কমলালেবু আমরা সকলেই ভালবাসি। শীত পড়লেই দুপুরে মিঠে রোদ্দুর গায়ে মেখে কমলালেবুর খোসা ছাড়াতে পারার অভিজ্ঞতা সকলেরই কমবেশি আছে। আর এর চেয়ে আনন্দ আর কিসেই বা আছে? কিন্তু বাগানে বসে কমলালেবু ছিঁড়ে খাওয়ার অভিজ্ঞতা? সিংহভাগেরই নেই। কিন্তু তা বলে কি আর কোনওদিনই অভিজ্ঞতা হবে না?
হাতের কাছে যখন সুযোগ রয়েছে। খরচও তেমন বেশি নয়। তাহলে জীবনে একবার এই অভিজ্ঞতা নিতে না পারলে আর কিসের ভ্রমণপিপাসু! সুযোগ হাতছাড়া করা কাজের কাজ হবে না।
কাশ্মীরের আপেল বাগানে যাওয়ার খরচ খানিক বেশি। তবে এ রাজ্যের কমলালেবু বাগানো যাওয়ার খরচ সামান্যই। বিশেষ করে কলকাতা থেকে রাতে ট্রেনে চাপলেই সকাল সকাল কমলালেবু বাগানে পৌঁছে যাবেন।
কোথায় এই বাগান?
এলাকার নাম বড় মাংওয়া। শিলিগুড়ি থেকে ৪৫ কিলোমিটার। দার্জিলিং থেকে ৩৫ কিলোমিটার। জেলা দার্জিলিং হলেও কালিম্পং কিংবা পেশক থেকে কাছে। পেশক থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার।
কীভাবে যাবেন?
শিলিগুড়ি থেকে সরাসরি গাড়ি রিজার্ভ করে যান। সিজনভেদে ভাড়া ৩০০০ থেকে ৪৫০০ টাকা পর্যন্ত পড়বে। দার্জিলিং থেকেও গাড়ি ভাড়া করে যেতে পারেন। কিংবা পেশক পর্যন্ত শেয়ার গাড়িতে এসে এখানে গাড়িতে আসলে খরচ কিছুটা কম পড়বে।
এমনিতে বড় মাংওয়াতে বেশ কয়েকটি হোম-স্টে, হোটেল রয়েছে। তবে এর জনপ্রিয়তা বিগত কিছু বছরে বেড়েছে স্রেফ কমলালেবু বাগানের জন্য। বাগানের মালিক বাগানটি সবার জন্য় খুলে দেওয়ার পর থেকে সিটংয়ের পর আরও একটি অরেঞ্জ গ্রামের খোঁজ পেয়েছে সাধারণ পর্যটকরা।আর তা থেকেই আকর্ষণ বেড়েছে।
বড় মাংওয়ার "অরেঞ্জ ভিলা" এখন টুরিজমের নয়া নাম। আর এই পবাগানের সুবিধা পাচ্ছেন আশপাশের হোমস্টে, হোটেলগুলিও। সবাই এখন ভিড় জমাচ্ছেন এলাকায়।
বড় মাংওয়ার পাহাড়ের ঢালে ঢালে কয়েকশো কমলা গাছ ইতস্তত সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে। বাগানটি এই এলাকার চেহারা বদলে দিয়েছে। তব শুরু কমলালেবু নয়, যখন কমলালেবুর সিজন থাকে না, তখনও এই এলাকা স্বর্গীয় সুন্দর। খাড়া পাহাড়ের ঢাল নেমে গিয়েছে নীচে অনেকদূরে তিস্তা নদীর পর্যন্ত। বড় মাংওয়া প্রায় ৪৫০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত।
যদিও বড়মাংওয়া একটি পাহাড়ি এলাকা তবে এখানকার আবহাওয়া শীতল এবং মনোরম, তীব্র ঠান্ডা এখানে প্রভাব ফেলে না। কমলার বাগান থেকে শুরু করে অনেক মূল্যবান জৈব ঔষধি গাছের চাষ করা হয় এখানে।
প্রায় চার বিঘা জমি জুড়ে রয়েছে এই কমলার বাগান। পর্যটকরা দূর দুরান্ত থেকে এসে এই কমলা বাগান ঘুরে যাচ্ছেন। এই অরেঞ্জ ভিলা আসলে হোমস্টে। কিন্তু বাড়ির পেছনেই এই কমলা বাগানটি লকলকিয়ে ওঠায় তা হয়ে উঠেছে বড় মাংওয়ার মূল আকর্ষণ।
এছাড়াও এখানে ছোট ছোট ট্রেক রুট রয়েছে। যেগুলি বড়ামাংওয়াথেকে উঠে কমলা বাগানের মধ্য দিয়ে যায় যা উপভোগ করার মতো। একা ভ্রমণের অভ্যাস থাকলে এখানে ঘুরে যেতে পারেন কয়েকটি দিন।