দেশের একনম্বর মিডিয়া হাউস ইন্ডিয়া টুডে- আজতককে কে ব্যক্তিগত মতামত জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতাজি থেকে কৃষি বিল সব নিয়েই সাংবাদিক রাজদীপ সরদেশাইয়ের সঙ্গে একান্ত আলোচনায় দেখা গেল তৃণমূলনেত্রীকে।
সাধারণতন্ত্র দিবসে রাজধানীতে কৃষক বিক্ষোভের জন্য মোদী সরকারের উদাসিনতাকেই দায়ি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইন্ডিয়া টুডে কে দেওয়া সাক্ষাৎ কারে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে তুললেন ভয়ঙ্কর অভিযোগ। মমতা জানান যে এই কৃষি আইন ইচ্ছাকৃতভাবেই কোভিডের সময় আনা হয়েছে। কিন্তু এত বিরোধ সত্ত্বেও সরকার প্রত্যাহার করছে না, নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তৃণমূলনেত্রী।
মমতা বলেন, আমার পাঞ্জাবি ভাই-বোনেরা অত্যন্ত একতার সঙ্গে এই আন্দোলন জারি রেখেছে। আমরা সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করছি তাঁদের। মিডিয়াকে কেন্দ্রীয় সরকার একেবারে কিনে রেখেছে। এই অশান্ত পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের তিনটি বিল প্রত্যাহার করা উচিত।
প্রজাতন্ত্র দিবসেই ট্র্যাক্টর মিছিল চলাকালীন এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।দু'মাস ব্যাপী চলা এই আন্দোলনের সময় মৃত্যু হয়েছে আরও অনেক কৃষকের। সেই সব প্রসঙ্গেও সরব হয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, "সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা মানে আমার অধিকার নেই মানুষ মারার। রাজীব গান্ধীও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ছিলেন একসময়। কেন্দ্র আমাদের রাজ্যে খাদ্য ভর্তুকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। কৃষকদের কোনও নেতা আলাদা করে নেই। সকলে এক জোটে এই আন্দোলন করছেন।"
এরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে আক্রমণ করেন 'মমতা দিদি'। এদিন শাহকে 'ভাইয়া' বলেও সম্বোধন করেন তিনি। তৃণমূল সুপ্রিমো সাফ জানান, "অমিত শাহের ৫০ লক্ষ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে। কৃষক আন্দোলনকে অসম্মান করতে সেই সব গ্রুপ থেকেই হিংসা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।"
দেশজুড়ে যে আইন নিয়ে অশান্তির সৃষ্টি হচ্ছে তা অবিলম্বে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে প্রত্যাহার করুন মোদী, এমন দাবি জানালেন মমতা। ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "প্রধানমন্ত্রী তো সমস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের ফোন করতে পারেন। আমি হিংসাকে কোনওভাবেই সমর্থন করি না। পতাকা যিনি উড়িয়েছেন তাঁর সঙ্গে অমিত শাহের ছবি রয়েছে। অর্থাৎ বিজেপির সঙ্গে ওই লোকটির ভাল যোগাযোগ।"
শাহ ছাড়াও মোদীকেও একহাত নেন তিনি। নেতাজি জন্মজয়ন্তীতে 'ভিক্টোরিয়া কাণ্ড' নিয়ে এমনিতেই অসন্তুষ্ট ছিলেন মমতা। এদিন তিনি বলেন, "প্রধানমন্ত্রী কেবল বিজেপির নেতা নন,উনি দেশেরও নেতা। চাইলে অনেক কিছুই করতে পারেন। কিন্তু যেটা করছে তা হল কেন্দ্রে থেকে সব রাজ্যের ক্ষমতা দখল করছে। দেশের যে ফেডারেল কাঠামো সেটিকেই বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলছেন।"
নেতাজি জয়ন্তীতে বিশৃঙ্খলা নিয়েও মুখ খুলেছেন মমতা। রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা না করেই কেন্দ্র এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। পরাক্রম দিবসের ধারণা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সাফ কথা ওটা বিজেপির দলীয় অনুষ্ঠান নয়, কেন্দ্রের অনুষ্ঠান, ওখানে স্লোগান দেওয়া মানায় না।
এরপরেই তার মুখে শোনা যায়, এরপরেও আমি অনু্ঠান ছেড়ে যাইনি, প্রধানমন্ত্রীকেও কিছু বলিনি।
তিনি নিজেও হিন্দু, হিন্দুত্ব নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বিতর্কে অংশও নিতে পারেন। সেই চ্যালেঞ্জও এদিন দিলেন মমতা।