণের দাবিতে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে জেলাবাসী। তাদের দাবি নবাবি ইতিহাসের এই উপাদানগুলিকে রক্ষা করতে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার যৌথ ভাবে এগিয়ে আসুক।

  • 3/9

ইতিহাসের শহর মুর্শিদাবাদ। একদা সুবে বাংলা তথা বাংলা-বিহার-ওডিশার রাজধানী মুর্শিদাবাদ শহরে রয়েছে হাজারদুয়ারি প্যালেস মিউজিয়াম, কাটরা মসজিদ সহ একাধিক নবাবি স্থাপত্য। নবাবি আমলের প্রাসাদ, মসজিদ, স্মৃতি সৌধের পাশাপাশি রয়েছে বেশ কয়েকটি গেট বা তোরণ। গেটগুলির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য চকবাজার এলাকায় তিনটি প্রবেশ পথ বিশিষ্ট ত্রিপলি গেট এবং দক্ষিণ দরওয়াজা।

  • 4/9

সুউচ্চ এই দুটি গেট পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ অধিগ্রহণ করে সম্প্রতি সংস্কার করেছে। নবাবি আমলের দুটি গেট পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ অধিগ্রহণ করলেও চরম অবহেলায় পড়ে রয়েছে চকবাজার এলাকায় ত্রিপলি গেট সংলগ্ন তিনটি তোরণ। মুর্শিদাবাদের নবাবি ইতিহাস থেকে জানা যায় বাংলার প্রথম স্বাধীন নবাব তথা মুর্শিদাবাদ শহরের প্রতিষ্ঠাতা মুর্শিদকুলি খার মেয়ে আজিমুন্নেসার স্বামী সুজাউদ্দিন খাঁর সময়ে তোরণগুলি নির্মাণ করা হয়।

  • 5/9

নির্মাণকাল আনুমানিক ১৭২৯-১৭৩২ সালের মধ্যে ধরা হয়। চকবাজার মোড়ে একটি তোরণ পূর্বদিক অর্থাৎ মুর্শিদাবাদ স্টেশনের দিকে, অপরটি পাচরাহা মোড়ের দিকে এবং তৃতীয়টি জেলখানা রোডের দিকে অবস্থিত। নবাব সুজাউদ্দিন তিনটি সুবা বাংলা, বিহার ও ওডিশার নামানুসারে তোরণ তিনটি নির্মাণ করান। কথিত আছে বাংলা তোরণ দিয়ে বাংলার রাজস্ব, বিহারের তোরণ দিয়ে বিহারের রাজস্ব এবং ওডিশার তোরণ দিয়ে ওডিশার রাজস্ব নবাবের কাছে আসত। একদা নবাবি শাসনের স্মারক এই তিনটি তোরণ এখন কোনপ্রকারে অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে।

  • 6/9

দেখভাল, নজরদারির অভাবে জল, ঝড়, বৃষ্টি, রোদ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে প্রতিনিয়ত একটু একটু করে ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে। তিন সুবা নামাঙ্কিত তিনটি তোরণের পাশাপাশি চকবাজার থেকে প্রায় পঞ্চাশ ফুট দূরে রণকব্জা নামে তিন শতাধিক বছরের প্রাচীন আরও একটি তোরণ রয়েছে। নবাবি স্থাপত্য কীর্তির অন্যতম নিদর্শন এই তোরণটি প্রায় ধ্বংসের মুখে।

  • 7/9

সংরক্ষণ এবং সংস্কার না হলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। লালবাগের বাসিন্দা ইতিহাসের ছাত্র মিলন কুণ্ডু বলেন, সরকারী উদাসীনতায় মুর্শিদাবাদের নবাবদের অনেক স্থাপত্য নিদর্শন নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকগুলি প্রায় ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে। নবাবি আমলের এই তোরণগুলিও অনাদরে ও অবহেলায় কোনও প্রকারে অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে।

  • 8/9

এইগুলি নষ্ট হয়ে গেলে ইতিহাসের ছাত্র, গবেষক এবং পর্যটকরা বঞ্চিত হবেন। জিয়াগঞ্জের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক অরুপ ঘোষ বলেন, নবাবি আমলের স্থাপত্য নিদর্শনকে টিকিয়ে রাখতে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। মুর্শিদাবাদ হেরিটেজ অ্যান্ড কালচারাল ডেভলপমেন্ট সোসাইটির সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, নবাবি আমলের তোরণগুলি নবাবি ইতিহসের ধারক ও বাহক।

  • 9/9

অথচ ইতিহাসের এই উপাদানগুলি নষ্ট হতে বসেছে। গত কয়েক দশক ধরে সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারকে জানিয়েও কোন লাভ হয় নি। নবাবি ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রাখতে তোরণগুলি সংরক্ষণ ও সংস্কার করা হোক।

Advertisement
Advertisement