North Bengal Durga Puja: পুজোয় উত্তরবঙ্গ ভ্রমণের পরিকল্পনা থাকলে এক ঢিলে দুই পাখি মারার সুযোগ থাকছে। সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে রাতে ঘুরতেই পারেন কাছের পুজো মণ্ডপগুলি। ঐতিহ্যে আর গ্ল্যামারে কোনওটাই তেমন ফেলনা নয়। শিলিগুড়িতে থাকলে মোটামুটি তৃতীয়া-চতুর্থী থেকে মণ্ডপ খুলে দেওয়া হয়। তবে অন্য জায়গাগুলি ষষ্ঠী থেকে দেখার সুযোগ পাবেন।
শিলিগুড়ি
তরাই-ডুয়ার্স-পাহাড়ের যেখানেই যান না কেন, শিলিগুড়ির উপর দিয়েই যেতে হবে। তাই যদি প্রকৃতি দর্শনে এসে শিলিগুড়িতে এক-আধদিন বাড়তি কাটিয়ে যান, তাহলে এখানকার পুজো দেখতে পাবেন।
শিলিগুড়িতে একাধিক বড় বাজেটের পুজো রয়েছে। এর মধ্যে এনজেপি স্টেশনের কাছেই সেন্ট্রাল কলোনি সার্বজনীন উত্তরবঙ্গের অন্য়তম সেরা পুজো। এছাড়া চম্পাসারির জাতীয় শক্তি সংঘ পাঠাগার,দেশবন্ধুপাড়ার পাশাপাশি দাদাভাই স্পোর্টিং ক্লাব, সুব্রত সংঘ এবং ওয়াইএমএ, হাকিমপাড়ার উপকার অ্যথলেটিক, আশ্রমপাড়ার অগ্রগামী ক্লাব, জাতীয় তরুণ সংঘ, ডাঙ্গিপাড়ার স্বস্তিকা যুবক সংঘ, রথখোলা স্পোর্টিং, রবীন্দ্রনগরের রবীন্দ্র সংঘ, সুভাষপল্লির সঙ্ঘশ্রী, ভারতনগরের সূর্যনগর ফ্রেন্ডস ইউনিয়ন, প্রধাননগরের নবাঙ্কুর ক্লাব,মাটিগাড়ার মায়াদেবী ক্লাব বিখ্যাত। এছাড়াও আরও কিছু পুজো আছে, সেগুলোও দেখার মতো।
জলপাইগুড়ি
জলপাইগুড়ির লাটাগুড়ি, গরুমারা, চালসা, ধুপঝোরা, গজলডোবা, মেটেলির মতো পপুলার টুরিস্ট ডেস্টিনেশনে ঘুরতে গেলে পাশাপাশি বেশ কয়েকটি দুর্দান্ত দুর্গাপুজো দেখে নিতে পারেন।
মালবাজারের সৎকার সমিতি কিংবা ওদলাবাড়ির ডিপোপাড়ার দুর্গাপুজো, কিংবা রথখোলার পুজো চোখ টানবে। পাশাপাশি চালসা, মেটেলি, ময়নাগুড়ির পুজো রয়েছে। জলপাইগুড়ির তরুণদল, রাজবাড়ির পুজো, রায়কতপাড়া সার্বজনীন, দিশারী ক্লাব, সেনপাড়া, জাগ্রত সংঘ, পাণ্ডাপাড়া, জয়ন্তীপাড়া, বাবুপাড়া, সংঘশ্রী সহ একাধিক পুজো রয়েছে যেগুলি আপনারা ঘুরে আসতে পারেন।
আলিপুরদুয়ার
ডুয়ার্সের সমস্ত জঙ্গলের সেরা ঠিকানা আলিপুরদুয়ার। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প, জলদাপাড়া, জয়ন্তীর চেয়ে সুন্দর ও গভীর অরন্য আর নেই। তাই জঙ্গলের রিয়েল ফিল মানেই আলিপুরদুয়ার।
এখানে ঘুরতে এসে মাঝে সময় পেলে আলিপুরদুয়ার শহরে যদি একরাত্রি ডেরা বাঁধতে পারেন, তাহলেই সমস্ত পুজো দেখে নেওয়া সম্ভব শুধু অটো বা টোটো ভাড়া করলেই। ছোট্ট শহর, কিন্তু পুজোর জমক রয়েছে ভালই। বাবুপাড়া, দত্তপাড়া, নেতাজি রোড, দুর্গাবাড়ি, লোহারপুল, শান্তিনগরের পুজোগুলি যে কোনও শহরের যে কোনও বিগ বাজেটের পুজোর সঙ্গে পাল্লা দেবে।
আরও পড়ুনঃ Tomato Eating Alert: গায়ে দুর্গন্ধ-কিডনিতে পাথর, বেশি টমেটো খেলে যা যা হতে পারে...
কোচবিহার
কোচবিহারের সবচেয়ে বড় টুরিস্ট আকর্ষণ কোচবিহার রাজবাড়ি। এখানে সারা বছর পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে।তারপরই সবচেয়ে ভিড় হয় রসিক বিলে। এখানকার পাখিরালয়ে নানা রকম পাখি ভিড় করে। যা দেখতে ভিড় জমে সারা বছরই।
পুজোর মধ্যে যদি কোচবিহার বেড়ানোর পরিকল্পনা থাকে, তাহলে পুজো দেখার সুযোগ ছাড়বেন কেন? শহরের একাধিক প্রাচীন ও ঐতিহ্যশালী পুজো রয়েছে। এর মধ্যে রাজবাড়ির বড়দেবীর পুজো তো রাজ্যের অন্যতম প্রাচীন। কোচবিহার ক্লাব, মৈত্রী সংঘ, খাগড়াবাড়ি, কোচবিহার প্যালেস, নাট্য সংঘ, ভেনাস স্কোয়ার, বড় দেবীবাড়ি, নিউ টাউন, শান্তিকুটির, রাজমাতা ক্লাব, ভারত ক্লাব, পুরাতন পোস্ট অফিস সহ একাধিক বিগ বাজেটের পুজো পয়সা উশুল করে দেবে।
রায়গঞ্জ
রায়গঞ্জের কুলিক পাখিরালয় পর্যটক আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, রায়গঞ্জ বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্যে ১৬৪ প্রজাতির পাখির আনাগোনা ঘটে। প্রতি বছর ৭০ থেকে ৮০ হাজার পাখি এই স্থানে দেখতে পাওয়া যায়। চিল, পেঁচার পাশাপাশি মাছরাঙা, ফ্লাইক্যাচার, ড্রংগো, এগ্রেট, স্টর্ক, এশিয়ান ওপেনবিল, কাঠঠোকরা, ফিঙে এই অভয়ারণ্যের অন্যতম আকর্ষণ। পাখি ও পরিবেশপ্রেমী পর্যটকরী যদি পুজোর মধ্যে কুলিকে ঘুরতে যান, তাহলে পাশাপাশি তাঁরা রায়গঞ্জের একাধিক বিগ বাজেটের পুজো দেখতে পাবেন।
শিলিগুড়ি মোড়ের সুদর্শনপুর সর্বজনীন দুর্গোৎসব, শিলিগুড়ি মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে অমর সুব্রত ক্লাব, শাস্ত্রী সঙ্ঘের মণ্ডপ, কাছেই দেহশ্রী ব্যায়ামাগারের পুজো, বিধাননগর বারোয়ারি দুর্গোৎসব কমিটি, প্রতিবাদ ক্লাব, বিদ্রোহী ক্লাবের পুজো, বিপ্লবী ক্লাবের পুজো। এছাড়াও আরও কয়েকটি বড় পুজো রয়েছে শহরে।
আরও পড়ুনঃ Skin Glow At Home: এই ফেসপ্যাক রাতে মুখে লাগান, সকালে গ্ল্যামার ফেটে পড়বে
বালুরঘাট
বালুরঘাটে রঘুনাথপুর ফরেস্ট, দোগাছি অরন্য়ের জনপ্রিয়তা ডুয়ার্সের মতো না হলেও, প্রতি বছর প্রচুর পর্যটক ঘুরতে যান সেখানে। বয়েরহাটা, বানগড় পর্যটক আকর্ষণ করে। তাই পুজোর মধ্যে যদি ঘুরতে যেতে চান তাহলে সুযোগ থাকছে এখানকার বিগ বাজেটের পুজোগুলি দেখে আসার।
সৃজনী, বালুরঘাট অমৃত সংঘ, অভিযাত্রী ক্লাব, ত্রিধারা, কচিকলা ক্লাব, নিউটাউন, মহামায়া প্রগতি সংঘের পুজো রাজ্যের যেকোনও এলাকার পুজোর সঙ্গে পাল্লা দেবে।
পাহাড়
দার্জিলিংয়ে ঘুরতে গেলে অবশ্যই মিস করবেন না নৃপেন্দ্রনারায়ণ বেঙ্গলি হিন্দু হল কিংবা কার্শিয়াংয়ের রাজরাজেশ্বরী হলের পুজোর। এগুলি সবগুলিই ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসছে।