বাংলা সিনেমার পাশে দাঁড়ান। প্রেক্ষাগৃহে যান, সিনেমা দেখুন। এ ধরনের বক্তব্য বহু মানুষের মুখে শোনা যায়। নেহাত ছাপোষা থেকে মঞ্চে অধিষ্ঠিত মহামান্য - সকলেই এ বিষয়ে একমত। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তেমনটা হয় না। সেখানে রাজনীতি, তাঁবেদারি, পাইয়ে দেওয়ার বিষয় চলে আসে। এমনটাই মনে করছেন অভিনেতা দেবপ্রসাদ হালদার (Deboprasad Haldar). আগামী কাল মুক্তি পেতে চলেছে তথাগত মুখোপাধ্যায় (Tathagata Mukherjee) পরিচালিত ছবি ভটভটি। দেবপ্রসাদ সেই ছবির অন্যতম অভিনেতা। হল এবং শো পাওয়া নিয়ে যিনি একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিলেন।
আজতক বাংলার তরফ থেকে তাঁকে যোগাযোগ করা হলে দেবপ্রসাদ বলেন, 'গোটা রাজ্যে মাত্র ৯টা সিনেমাহলে ৯টা শো। ভাবা যায়! যেখানে আরও বাংলা দুটি সিনেমা একই সঙ্গে মুক্তি পাচ্ছে, সেগুলির শো-টাইম এবং হলের তালিকা একবার দেখে নিন। বৈষম্যটা ভীষণ প্রকট। হিন্দি ছবি নিয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই। কিন্তু বাংলায় কথা বলা রাজ্যে আলাদা আলাদা ছবির জন্য আলাদা ট্রিটমেন্ট এটা দেখে মন খারাপ হয়ে যায়। একটা বিষয় ভেবে দেখুন, আইনক্স আমাদের মাল্টিপ্লেক্স পার্টনার। তারাও গোটা রাজ্যে মাত্র একটি স্ক্রিনে একটি শো রেখেছেন। তাও দুপুরে। এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে!'
গত কাল অভিনেতা ফেসবুকে একটি লম্বা পোস্ট করে এ বিষয়ে সকলকে সচেতন করেন। তিনি জানান, এই পোস্টটি সিনেমার সকলেই করেছেন। ভাষাও সকলের একই। পোস্টে লেখা রয়েছে, 'অ্যাডভান্স বুকিং শুরু হয়ে গেছে সবকটা সিনেমার। এখনও অবধি কলকাতায় ভটভটি পেয়েছে ৯টা হল, এবং ১ টা করে শো। ভটভটি শো-এর অভাবে ধুঁকছে। আপনারা যারা ভটভটি দেখার অপেক্ষা করছিলেন জানি না তারা কিভাবে ভটভটি দেখবেন, কোনও অজানা কারনে হল মালিকরা ভটভটির শো দিচ্ছেন না অথবা শেষ মূহুর্তে ১টা করে শো দিচ্ছেন। প্রমানিত বাংলা সিনেমা গুনগত মানের বিচারে, দর্শকদের চাহিদার ওপর নির্ভর করে কলকাতার হলে শো পায় না। কাল আরও বেশি করে বোঝা যাবে কিসের ওপর কলকাতার হলে শো পাওয়া নির্ধারন হয়!!! ক্ষমতার জোরে যারা বাংলা সিনেমাকে বারবার হারিয়ে দেয় তারা এবার পাছার কাপড় সামলাক।'
এ বিষয়ে দেবপ্রসাদ বলেন, 'এটা অত্যন্ত দুঃখের যে এখানে প্রকৃত প্রতিভার কদর হয় না। স্নেহ বিক্রি হয়, প্রতিভা নয়। তাঁবেদারি করেই আজ বাংলা সিনেমা এই জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে। ভবিষ্যতে কী হবে সত্যিই জানি না। আরও একটা বিষয়ে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। গত কয়েক দিন ধরে ভটভটির কোনও টিজার, ট্রেলার, গান ইত্যাদি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে তা ১২ ঘণ্টার জন্য ব্লক করে দেওয়া হচ্ছে। কোথাও আওয়াজ মিউট করে দেওযা হচ্ছে। এক সঙ্গে বহু মানুষ স্প্যাম রিপোর্ট না করলে এমনটা হওয়ার কথা নয়। এই নোংরামোর কোনও প্রয়োজন ছিল?'