আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় পরকীয়া বলতে বোঝায় বিবাহিত কোনো ব্যক্তির স্বামী বা স্ত্রী ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তির সঙ্গে বিবাহোত্তর বা বিবাহবহির্ভূত প্রেম, ভালোবাসা এবং যৌন সম্পর্ক তৈরি করা। এই সম্পর্ক তৈরি করার ফলে সংসার জীবনে তৈরি হয় অশান্তি।
এ কারণে পরকীয়া সম্পর্কের ধারে-কাছেও ঘেঁষে না অনেকে। তার পরেও অনেকেই ঘটনাচক্রে জড়িয়ে পড়েন পরকীয়া সম্পর্কে।
পুরুষদের বিরুদ্ধে ঝুড়ি ঝুড়ি অভিযোগ। তারা নাকি পরকীয়া করে। বিয়ে করা সত্ত্বেও, স্ত্রী বর্তমান থাকা সত্ত্বেও অন্য একজনের সঙ্গে সম্পর্ক জড়িয়ে পড়ে। এই নিয়ে পুরুষদের দিকে ওঠা আঙুলের অভাব নেই। ব্যাপারটা যে একেবারে মিথ্যা তা নয়। কিন্তু জানেন কি, পুরুষের থেকে বেশি পরকীয়া উপভোগ করেন নারীরা?
এই কথা শুনে অবকা হচ্ছেন, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু একটি সমীক্ষায় সম্প্রতি এমন তথ্যই প্রকাশ পেয়েছে। একজন গবেষক কয়েকজনকে নিয়ে একটি গবেষণা করেছিলেন। তার টার্গেট ছিল পরকীয়া করে এমন মানুষ। তা সে নারীই হোক বা পুরুষ। সেখানে কিছু অবাক করা বিষয় উঠে আসে।
প্রায় এক হাজার মানুষের উপর গবেষণা চালানো হয়। এই গবেষণা থেকে যে তথ্য উঠে এসেছে তা ‘জার্নাল অফ সেক্সুয়ালিটি’-তে প্রকাশ পেয়েছে। গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে, এর পিছনে রয়েছে স্বামী বা স্ত্রীকে প্রতারণা করার আনন্দ। এ এক অদ্ভুত আনন্দ। তাই স্বামী বা স্ত্রীকে প্রতারণা করে অনেকেই পরকীয়ায় জড়ায়। যৌনতা এক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান বিযয়। সপ্তাহে অন্তত দু’বার পরকীয়ার পার্টনারের সঙ্গে এরা সেক্স করে।
তবে শুধু যৌনতা নয়। মানসিক সুখও একটা বড়সড় জায়গা দখল করে রেখেছে। তবে এটি বেশিরভাগ সময় নারীদের ক্ষেত্রেই দেখা যায়। অনেক সময় নারীরা বিয়ের পর সুখে থাকে না। সাংসারিক অশান্তিই তাদের সংসার বিমুখ করে দেয়। ফলে স্বামীকে ছেড়ে অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায় নারীরা। অনেকে জানে হয়তো, সে সম্পর্ক চিরস্থায়ী নয়। হয়তো তা অলীক সুখ। কিন্তু ক্ষণিকের শান্তি তখন তাদের কাছে মহার্ঘ্য হয়ে ওঠে।
গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে পরকীয়া সম্পর্কের ক্ষেত্রে নারীদেরই পাল্লা ভারী। কারণ সম্পর্কে জড়ানোর ক্ষেত্রে তারাই এগিয়ে আসে আগে, দায়িত্ব নেয় বেশি। কারণ গবেষণা বলছে, মেয়েদের মধ্যে আবেগ থাকে বেশি। সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করলে তা তারা মেনে নিতে পারে না। তাই পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে তারা। তবে ব্যতিক্রম এক্ষেত্রেও আছে। শুধুমাত্র যৌন চাহিদা মেটাতেও অনেক সময় নারীরা সম্পর্কে জড়ায়।
২০০০ সালে আমেরিকাতে আর একটি সমীক্ষা করা হয় পরকীয়ার বিষয়েই। সেখানে খোলাখুলি মাত্র ৯ শতাংশ মহিলা স্বীকার করেন যে, তাঁরা তাঁদের স্বামীদের লুকিয়ে পরকীয়া করেন। উল্টোদিকে একই সমীক্ষায় ১৫ শতাং পুরুষ স্বীকার করেন যে, তাঁরা তাঁদের স্ত্রীকে লুকিয়ে অন্য প্রেমে মজেছেন!
এই বিষয়ে করা বিভিন্ন সমীক্ষার অবারা দেখা গেছে অন্তত পশ্চিমের দেশগুলোতে স্বামীরা স্ত্রীদের অনেক বেশি ঠকায়। আমেরিকা, ইংল্যান্ড কিংবা ফ্রান্স সব দেশেই এই বিষয়ে অঙ্কটা একইরকম। ২০০৬ সালে ইংল্যান্ডে একটি সমীক্ষা করে দেখা যায় যে, সেখানে স্ত্রীদের লুকিয়ে তাঁদের স্বামীরা পরকীয়া করেন নারীদের থেকে দ্বিগুণ পরিমানে।
কিন্তু পরকীয়ায় বেশি লিপ্ত কে হয় ? নারী না পুরুষ!
সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গেছে প্রতি ১০ জন নারীর মধ্যে ৮ জন নারী তাদের স্বামীর সাথে প্রতারনা করে থাকেন। অবহেলার কারনেই হোক বা একঘেয়েমিতা কাটানোর জন্য পরকীয়ায় লিপ্ত হন।সুইডেনের একদল গবেষক পৃথিবীর ৩০ টির বেশি দেশের দম্পতিদের মধ্যে প্রায় চার বছর একটি সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছেন বিবাহিত জীবনে সুখী না হওয়ার কারনে অন্য পুরুষের সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়েছেন নারীরা।