মঙ্গলবার রাজ্যের ৩ জেলার ৩১টি কেন্দ্রে চলল তৃতীয় দফার ভোটগ্রহন। আর এই দিনও ফের পূর্ব বর্ধমানের গলসি বোমা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল। রবিবারের পর মঙ্গলবারও মজুত বোমায় বিস্ফোরণ। এই নিয়ে তিনদিনে দু'বার এমন ঘটনার স্বাক্ষী থাকল গলসি।
মঙ্গলবার বেলা এগারোটার নাগাদ আচমকা বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে এলাকা। যতদূর জানা যাচ্ছে রাইপুর অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্র ও রাইপুর শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের কাছাকাছি ফাঁকা মাঠে রফিকুল শেখের নির্ণীয়মান বাড়ির গ্রাউন্ড লেবেলের ভরাট বালির মধ্যে মজুত ছিল বোমা। যাতে কোনো কারণে বিস্ফোরণ হয়।
বিস্ফোরণে ভেঙে পরে নির্মিয়মাণ বাড়ির ভিতের গাঁথুনি। অনুমান, একাধিক ঘিয়ের জারে রাখা ছিল বোমা ।পাশের মাঠে বিভিন্ন রঙের প্লাস্টিকের ঘিয়ের গলে যাওয়া টুকরো ও ফেটে যাওয়া বোমার অংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরে থাকতে দেখা যায়। । চারিদেকে ছিটকে পড়ে ইট। ঘটনার খবর পেয়ে গলসি পুলিশ এসে এলাকা ঘিরে রাখে। জানা গেছে, গলসির রাইপুর শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের পাশের মাঠেই একটি নির্ণীয়মান পরিত্যক্ত ঘরের মেঝের ভরাট বালির নিচে পোঁতা ছিল বোমাগুলি। কে বা করা সেই বোমা মজুত রেখেছিল তার তদন্ত করছে পুলিশ।
এদিনের ঘাটনকস্থল থেকে আনুমানিক এক কিমি দুরে রাইপুর লাগোয়া আটপাড়া গ্রামে ফটিক শেখের বাড়িতে পুকুর পাড়ে মজুত বোমায় বিস্ফোরণ হয় রবিবার রাতে। তাছাড়াও কয়েক মাস আগে আটপাড়া গ্রামে একটি অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রের শৌচালয়ে বোমা বিস্ফোরণ হয়। আজ আবারও রাইপুর গ্রামে রফিকুল শেখেরর বাড়িতে ভিতের ভরাট বালির নীচে রাখা বোমায় বিস্ফোরণ ঘটে।
রফিকুল শেখের মা শাকিলা শেখ জানান, তাঁরা খুব দরিদ্র। ছেলে ভীন রাজ্যে কাজ করে বহু কষ্টে বাড়ির কিছু অংশ নির্মান করেছে। টাকা পয়সার অভাবে সেই বাড়ি আর করতে পারেনি। মাঠের ধারে হওয়ায় সেখানে তাদের যাতায়াত ছিল না। সেখানে কেউ বোমা মজুত রেখেছিল । শেখ পরিবারের দাবি তারা কোন রাজনীতির সাথে যুক্ত নন। তারা এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না।
এই ঘটনায় গ্রামবাসীরা যথেষ্ট আতঙ্কে রয়েছেন । বিস্ফোরণস্থলের পাশেই বসবাসকারী মোনা খাতুন জানান, এত জোরে বিস্ফোরণ ঘটে যে তার ঘরে বালি এসে পড়ে। প্রতিদিন বাচ্চারা অঙ্গনওয়ারী শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে খেলা করতে যায় । কখনও কখনও ওই মাঠেও যায় খেলতে । ফলে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল ।
এদিকে বোমা বিস্ফোরণ নিয়ে রাজনৈতিক কোন্দল শুরু হয়েছে । বিজেপির বর্ধমান সদর জেলার সহ সভাপতি রমন শর্মা জানান, বারবার প্রশাসনকে জানানো হলেও প্রশাসন নির্বিকার তাই বারবার এরকম ঘটনা ঘটছে।। তাঁর অভিযোগ, ঘটনায় তৃণমূলের যোগ আছে বলেই পুলিশ তদন্তও করছে না ঠিক করে । তৃণমূল এখানে গুলি,বোমা, বারুদের সাহায্যে ভোট করতে চাইছে তাই বোমা মজুদ করেছিল।
অন্যদিকে তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমান জেলা মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস সঠিক পুলিশি তদন্তের দাবি করে জানান, ঘটনার সাথে বিজেপির যোগ রয়েছে । তারাই বোমা মজুদ করছে। তিনি বিজেপির গোষ্ঠী দ্বন্দ্বকেই দায়ি করেছেন। তার দাবি গলসি বিধানসভায় ইতিমধ্যেই বিজেপি প্রার্থী পরিবর্তন করেছে । সেই নিয়ে গণ্ডগোল সামনে এসেছে । এটা তাদেরই কোনো এক গোষ্ঠীর কাজ । আগামী ২২ এপ্রিল রাজ্যে ষষ্ঠ দফায় ভোট হতে চলেছে গলসিতে।