যাদবপুরে শ্রমজীবী ট্রাস্ট তৈরি করা হবে। রবিবার এমনই জানালেন এই কর্মসূচির সঙ্গে যুক্তরা। স্থানীয় প্রবীণ মানুষদের চিকিৎসায় কাজ করবে সেই ট্রাস্ট। রবিবার শ্রমজীবী ক্যান্টিনের দু'বছর পূর্তি হয়। এই উপলক্ষে একগুচ্ছ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। আগামী দিনের পরিকল্পনার কথাও ঘোষণা করা হয়।
কথায়-গানে-আলোচনায়
শ্রমজীবী ক্যান্টিনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে নিরঞ্জন সদনের সামনে থেকে শুরু হয় মিছিল। শেষ হয় শ্রমজীবী ক্যান্টিনের সামনে। তারপর সেখানে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কথায়-গানে-আলোচনায় ক্যান্টিনের বর্ষপূর্তি পালন করা হয়।
২০২০ সালে পথ চলা শুরু
কঠিন সময়ের মধ্যেই শুরু হয়েছিল শ্রমজীবী ক্যান্টিন। সেটা ২০২০ সালের ঘটনা। করোনা সংক্রমণ রাজ্য এবং দেশের ধীরে ধীরে জাঁকিয়ে বসেছে। দেশে লকডাউন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। মানুষের রুটি-রুজিতে ধাক্কা পড়েছে। খেটেখাওয়া মানুষের উপার্জন বন্ধ। সে সময় তাদের খাবার তুলে দেওয়ার জন্য সিপিআইএমের ছাত্র-যুবদের উদ্যোগে কলকাতা এবং রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় তৈরি হয় এরকম ক্যান্টিন। যেখানে নামমাত্র খরচে পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা শুরু হয়। পরে অনেক জায়গায় বাজারও তৈরি করা হয়।
আরও পড়ুন: কৃষক আন্দোলনের ধাত্রীভূমি, রেখায়-লেখায় ধরা বাঙালি শিল্পীর পেনসিলে
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী, সুদীপ সেনগুপ্ত অভিনেতা দেবদূত ঘোষ, উষসী চক্রবর্তী-সহ বিশিষ্টরা।
আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীর ঘণ্টাতলা নতুন করে বানিয়ে দিল ASI, খুশি আশ্রমিকরা
শ্রমজীবী ক্যান্টিনের পাশাপাশি শুরু হয়েছিল শ্রমজীবী বাজার। যেখানে সস্তায় সবজি-মাছ বিক্রির ব্যবস্থা ছিল। এই সব কাজই করেন বামপন্থী ছাত্রযুবরা। তাঁরাই জিনিসপত্র কেনাকাটা করেন। বিক্রি এবং রান্না সঙ্গেও যুক্ত। ফলে অনেক কম দামে জিনিসপত্র পান। এবং তা বিক্রি করতে পারেন। সেখান থেকে কোনও লাভ করেন না।
এবার হবে ট্রাস্ট
সেই ক্যান্টিন এবার ট্রাস্টে পরিণত হতে চলেছে। যাদবপুর শ্রমজীবী ক্যান্টিনের সঙ্গে যুক্ত সুদীপ সেনগুপ্ত বলেন, "স্থায়ী মডেল করার দিকে এগোচ্ছি। স্থায়ী রূপ দেব। তৈরি করা হবে ট্রাস্ট। সেই ট্রাস্টের মাধ্যমে প্রবীণদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া যায়। ট্রাস্ট তৈরি না হলে কাজে সুবিধা হবে। মে জুন মাসে সেই কাজ নামব।"
প্রবীণদের সাহায্য করতে
তিনি আরও বলেন, "এই এলাকায় প্রচুর প্রবীণ নাগরিক থাকেন। তাঁদের কাছে কোনও সাহায্য পৌঁছয় না। তাঁদের কাছে কী করে পৌঁছ যায়, দেখা হচ্ছে। একদিকে যেমন তাঁদের দাবিদাওয়ার জন্য আন্দোলন চলবে, অন্যদিকে আমাদের সামর্থ্য়ের মধ্য়ে কী করা যায়, তা-ও দেখব। একসঙ্গে রান্না করলে খরচ কম হবে। সবাই খেতে পাবেন। প্রথম থেকে আমাদের লক্ষ্য ছিল কম দামে পুষ্টিকর খাবার তুলে দেওয়া।" অধ্য়াপক পার্থপ্রতিম বিশ্বাস ট্রাস্টের সভাপতি হতে চলেছেন বলে জানান তিনি।
যাদপুর শ্রমজীবী ক্যান্টিনে রোজ ৬৫০-৭০০ মানুষ খাবার গ্রহণ করেন। ৬৫-৭০ জন মানুষকে বিনা খরচে খাবার দেওয়া হয়। এদিন ছিল চিকেন বিরিয়ানি। দাম সেই ২০ টাকাই। দু'বছর পূর্তি উপলক্ষে অনেকে সাহায্য করেছেন। তাই বিরিয়ানি রান্নার পরিকল্পনা করা হয়। এখানকার মেনু আগে থেকে জানানো হয় না। তবে রোজ মাছ, ডিম বা মাংস- কিছু একটা থাকে। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, দুপুরে খাবার পাবেন, এটা বলা যেতে পারে। রোজ আমিষ পদ থাকে। বিধাননগর, নিউ আলিপুর, হাওড়ায় পি এম বস্তি কমিউনিটি ক্যান্টিন চলছে।