দুর্গাপূজায় বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে গোটা বিশ্বে। এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশের শোবিজের অনেক তারকাও। মর্মস্পর্শী পোস্ট করেছেন ক্রিকেটার মাশরফিও।
সাম্প্রদায়িক হামলা নিয়ে মিমের প্রতিক্রিয়া
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম লিখেছেন, কোনো ধর্মই কখনো প্রতিহিংসা শেখায় না। তাই ধর্মীয় বিশ্বাসের নামে সকল সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি। আরও একটা কথা, দেশটা যদি আমাদের সকলেরই হয়, তাহলে এখানে ‘সংখ্যালঘু’ বলে কোন শব্দ থাকা উচিত না। আর যদি সংখ্যাতেই কথা বলতে হয়, তাহলে পৃথিবীতে শুধুমাত্র ভালো মানুষেরাই ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ’ হোক।
বাপ্পী চৌধুরী
ঢালিউডোর নায়ক বাপ্পী চৌধুরী তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘অথচ আমাদের রক্তের রঙ একই।’
কুমার বিশ্বজিৎ
সঙ্গীত শিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, , 'যে কোনো দেশে সবচেয়ে বড় কষ্ট হলো পরবাসী হয়ে থাকা। সংখ্যালঘু হয়ে বসবাস করা একটা অভিশাপ। আর কিছুই বলতে চাই না এই মুহূর্তে।'
আশনা হাবিব ভাবনা
বাংলাদেশের ছোটপর্দার অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা লিখেছেন, 'পোড়ার গন্ধ পাই। দম বন্ধ লাগে। আর কত পুড়তে হবে মানুষকে? আমরা কি মানুষ?
সিয়াম আহমেদ
অভিনেতা সিয়াম আহমেদের কথায়, 'আমাদের বন্ধুরা ঈদের দিন বাড়িতে আসে। আমাদের সাথেই আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়। বিপদে পড়লে সবার সাথে তারাও ছুটে আসে। একবারের জন্য মনে হয় নাই ওরা হিন্দু না মুসলমান। ২০২১ সালে এসে আমরা কী প্রমাণ করতে চাইছি? আমরা তো এমন দেখিনি! আমাদের সাম্প্রদায়িকতা তো এমন না! আমার দেশ জ্বলছে, আমাদের দেশ জ্বলছে।’
দীপা খন্দকার
অভিনেত্রী দীপা খন্দকার লিখেছেন, 'এই দেশে জন্মগ্রহণকারী প্রতিটি নাগরিকের এই দেশে বসবাস করার অধিকার আছে। সে অধিকার কোনো অমানুষ কেড়ে নিতে পারে না। যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। ধিক্কার জানাই অমানুষদের।’
সুবর্ণা মুস্তাফা
অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফার কথায়, 'গত কয়েকদিন ধরে এক বিশ্রী অনুভূতির মধ্যে বসবাস করছি। গ্লানি, দুঃখ, ক্ষোভ সবকিছু মিলেমিশে একাকার। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে যেন কালো একটা পর্দা পড়ে গেল। ত্রিশ লক্ষ শহীদ আর তিন লক্ষ নারীর সর্বোচ্চ ত্যাগকে অসম্মানিত হতে দেখলাম। বঙ্গবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষ সোনার বাংলাকে ধর্মের ধুয়াধারীরা কলুসিত করতে উদগ্রীব। কিন্তু আর না! নতুন করে যুদ্ধ শুরু করতে হবে। দেশকে এই কুচক্রীদের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে। যারা ষড়যন্ত্র করে আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চাইছে, দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে, তাদেরকে বলছি- ‘বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এবার ঘুঘু তোমার বধিব পরাণ’। বাংলাদেশ এখন পুরোটাই ডিজিটাল। তোমরা সবাই চিহ্নিত, তোমাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে, আইনের শাসন দিয়েই তোমরা শাস্তি পাবে। সহনশীল হবার দিন শেষ। নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর সৈনিক উল্লেখ করে স্ট্যাটাসের শেষ অংশে তিনি লিখেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরা আপনার সৈনিক, আপনি আদেশ করেন; ৭১-এ পারিনি, ২০২১-এ দেশের জন্য প্রাণ দিতেও প্রস্তুত।’
মাশরাফি বিন মোর্তাজা
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ খেলতে পারবে কিনা, তা এখন বিভিন্ন সমীকরণের ওপর দাঁড়িয়ে। কিন্তু বাংলাদেশে গত সপ্তাহে দুর্গাপুজোর সময় ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক হামলা, হিংসাত্মক ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন সেদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্তাজা। সোশ্যাল মিডিয়ায় মাশরাফি লিখেছেন, 'কাল দুইটা হার দেখেছি, একটা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের, যেটায় কষ্ট পেয়েছি। আর একটি পুরো বাংলাদেশের, যা হৃদয় ভেঙ্গে চুরমার করেছে। এ লাল সবুজ তো আমরা চাইনি। কত কত স্বপ্ন, কত কষ্টার্জিত জীবন যুদ্ধ এক নিমেষেই শেষ। আল্লাহ, আপনি আমাদের হেদায়েত দিন।'
এরআগে অভিনেত্রী জয়া আহসান, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা , অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী , পরিচালক মোস্তফা সারওয়ার ফারুকী সোচ্চার হয়েছেন।