আজ বাংলাদেশে ফিরলেন খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান। ১৭ বছর পর তাঁর দেশে ফেরা। তিনি ২০০৮ সাল থেকেই লন্ডনে ছিলেন। তারপর আজ ফিরলেন দেশে।
আর তাঁর এই দেশে ফেরা ঘিরে বাংলাদেশে উত্তেজনা তুঙ্গে। বিশেষত, বিএনপি নেতা এবং সমর্থকরা এই নিয়ে উল্লসিত। সেই মতো পার্টির পক্ষ থেকে বিশেষ আয়োজন করা হয়েছে।
তবে এমন দিনেও অনেকের মনে প্রশ্ন রয়েছে যে তারেক রহমান আদতে কে? কী তাঁর পরিচয়? তাঁর রাজনৈতিক পরিচিতি কী? আর সেই সব প্রশ্নের উত্তর রইল নিবন্ধটিতে।
তারেক রহমান বাংলাদেশের একজন বিখ্যাত রাজনৈতিক নেতা। তিনি বর্তমানে বিএনপি-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তাই তাঁকে ঘিরে বাংলাদেশে সবসময়ই আগ্রহ রয়েছে।
তারেক রহমান জন্মগ্রহণ করেন বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা ও বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার পরিবারে।
তাঁর জন্ম হয় ২০ নভেম্বর ১৯৬৫ সালে। আর অল্প বয়স থেকেই তাঁর সঙ্গে রাজনীতির পরিচয় হয়। কারণ, তিনি বেড়ে উঠেছেন একবারে রাজনৈতিক পরিবারেই।
তারেক ঢাকার বিএএফ শাহিন কলেজ পড়েছেন। এরপর সেন্ট জোসেফ কলেজ এবং ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজেও পড়াশোনা করেন বলে জানা যায়।
তিনি ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন। আর আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক করেন পাশ। এরপর ১৯৮৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। কিন্তু সেকেন্ড ইয়ারে পড়ার সময় তিনি পড়াশোনা থেকে দূরে চলে যান। তারপর বস্ত্রশিল্প ও নৌ-যোগাযোগ ক্ষেত্রে ব্যবসা শুরু করেন।
তারেক খুব ছোট বয়স থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তিনি বিএনপি-এর বগুড়া কমিটির সদস্য হিসেবে পলিটিক্যাল কেরিয়ার শুরু করেন। এরপর ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মা খালেদা জিয়ার সঙ্গে তিনি সারা দেশের নির্বাচনে অংশ নেন।
২০০২ সালে তারেক রহমান বিএনপি-এর স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পান। এই সময় থেকেই দলে তাঁর প্রভাব বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।
তবে ২০০৭ সালে হয় যাত্রাভঙ্গ। সেই বছর দুর্নীতি মামলার আসামী হিসেবে তারেককে মইনুল রোডের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তারেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ঘুসগ্রহণ, মানি লন্ডারিং, অবৈধ সম্পদ অর্জন, গ্রেনেড হামলাসহ একাধিক মামলা দায়ের হয়।
যদিও ২০০৮ সালে তারেক জামিন পান। তারপর তারেক সেই বছরেরই সেপ্টেম্বর মাসে উড়ে যান লন্ডনের উদ্দেশে। চিকিৎসা করানোর জন্যই তিনি সেখানে সপরিবারে যান।
তিনি সেখানেই রয়ে গিয়েছেন। মূলত স্বেচ্ছা নির্বাসনই বলা চলে একে। আসলে এই সময় বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকার চলছিল। তাই তিনি দেশে ফিরে সমস্যায় জড়াতে চাননি।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে শেখ হাসিনা গদিচ্যুত হওয়ার পরই তারেকের দেশে আসার পথ সুগম হয়। অন্তবর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূসও তাঁকে দেশে ফেরাতে তৎপর হন। এ সবের মাঝেই আজ ফিরলেন তারেক। অনেকেই মনে করছেন, যদি খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকেন, তাহলে বিএনপি-এর প্রধান মুখ হলেন তারেকই। সেই কারণে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসতেই পারেন।