সাধারণত বামেদের প্রচার হয় জৌলুসহীন। চিত্র তারকাদের ভিড় তাদের থাকেন না। তবে এমন নয় কোনও অভিনেতা কখনও তাদের প্রার্থী হন না। ঘটনা হল, সিপিআইএম হোক বা অন্য বাম দল, তাদের ভোট প্রচার ঝকমকে হয় না।
বলা ভাল, সেখানে লোকসংস্কৃতির প্রভাব অনেক বেশি থাকে। রণপা থেকে ছৌনাচ, পথনাটকের মাধ্যমে নিজেদের বার্তা তুলে ধরে বামেরা। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে পথে বদল এসেছে। আগের সব রয়েছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন কিছু। যদিও তা মানতে নারাজ বাম নেতারা।
ভোট ঘোষণা হয়ে গিয়েছে অনেক দিন হল। দিন কয়েকের মধ্যেই প্রথম দফার ভোট। শাসক থেকে বিরোধী- সব পক্ষই জোর প্রচার চালাচ্ছে। তা সে কর্মিসভা হোক বা পদযাত্রা, জনসভা। সকাল থেকে রাত প্রার্থী থেকে দলের কর্মী ছুটে চলছেন। চেষ্টা করছেন আরও বেশি করে মানুষের মধ্যে পৌঁছে যাওয়ার।
সিপিআইএম বা বামেরাও তাই করছে। তবে তাদের প্রচারের ধরনে কিছু বদল লক্ষ্য করা গিয়েছে। যা সাধারণত আগে দেখা যেত না। তবে এখন দিব্যে দেখা যাচ্ছে।
২০০৯ সালে লোকসভা ভোটে কলকাতা উত্তর কেন্দ্রের সিপিআইএম প্রার্থী ছিলেন মহম্মদ সেলিম। তাঁর সমর্থনে ওই এলাকায় বেশ কিছু পোস্টার পড়েছিল। তাতে তাঁর ছবি ছিল এবং লেখা ছিল 'কলকাতার উত্তর মহম্মদ সেলিম'। এ নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। পরে সেগুলি খুলে ফেলা হয়।
এক দশকের বেশি সময় পর দেখা যাচ্ছে এখন সেই প্রবণতা ফিরে এসেছে। এবং কোনও বিরোধিতা হচ্ছে না। অর্থাৎ দল বা ফ্রন্ট সেগুলো মেনে নিয়েছে।
প্রচারপত্রে প্রার্থীর ছবি
বিভিন্ন প্রচারপত্র, ফ্লেক্সে বাম প্রার্থীর ছবি দেখা যাচ্ছে। আগে সাধারণত সেগুলো দেখা যেত না। তখন প্রাধান্য পেত দলের নির্বাচনী প্রতীক। তবে সেই ধারার পরিবর্তন হয়েছে। এখন বাম প্রার্থীরা অনায়াসে নিজেদের ছবি ব্যবহার করছেন।
গলায় উত্তরীয়
অনেক প্রার্থীর গলায় উত্তরীয় দেখা যাচ্ছে। সেগুলি লাল রঙের বা সেগুলিতে দলের প্রতীক রয়েছে। বাম নেতা-প্রার্থীর গলায় উত্তরীয় আগে দেখা যেত, এমন অনেকেই মনে করতে পারছেন না।
মালা
সকাল থেকে বিকেল প্রচারে রয়েছেন তাঁরা। ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে এ পাড়া থেকে ও পাড়া। বিরাম নেই। দেখা যাচ্ছে প্রার্থীদের গলায় ঝুলছে ফুলের মালা। প্রচারে বেরিয়ে সমর্থকেরা তাঁদের মালা পরিয়ে দিচ্ছেন। আগে এমনটা বিশেষ হত না।
যদিও বিষয়টি এমন ভাবে দেখছেন না সিপিআইএম নেতা, প্রাক্তন সাংসদ শমীক লাহিড়ি। তাঁর মতে, এগুলো নতুন কিছু নয়। নতুন হল সোশাল মিডিয়ায় প্রচার। এটাই হচ্ছে একমাত্র নতুন। প্রার্থী পরিচিতি, ফ্লেক্সে ছবি ব্যবহার হয়। পোস্টারে ব্যবহার করা হত না। কারণ খরচ বেশি। কেউ করতেন, কেউ করতেন না। বাসন্তীতে এত চাঁদা উঠবে? যেখানে যেমন চাঁদা ওঠে, সেই হিসেবে ব্যবস্থা।