সমুদ্র মন্থন থেকে শুধু অমৃত বা বিষ বের হয়নি। আজও মাঝে মাঝে সমুদ্র থেকে কিছু অদ্ভুত প্রাণী বেরিয়ে আসে, যা বিরল।
১. জায়ান্ট স্কুইড
জায়ান্ট স্কুইড যা গল্প, কাহিনীতে একটি পৈশাচিক প্রাণীর ভূমিকা পালন করে। এদের সহজে দেখা যায় না। এদের চোখ সব প্রাণীদের থেকেই বড় হয়। সমুদ্রের গভীরতায় বাস করে। সমুদ্র তীরে এসে মারা যাওয়ার ঘটনাও খুব কমই দেখা যায়।২০১৩-র অক্টোবরে স্পেনের উপকূলে একটি বিশাল দৈত্য আকৃতির স্কুইড ভেসে আসে। লোমে প্রায় ৩০ মিটার। ওজন ছিল ১৮০ কেজি। গত বছর, দক্ষিণ আফ্রিকার ব্রিটানিয়া উপসাগরে একটি জায়ান্ট স্কুইড বের হয়েছিল, লম্বায় ১৩ ফুট এবং ওজন ছিল ৩৩০ কেজি।
২. হেয়ারি সি মনস্টার
২০১৮-র মে মাসে ফিলিপিন্সের ওরিয়েন্টাল মিনডোরো প্রদেশের লোকেরা সৈকতে একটি লোমশ হেয়ারি সি মনস্টারকে দেখা যায়। এটি লম্বায় ছিল প্রায় ৩ও ফুট। প্রথমে এটি কী জীব বোঝা যায়নি। পরে বিজ্ঞানীরা জানায়, এটি একটি বড় তিমির পচা দেহ, যা সমুদ্রে ভেসে তীরে এসেছিল। চুলের গোছা যা তার চারপাশে ছিল তা ছিল সেই তিমির পেশীর পচা তন্তু।
৩. লিভার ছাড়া শার্ক
২০১৭-র মে মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার উপকূলে তিনটি সাদা হাঙর পাওয়া গিয়েছিল। যাদের কেউই জীবিত ছিল না। হাঙরের শরীর থেকে হার্টও হারিয়ে গেছে। বিজ্ঞানীরা এই হাঙরগুলির দেহের ময়নাতদন্ত করে। সামুদ্রিক বিজ্ঞানের ভাষায় এদের বলা হয় নেক্রোপসিস। ময়নাতদন্তে জানা যায়, Orca অর্থাৎ Killer Whales দ্বারা এগুলি মারা গেছে। ঘাতক মাছগুলি এদের লিভার খেয়ে শরীর ফেলে দেয়। তাই লিভার পাওয়া যায়নি।
৪. মাথায় লাইটবাল্বযুক্ত অ্যাংলার ফিস
২০২১ -র মে'তে এক জেলে ক্যালিফোর্নিয়ার ক্রিস্টাল কোব স্টেট পার্কের উপকূলে একটি গভীর সমুদ্রের অ্যাংলারফিশের মৃতদেহ দেখতে পান। এই মাছ সাধারণত সাড়ে তিন হাজার ফুট বা তার নীচে গভীরে সাঁতার কাটে। এরা দেখতে খুব বিপজ্জনক। এদের মাথায় একটি বায়োলুমিনসেন্ট বাল্ব রয়েছে, যা অ্যাংলারফিশ তাদের শিকারকে আকৃষ্ট করতে জ্বালাতে থাকে।
৫. সি পট্যাটো
২০১৮-র অগস্টে ইংল্যান্ডের কর্নওয়েলের পেনজ্যান্স সৈকতে একটি অদ্ভুত দৃশ্য দেখা গিয়েছিল। সেখানে উপকূলে হাজার হাজার সামুদ্রিক আলু দেখা গেছে। প্রচলিত ভাষায় এদেরকে বলা হয় সি অর্চিনস বা সি আলু। বলা হয়, এগুলি টেনিস বলের আকারে হয়। এগুলি সাধারণত ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড এবং জাপানের আশেপাশে দেখা যায়।
৬. বড় ডিম্বাশয়যুক্ত ওরফিশ
২০১৫-র জুন থেকে ক্যালিফোর্নিয়ার ক্যাটালিনা দ্বীপে বড় গভীর সমুদ্রের ওরফিশ দেখা গিয়েছিল। এই মাছ খুবই বিরল। এটির দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৩.৫ ফুট হতে পারে। বিজ্ঞানীরা ওরফিশকে কাতালিনা দ্বীপে নিয়ে যান, যাতে এই প্রজাতি সম্পর্কিত আরও তথ্য পাওয়া যায়। বিজ্ঞানীরা যখন এর দেহ পরীক্ষা করেন, তখন এর ভিতরে এক জোড়া ডিম্বাশয় পাওয়া যায়। এটি প্রায় ৭ ফুট লম্বা এবং ১১ কিলোগ্রাম ওজনের ছিল।
৭. পচা-গলা সি লায়ন্স
গত বছরের এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মধ্যে কানাডার ভ্যানকুভার দ্বীপে পাঁচটি মাথাবিহীন সি লায়ন্স পাওয়া গেছে। কিন্তু কীকরে পাচঁটিরই মাথা কাটা তা বিজ্ঞানীরা আজও বোঝেননি।
৮.পেনিস ফিশ
২০১৯-এর ক্যালিফোর্নিয়ায় উপকূলে হাজার হাজার পেনিস ফিশ দেখা গেছিল। এগুলি প্রায় ১০ ইঞ্চি লম্বা, গোলাপী রঙের এবং নরম। এগুলো আসলে সামুদ্রিক কৃমি কিন্তু এদের নামের সঙ্গে মাছ যুক্ত করা হয়েছে। এদেরকে ফ্যাট ইনকিপার ওয়ার্মও বলা হয়।এরা সমুদ্রে পাথরের স্তরের মধ্যে লুকিয়ে থাকে। তারা তাদের চারপাশে তরল উপাদানের জাল তৈরি করে। যেখানে তারা আটকে থাকা ছোট প্রাণীদের খেয়ে বেঁচে থাকে।
৯.হাওয়ায় উড়তে পারা সমুদ্র জীব
এই প্রাণীরা সত্যিই অদ্ভুত এবং আশ্চর্যজনক। এরা সমুদ্রে বাস করে কিন্তু ভাসমান বাতাসে থাকে।২০১৪ সালে আমেরিকার পশ্চিম উপকূলে হাজার হাজার কাচের মতো প্রাণী দেখা যায়। এগুলোকে হাইড্রোজোয়ান বলা হয়। এরা বাতাসের গতির সাহায্যে ওপরে ভাসতে থাকে। যখনই তারা খোলা সমুদ্রে আসে, তারা বাতাসের সাহায্যে শত শত কিলোমিটার সাঁতার কাটতে থাকে।
১০. ফ্যাংড ক্যানিবাল ল্যানসেটফিশ
২০১৪-র মে মাসে উত্তর ক্যারোলিনার জ্যানেটস পেয়ার কোস্টের কাছে ফ্যানগ্যাড ক্যানিবাল ল্যান্সেটফিশ হাজির হয়েছিল।এটি জীবিতই ছিল। অস্বাভাবিক নিশাচর মাছ, যা শুধুমাত্র রাতে শিকার করে। এটি সমুদ্রের তীর থেকে খুব দূরে বাস করে।
১১. রহস্যময়ী ডিকম্পোজিং ব্লব
মায়নে ২০১৮-র জুলাইয়ে একটি রহস্যময় পচা প্রাণীকে সমুদ্রতীরে ভাসতে দেখা গেছে। সকলের চিনতে কষ্ট হয়েছিল। কারণ এটি এতটাই পচা ছিল যে এর আকৃতি বোঝা যাচ্ছিল না। এটি প্রায় ১৫ ফুট লম্বা ছিল। েকে সরাতে বুলডোজারের দরকার পড়েছিল।