আমাদের দেশে প্রত্যেক বছর সময়ের আগে মৃত্যুর যত ঘটনা সামনে আসে, তার মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ মৃত্যু লক্ষণহীন হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে হয়। এই তথ্য এক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা নবীন ভামরি জানিয়েছেন।
দিল্লির ম্যাক্স সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের অধ্যক্ষ এবং নির্দেশক ডক্টর নবীন ভামরি একটি বিবৃতি জারি করেছেন। যাতে তিনি জানিয়েছেন, যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ঘটনা বাড়ছে। সমায়োচিত মৃত্যুরও প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ ঘটনা জন্য লক্ষণহীন হৃদরোগ দায়ী।
চিকিৎসা শাস্ত্রে এই লক্ষণবিহীন হার্ট অ্যাটাককে বলা হয় অ্যাসিমটোমেটিক হার্ট অ্যাটাক। যা চুপচাপ প্রাণ নিয়ে চলে যায়। এমনকী বাঁচার সময়ও পাওয়া যায় না।
ডঃ ভামরি জানিয়েছেন, মধ্যবয়স্ক ব্যক্তিদের মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের দ্বিগুণ হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বাস্তবিক হৃদরোগের আক্রান্ত হওয়ার তুলনায় অ্যাসিমটোমেটিক হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ অনেক হালকা থাকে। এ কারণে একে বোবা খুনি বলে অভিহিত করা হয়েছে।
এমনিতে হার্ট অ্যাটাকে বুকে তীব্র ব্যথা, হাত, ঘাড় এবং চোয়ালে তীব্র ব্যথা, আচমকা নিশ্বাস নিতে সমস্যা, প্রচন্ড ঘাম হওয়া এবং মাথা ঘোরার মত লক্ষণ দেখা দেয়। যেখানে অ্যাসিমটোমেটিক হলে তাতে প্রায় কিছুই লক্ষণ দেখা যায় না।
এ কারণে আমরা অনেক সময় সাধারণ এবং নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার বলে এড়িয়ে যাই বা গুরুত্ব দিই না। এর জন্য বয়স বেশি হওয়া, পারিবারিক ইতিহাস, ধূমপান অথবা তামাকের অভ্যাস, হাই ব্লাড প্রেসার, হাই কোলেস্টেরল, ডায়বেটিস, ওজন সম্পর্কিত সমস্যা, শারীরিক পরিশ্রম কম করা ইত্যাদি দায়ী থাকে।
ডঃ ভামরির বক্তব্য অনুসারে মধ্যবয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে পুরুষ এবং মহিলা দুজনেরই ধূমপান করা এবং মদ্যপানের ওপর বিশেষভাবে নির্ভর হয়ে পড়ার মতো ঘটনা অসময়ে হার্ট অ্যাটাকের সমস্যার জন্য দায়ী।
এ ছাড়া লাক্সারি লাইফস্টাইল, খাওয়া-দাওয়ার বদ অভ্যাস, শারীরিক গতিবিধি কমিয়ে দেওয়া, স্থূলত্বর মত বিষয়গুলি হার্টের সমস্যা তৈরি করে। এখন যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে হার্টের রোগের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা অনেকটাই বাড়ছে।
ডাঃ ভামরি জানিয়েছেন, যে কোনও রোগ, বিশেষ করে হৃদরোগ জনিত কারণের সঙ্গে জড়িত জটিলতা, করোনারি আর্টারি ডিজিজ এবং সাডেন কার্ডিয়াক ডেথ এর বিষয়ে অবগত হওয়া উচিত।
সচেতন থাকলে ওষুধ উপযোগ এবং রিভাস্কুলারাইজেশন এবং এমনকী বাইপাস সার্জারি সাহায্যে ইস্কিমিয়া, হার্ট ফেলিওরের কারণে কার্ডিয়াক এথমিয়ার কারণে হওয়া মৃত্যু আটকানো যেতে পারে।
ডক্টর ভামরি বলছেন যে চিকিৎসকেরা স্ট্রেস টেস্ট করানোর পরামর্শ দিতে পারে। যাতে দুটি উদ্দেশ্য সমাধান হয়। এক চিকিৎসকেরা আপনার শারীরিক কসরত করার সীমা জানতে পারবে, দ্বিতীয়তঃ ইস্কিমিয়া তৈরি এবং চিকিৎসকেরা সবচেয়ে সুরক্ষা সম্পর্কে সঠিক নির্দেশ দিতে পারে।