Nirmal Maji: ফের বিতর্কে তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মাজি (TMC MLA Nirmal Maji)। হাওড়ার এক পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচনের পর তিনি এক কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়ারকে মিষ্টি খাইয়ে দেন। আবার সেই সিভিক ভলান্টিয়ারও তাঁকে মিষ্টি খাইয়ে দেন। এমনই অভিযোগ উঠেছে। বিরোধীরা এই ঘটনার সমালোচনা করেছে। প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তারা।
আনন্দে তৃণমূল কর্মীরা
মঙ্গলবার উলুবেড়িয়া বানিবন গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল নিয়ে তৃণমূলের প্রধান নির্বাচিত হয়। প্রধান নির্বাচিত হবার পর উৎসবে মেতে ওঠেন তৃণমূল কর্মীরা। এই অনুষ্ঠানের শেষে রাজাপুর থানার এক মহিলা সিভিক ভলেন্টিয়ারকে দেখা যায় উলুবেড়িয়া উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক নির্মল মাজি (TMC MLA Nirmal Maji)-কে মিষ্টি খাওয়াতে।
বিজেপির আক্রমণ
কর্মরত অবস্থায় এই ঘটনায় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। এই বিষয়ে হাওড়া গ্রামীণ জেলার বিজেপি সভাপতি প্রত্যুষ মণ্ডল বলেন ভোট করানো থেকে বোর্ড গঠন- সবেতেই প্রশাসনের নির্লজ্জ ভুমিকা রয়েছে। প্রশাসন তৃণমূলকে তুষ্ট করতে ব্যস্ত। এই নিন্দনীয় ঘটনা সেটা প্রমাণ করে।
বনিবনার ঘটনা
গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন প্রধান নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দুপুরে বানিবন গ্রাম পঞ্চায়েতের সামনে উল্লাসে মেতে ছিল তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। সবুজ আবিরের পাশাপাশি ছিল মিষ্টি মুখের পালা।
মিষ্টি কই!
আর এই মিষ্টি মুখ শুধু দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না অংশ নিয়েছিল কর্তব্যরত মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার। ওই মহিলা সিভিক ভলেন্টিয়ার কে বিধায়ক ডাঃ নির্মল মাজি (TMC MLA Nirmal Maji)-কে মিষ্টি খাওয়াতে দেখা গিয়েছিল। আর একজন কর্তব্যরত সিভিক ভলেন্টিয়ার বিধায়ককে মিষ্টি খাওয়ানো হয়েছে। এমনই অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি।
দখলে এল তৃণমূলের
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে উলুবেড়িয়া উত্তর বিধানসভার ২৪ আসন বিশিষ্ট বানিবন গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৩টি আসন পেয়ে পঞ্চায়েত দখল করেছিল বিজেপি। ১০টি আসন পেয়ে তৃণমূল দ্বিতীয় স্থানে ছিল।
যদিও পরবর্তী সময়ে বিজেপির ৪ ও ফরওয়ার্ড ব্লকের ১ জন সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় তৃণমূলের আসন সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫। আর এর পরেই গত আগস্ট মাসে পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে তৃণমূল।
যদিও সেই সময় বিজেপি আদালতের দ্বারস্থ হওয়ায় অনাস্থা স্থগিত রাখা হয়। পরে ১২ নভেম্বর পুনরায় প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে তৃণমূল। সেইমতো গত ৩০ নভেম্বর অনাস্থা ভোটাভুটি হলে প্রধান পরাজিত হয়।
আর মঙ্গলবার ছিল নতুন পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচন। সেইমতো এদিন সকাল থেকেই তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা গ্রাম পঞ্চায়েতের সামনে হাজির হয়েছিল। পরে মোটামুটি শুরু হওয়ায় ১৫- ৯ ব্যবধানে তৃণমূলের শরিফা বেগম নতুন প্রধান নির্বাচিত হন।
কাটল তাল
এদিকে নতুন প্রধান নির্বাচিত হওয়ার পরই তৃণমূল কর্মীরা উল্লাসে ফেটে পড়ে। একে অপরকে সবুজ আবির রাঙিয়ে দেওয়া ছাড়াও চলে মিষ্টি মুখের পালা। নিজের হাতে মিষ্টি নিয়ে দলীয় কর্মীদের বিতরণ শুরু করেন বিধায়ক নির্মল মাজি। আর এই সময় ঘটে বিপত্তি!
পঞ্চায়েতে সামনে থাকা কর্তব্যরত এক মহিলা সিভিক ভলেন্টিয়ার বিধায়কের হাতে থাকা মিষ্টির প্যাকেট থেকে মিষ্টি নিয়ে বিধায়ককে খাইয়ে দেন। পাল্টা বিধায়ক ও সিভিক ভলেন্টিয়ারকে মিষ্টি খাইয়ে দেন।
অভিযোগ জানাবে বিজেপি
এরপর এই আসরে নামে বিজেপি। বিজেপির হাওড়া গ্রামীণ জেলা সভাপতি প্রদ্যুৎ মণ্ডল অভিযোগ করেন, প্রশাসন কতটা নিরপেক্ষ এর থেকে বোঝা যায়। তিনি বলেন বিধায়কের এই ভূমিকায় আমরা দুঃখিতও মর্মাহত। এটাই প্রমাণ করে প্রশাসনকে পুরোপুরি নিজের অঙ্গুলি হেলনে চালাচ্ছেন বিধায়ক। বিষয়টি নিয়ে দলের পক্ষ থেকে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন জেলা সভাপতি প্রত্যুষ মন্ডল।