SUCI Slams TMC CPIM: সরকারি প্রকল্পের নামে তৃণমূল মানুষকে কিনছে! রবিবার এ ভাবেই তৃণমূলকে আক্রমণ করলেন এসইউসিআই (সি) নেতা প্রভাস ঘোষ। এদিন দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে কলকাতার শহিদ মিনার ময়দানে সভার আয়োজন করা হয়েছিল। একইসঙ্গে বিজেপি, কংগ্রেস এবং সিপিআইএমকেও বেঁধেন তিনি।
তৃণমূলের সমালোচনা
এদিনের সভা থেকে বিজেপি, কংগ্রেস, আরজেডি, তৃণমূলের প্রবল সমালোচনা করা হয়। প্রভাস ঘোষের বক্তব্য, কীভাবে ভোটের আগে ইভেস্ট করছে। এ রাজ্যে কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথী প্রভৃতির নামে তৃণমূল ক্ষুধার্ত মানুষকে ভোটের আগে কিনছে। ভোটের আগে লক্ষ লক্ষ টাকায় পাড়ায় পাড়ায় বিলাচ্ছে।
আরও পড়ুন: শিলিগুড়িতে গৌতম দেব মেয়র, জানিয়ে দিলেন মমতা
দিল্লির হিংসার প্রবল সমালোচনা
তাঁর অভিযোগ, জাহাঙ্গিরপুরিতে রামনবমীর মিছিলের নামে দাঙ্গা বাধাচ্ছে বিজেপি। এই রাজ্যেও বিজেপি-তৃণমূল রামনবমীর মিছিলের নামে কিছু জেলায় উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি করেছে। বিজেপি শ্রমিক বিরোধী শ্রমকোড চালু করছে, জাতীয় শিক্ষানীতি চালু করে শিক্ষার প্রাণসত্তাকে ধ্বংস করছে, ঘুরপথে কৃষি আইনের ধারাগুলি চালু করছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, তৃণমূল সরকার 'দুয়ারে মদ'-এর নামে কেবল রাজস্ব আদায় নয়, যুবকদের মত্ত রাখার চেষ্টা করছে। তৃণমূল ক্রিমিনাল দিয়ে আজ যে ভোট করছে তা শুরু হয়েছিল সিদ্ধার্থ রায়ের সময়, সিপিআইএমও একইভাবে করেছিল।
নারী নির্যাতন
এসইউসিআইয়ের তোপ, প্রতিদিন ধর্ষণ হচ্ছে, পাড়ায় পাড়ায় নারীর আর্তনাদ চলছে, কন্যাও পিতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করছে। এই হচ্ছে আজ এই রাজ্যের পরিস্থিতি। জাতীয় প্রস্তাবে বলা হয়েছে, হাথরস ও হাঁসখালি এক জায়গায় দাঁড়িয়ে। তৃণমূল কোটি কোটি টাকা খরচ করে বাণিজ্য সম্মেলন করছে অথচ এই রাজ্যে বন্ধ চা-বাগান বা জুট মিল খোলার ব্যবস্থা করছে না।
এই প্রস্তাবের ধারাবাহিকতায় প্রভাস ঘোষ বলেন, এই দুষ্ট রাজনীতির বিরুদ্ধে বামপন্থী আন্দোলন গড়ে না তুলে অতীতে বারবার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় হাত রাঙানো কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএম জোট করতে চাইছে। তিনি তাঁর তীব্র সমালোচনা করেন। তাঁর দাবি, স্রেফ মুসলিম ভোট পাওয়ার জন্য ভাইজানকে নিয়ে এসেছে। সিপিআইএম ভোট সর্বস্ব বামপন্থার চর্চা করছে। আর আমরা সংগ্রামী বামপন্থার চর্চা করছি। ভোট পাওয়ার জন্য তৃণমূল, বিজেপি রাম পুজো, হনুমান পুজো কত পুজো করছে। আমরা বলি তাহলে বিভীষণ পুজো করো।
যুদ্ধবিরোধী প্রস্তাব
সভার শুরুতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরোধী প্রস্তাব ও জাতীয় পরিস্থিতি সংক্রান্ত প্রস্তাব পেশ করা হয়। দ্বিতীয় প্রস্তাবে বিজেপি, কংগ্রেস, তৃণমূল প্রভৃতি বিভিন্ন শাসক দল যেভাবে দেশ চালাচ্ছে, তার তীব্র সমালোচনা করা হয়। তারপর প্রভাস ঘোষ বক্তব্য পেশ করেন।
তিনি বলেন, "স্ট্যালিনের নেতৃত্বে সোভিয়েত ফ্যাসিস্ট হিটলারকে পরাজিত করে বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সোভিয়েতের পতনের সময় বলা হয়েছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে। কেমন গণতন্ত্র এসেছে রাশিয়াতে, তা দেখা যাচ্ছে। একটা শক্তিশালী সাম্রাজ্যবাদী দেশ রাশিয়া ছোট্ট ইউক্রেনকে অধিকারের নামে কীভাবে হাজার হাজার নিরস্ত্র মানুষকে মারছে। ভারত সরকার রাশিয়া থেকে সস্তায় জ্বালানি ও অস্ত্রের লোভে যুদ্ধের বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছে না।"
সভায় বিভিন্ন জেলা থেকে বহু মানুষ শহিদ মিনার ময়দানে উপস্থিত হয়েছিলেন। সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও দলের রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য।