বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খানের (Shah Rukh Khan) ছেলে আরিয়ান খানকে (Aryan Khan) কর্ডেলিয়া ক্রুজ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে এই ক্রুজে রেভ পার্টিতে (Rave Party) মাদক নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এবং তার কাছ থেকে কিছু ড্রাগও উদ্ধার করা হয়েছে। বলিউড এবং মাদকের একটি পুরনো সংযোগ রয়েছে। রেভ পার্টিও এই সংযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যদিও রেভ পার্টিগুলি কী, এতে কী হয় সে সম্পর্কে অনেকেই জানেন না।
রেভ পার্টিগুলি সাধারণত খুব গোপনীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হয়। কারণ বেশিরভাগ পার্টিতে অবৈধ মাদকদ্রব্যের ঢালাও ব্যবহার হয়ে থাকে। এই পার্টিগুলি সাধারণত শহরের বাইরে বা গোপনে অনুষ্ঠিত হয়। রঙবেরঙের আলো, অবৈধ মাদক, অসংলগ্নভাবে নাচতে প্রায়ই রেভ পার্টিতে দেখা যায় বহু হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিদের। কিছু লোক এই পার্টিতে আসেন কেবল তাদের সঙ্গীতের ভালবাসার জন্য নাচতে, আবার কিছু লোক আসেন, যারা ড্রাগ ব্যবহার করে নাচতে পছন্দ করেন।
এই পার্টিগুলির প্রবেশাধিকার অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাই সমাজের উচ্চ শ্রেণীর লোকদের বেশিরভাগই এই পার্টিগুলিতে দেখা যায়। এই পার্টিগুলিতে সাধারণ বলিউড বা পাঞ্জাবি সঙ্গীত শোনা হয় না। কেবল হার্ডমেটাল সঙ্গীতই বাজানো হয়। এই সঙ্গীতের লিরিক্স প্রায় অস্তিত্বহীন কারণ এই গানের বীট মাদক গ্রহণের পর বিভ্রান্তিকর পরিবেশ তৈরি করে, যা এই পার্টিগুলোতে আসা লোকদের কয়েক ঘণ্টা বাহ্য জ্ঞানশূন্য অবস্থায় নাচতে সাহায্য করে।
রেভ পার্টিতে ভিন্ন ধরণের মিউজিক বাজানো হয়
টেকনো, সাইকেডেলিক ট্রান্স, সাই অ্যাম্বিয়েন্ট, ফরেস্ট, প্রগ্রেসিভ এবং ডার্ক ট্রান্স, হাউস, অ্যাসিড পপ এর মতো অনেক মিউজিক জঁর আছে যা এই পার্টিগুলিতে শোনা যায়। এই পার্টিগুলিতে মিউজিক খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং অনেক পার্টিতে শুধুমাত্র একটি বিশেষ ঘরানার মিউজিক বাজানো হয়। উদাহরণস্বরূপ, জার্মান শহর বার্লিনে প্রচুর টেকনো পার্টি হয়। এই সঙ্গীত উৎসব জঙ্গলে বা প্রকৃতির মাঝখানে তিন দিন ধরে চলে। যেমন ওজোরা, বুম এবং শাম্বলা উৎসব, কেবল ট্রান্স, ডাউনটেম্পো পরিবেষ্টিত এবং সাইকেডেলিক জঁরের মিউজিক শোনা যায়। যে হেতু এই লোকদের অধিকাংশই মাদকাসক্ত অবস্থায় থাকেন, তাই এই জঁর তাদের মানসিক ভাবে জাগিয়ে রাখতে সহায়তা করে।
রেভ পার্টিতে যাওয়ার অনেক ঝুঁকি রয়েছে
বিশ্বের কিছু দেশ আছে যারা রেভ পার্টিকে রাজস্ব আদায়ের মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করে এবং এই দেশগুলোতে এই ধরনের পার্টিগুলোর প্রতি সরকারের মনোভাব কিছুটা নরম থাকে। কিন্তু ভারতের রেভ পার্টিতে তা নয়। এই জাতীয় পার্টিগুলিতে লোকেরা আবেগের বশে প্রায়শই অনেক কিছু ট্রাই করতে পারে, যার কারণে ড্রাগ ওভারডোজের ঝুঁকি রয়েছে এবং রেভ পার্টিতে মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে। এনসিবি বা পুলিশ এই পার্টিগুলিতে অভিযান চালাচ্ছে। গত এক দশকে মুম্বইয়ের বেশ কয়েকটি হাই-প্রোফাইল জায়গায় অভিযানের খবর পাওয়া গেছে। যে হেতু ভারতে মাদক সংক্রান্ত আইন খুবই কঠোর, এ জায়গা থেকে দ্রেফতার হওয়া মানুষকে দীর্ঘ সময় কারাগারে থাকতে হতে পারে। এর ফলে এই ব্যক্তিদের কেরিয়ারে অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। যুবকরাও এই মাদকের প্রতি আসক্ত হতে পারে, যা তাদের সারা জীবন নষ্ট করার সম্ভাবনাও বাড়িয়ে দেয়।