বলা হয়, তিনিই 'ইন্ডাস্ট্রি'। গত প্রায় চার দশক ধরে দর্শকদের মনের একেবারে কাছেই রয়েছেন তিনি। কথা হচ্ছে অভিনেতা, প্রযোজক তথা পরিচালক প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে (Prosenjit Chatterjee) নিয়ে। সামনেই মুক্তি পাবে তাঁর বহু প্রতীক্ষিত ছবি 'কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন' (Kakababur Protyabortan)। তার আগে আজতক বাংলার সঙ্গে আড্ডায় সকলের প্রিয় 'বুম্বা দা'।
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় মনে করেন বিশ্বব্যাপী চলচ্চিত্র জগতে তিনটি বাংলা নাম আসে সবার আগে- সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক এবং মৃণাল সেন। তাঁর কথায়, "গোটা পৃথিবীর মানুষ ভারতীয় সিনেমা মানে কিন্তু তিনটি নাম চেনেন সবার আগে- ঘটক, রায় এবং সেন। আর সেই ভাষার সিনেমাকে কোনও ভাবেই মরতে দেওয়া যাবে না।" সেই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তুললেন, "আমরা বাঙালিরা নিজেদের জিনিস নিয়ে কতটা ভাবি?"
অভিনেতা যোগ করলেন ,"আমরা আমাদের নিয়েই গর্বিত নই। আমরা বলি, আগে এই হিন্দি ছবিটা দেখব, তারপর ইংরাজিটা দেখব এবং তারপর বাংলা ছবির কথা আসে। এটা কেন? গুজরাট, পঞ্জাব সব জায়গায় লোক হৈহৈ করে নিজেদের ছবি দেখেন। আমরা বোধ হয় বলতে ভালোবাসি, আমার ছেলেটা না, ভাল বাংলা বলতে পারে না। তবে বাংলা ছবির জন্য আমি চল্লিশ বছর ধরে লড়াই করেছি। এখন আর এটা নিয়ে কথা বলব না...। আমি শুধু সবাইকে হাত জোড় করে বলব বাংলা ভাষার সিনেমা, গান, নাটক, আবৃত্তি এগুলোকে বাঁচিয়ে রাখুন।"
বাংলা চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি বলতে পশ্চিমবঙ্গের বাইরেও অনেকে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের নামই বোঝে। এটা আনন্দের না কিছুটা চিন্তার? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন, "লড়াই থাকবে, আমি কারও নাম নিচ্ছি না। তবে যে যার মতো করে কিন্তু ভাল কাজ করছেন এখানে। শুধু তাই না, বিভিন্ন রকমের কাজ হচ্ছে। এখন আমরা 'পুষ্পা' নিয়ে কথা বলছি, একমাস আগেও বলতাম না। কাল যদি আমরা এরকম কিছু একটা করে ফেলি, তখন আমরাই আবার অন্য কথা বলব।"
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানালেন, এখন তাঁর মূল লক্ষ্য ছবি পরিচালনা করা। তিনি বললেন, "আমার এখন খিদে ছবি পরিচালনা করা। ২০২২-এর শেষে হিন্দি ছবি পরিচালনা করছি মূলত বাংলা ভিত্তিক। আমার চিত্রনাট্য একেবারে তৈরি এবং এটা আমার নতুন শুরু হবে। চলচ্চিত্রের একজন শিক্ষার্থী হিসাবে গত চল্লিশ বছর ধরে আমি যা শিখেছি, এবার আমার মানুষদের নিয়ে ভারতবর্ষের পটভূমিকায় কিছু কাজ করা দরকার। ভাষা হিন্দি হলেও, মূলত এখনকার কলাকুশলীদের নিয়ে কাজটা করব। আমি বিশ্বাস করি আমাদের এখানে ম্যাজিক কাজ করে। তবে আমি হয়তো ক্যামেরার পিছনেই থাকব এক্ষেত্রে। কারণ এটা অনেক বড় দায়িত্ব।"
প্রসঙ্গত, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের শেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের 'গুমনামী'। এছাড়াও মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের 'কাবেরী অন্তর্ধান'। কাজ চলছে 'শেষ পাতা', 'আয় খুকু আয়' 'কাছের মানুষ' -এর মতো ছবিগুলির। তবে এই মুহূর্তে দর্শকেরা অপেক্ষা করছেন পর্দায় ফের কাকাবাবু ও সন্তুর অ্যাডভেঞ্চার দেখার এবং সেই অপেক্ষার অবসান ঘটবে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি।