Durgapuja 2023 Devi Choudhurany Temple: শহর থেকে অনেকটা দূরে। জেলা জলপাইগুড়ি হলেও শিলিগুড়ি থেকেও সম দূরত্ব। জেলার শিকারপুর চা বাগান ঘেরা ছোট্ট গ্রামে ঐতিহাসিক দেবী চৌধুরানী মন্দির। ইতিহাস এবং কিংবদন্তি এখানে মিলেমিশে একাকার। তার উপর বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস আনন্দমঠ-এ যে ভবানী পাঠক এবং দেবী চৌধুরানীর যে উল্লেখ রয়েছে, স্থানীয় মানুষরা মনে করেন এ দেবী চৌধুরানী, সেই দেবী চৌধুরানীই। এমনকী উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাদুঘরে একটি বজরা সংরক্ষণ করা রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এটি দেবী চৌধুরানীর বজরা। যদিও সেটা নিয়ে প্রামাণ্য পৌঁছতে পারেননি এখনও পর্যন্ত গবেষকরা, তবু বিশ্বাসেই তো মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর।
গত বছর মন্দির পুড়ে গিয়েছিল। তারপর নতুন মন্দির সংস্কারের পর ঝকঝকে হয়ে উঠেছিল। রাজগঞ্জ ব্লকে শিকারপুর চা বাগানে দেবী চৌধুরানী মন্দির সৌন্দর্যায়নের উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার কাজের শিলান্যাস করে একথা জানান রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়।
২০১৮ সালে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে এই মন্দিরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর তৎকালীন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব মন্দির পুনর্নিমাণের উদ্যোগ নেন। কাজের তদারকির ভার দেওয়া হয় উদ্যান ও কানন বিভাগকে। সেই বিভাগ থেকে জলপাইগুড়ির এক শিল্পী বিশ্বজিৎ ঘোষ ২০১৯ সালে কাজ শুরু করেন। রাজ্য সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় মন্দির নির্মাণের পর গত বছরের ৩০ মার্চ নবনির্মিত এই মন্দিরের উদ্বোধন হয়। তবে মন্দিরের সীমানা প্রাচীর ছিল না, ছিল না পর্যটকদের জন্য বসার ব্যবস্থাও। এসব বিষয়কে মাথায় রেখে সৌন্দর্যায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
রাজগঞ্জ বিধায়ক তথা গজলডোবা উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায় জানান, গজলডোবা উন্নয়ন পর্ষদের ৯১ লক্ষ ৭ হাজার ৪৩৯ টাকায় দেবী চৌধুরানী মন্দির সৌন্দর্যায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে বেলাকোবার রাস্তা থেকে মন্দিরে প্রবেশের পথে দুটি সিংহ দুয়ার, মন্দিরের সীমানা প্রাচীর, দুর্গা মণ্ডপ, পর্যটকদের বসার জায়গা, সৌর আলোর ব্যবস্থা করা হবে। রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন মন্দির কমিটি সম্পাদক ফণীন্দ্রনাথ দাস।
দেবী চৌধুরানী মন্দির
গেট দিয়ে ঢুকতেই চোখে পড়বে পাশাপাশি দুটি মন্দির। তার মধ্যে একটি মা কালীর মন্দির। মন্দিরের পাশে যে মন্দিরটি রয়েছে, তাতে একটি পুরুষ ও নারী মূর্তি রয়েছে। পাশাপাশি বাঘ, শিয়াল ও আরও কিছু বিগ্রহ নজরে পড়বে। অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন এটি শিব-পার্বতীর মন্দির। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাস ও দাবি, বিগ্রহটি ভবানী পাঠক এবং দেবী চৌধুরানীর। মূলত দেবী চৌধুরানীর মন্দিরের খ্যাতিতেই দেশ বিদেশের পর্যটকরা এখানে আসেন। বিশেষ করে বাঙালি পর্যটক, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের লোকেদের কাছে এটি বাড়তি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।