বেশ কয়েক বছরের প্রেমের সম্পর্ক আপনাদের। কিন্ত কিছু দিন ধরে সেটা যেন ঠিক আর আগের মতো এগোচ্ছে না।
ভালোবাসা সম্পর্কটি এমন একটি সম্পর্ক যেটা একজনের ওপর কখনই নির্ভর করে না। দু'জনের মধ্যে মনের মিল থাকলে এই সম্পর্ক গভীর হয়। তবে যদি প্রেমিক বা প্রেমিকার মধ্যে একজনের ঘাটতি দেখা যায়, তাহলেই এই সম্পর্কে চিড় ধরে।
ঝগড়া, অশান্তি, মনমালিন্য সব সম্পর্কের মধ্যেই থাকবে। নানা কারণে অনেক দিনের সম্পর্কে চিড় ধরে। দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ভেঙে সঙ্গীকে ছেড়ে চলে যান অপর সঙ্গী। কেউ না চাইলেও একসময় প্রিয় সম্পর্কটি ভেঙে যেতে পারে। দুজনের মাঝে আসতে পারে বিচ্ছেদ। অনেক কারণেই অনেক দিনের সম্পর্কে ভাঙন দেখা দিতে পারে। আর যখন ভাঙন অবশ্যম্ভাবী তখন অপেক্ষা না করে ইতি টানাই ভালো। ভালোবাসার মানুষটির নানা আচার-ব্যবহার ও কাজকর্ম দেখেই বুঝে নিতে পারা যায় সঙ্গী আপনার সঙ্গে আর সম্পর্ক রাখতে চান কি না।
এই বিষয়ে মনোবিজ্ঞানীরা কয়েকটি বিষয়ের ওপর নজর দিতে বলেছেন। চলুন সেগুলি নিয়েই আলোচনা করা যাক।
মোবাইলে বেশি সময় কাটানো
আপনার সঙ্গী যদি আপনার সঙ্গে ঘুরতে বের হওয়ার পরও মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তাহলে বুঝতে হবে আপনার প্রতি তাঁর ভালো লাগা হয়তো আগের চেয়ে কমে গেছে। কিন্তু একবার মোবাইলে দেখলেই সন্দেহ করে বসবেন না। কয়েকবার তাঁকে সুযোগ দিন। এরপরও যদি একই অবস্থা দেখেন তাহলে বুঝবেন তিনি আর আপনার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী নন।
শেয়ারিং কমিয়ে দেওয়া
আগে যে ব্যক্তি আপনার কাছে তাঁর প্রতিটি বিষয় শেয়ার করতেন, সেই ব্যক্তি যদি হঠাৎ করেই তাঁর বিষয়গুলো আপনার সঙ্গে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকেন, তখন বুঝতে হবে তিনি আপনার কাছ থেকে দূরে চলে যেতে চাইছেন। তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেও যদি এ সমস্যার সমাধান না হয় তাহলে বুঝে নিতে হবে আপনার সঙ্গী ব্রেকআপে আগ্রহী।
হঠাৎ করেই খুব ব্যস্ত হয়ে যাওয়া
বর্তমান সময়ে প্রত্যেকেই ব্যস্ত। এরমাঝে সঙ্গীর ব্যস্ততা যদি হঠাৎ করেই অনেক বেশি বেড়ে যায়, আপনার সঙ্গে দেখা বা সময় দেওয়া কমিয়ে দেন তখন বুঝতে হবে আপনার সঙ্গ তাঁর ভালো লাগছে না।
সময়ে-অসময়ে ঝগড়া
আগে আপনার সঙ্গী ঝগড়া থেকে দূরে থাকতেন, কিন্তু হঠাৎ করেই আপনার সব কাজেই ভুল খোঁজার চেষ্টা করেন? কথায়-কাজে অধৈর্য ভাব লক্ষ করা যায়। আপনি তাঁর সবকিছু মেনে নিয়েও তাঁর সঙ্গে ভালোভাবে থাকার চেষ্টা করলেন। দেখা গেল তবু তিনি আপনার সঙ্গে ঝগড়া করতে উন্মুখ থাকেন তাহলে বুঝতে হবে আপনার সঙ্গ তাঁকে আর আনন্দ দেয় না। তিনি আসলে আপনাদের সম্পর্কটি ভেঙে ফেলতে চান।
কথা বলা কমিয়ে দেওয়া
একটি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য একজন আরেকজনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা এবং একজন আরেকজনের খোঁজখবর রাখা খুবই জরুরি। আপনার সঙ্গী যদি আর আপনাকে ভালো না বাসেন তাহলে তিনি আপনার সঙ্গে কথা বলা কমিয়ে দেবেন। কথা বললেও দায়সারাভাবে অনেক কম কথা বলবেন। বুঝতে হবে তিনি আপনার থেকে দূরে সরে যেতে চান।
আপনাকে দোষারোপ করা
ব্রেকআপ করতে চাইলে সব সঙ্গীই যে কাজটি করেন, সেটি হচ্ছে অন্যকে দোষারোপ করা। তোমার জন্য আমার এই ক্ষতি হয়েছে, তুমি আমার জীবনে আসার পর আর আমার সুখ নেই, তোমার কারণেই আমি অসফল। এ ধরনের কথাগুলো যদি হঠাৎ করেই আপনার সঙ্গী বেশি বলতে শুরু করেন তবে বুঝবেন ব্রেকআপ অবশ্যম্ভাবী।
সঙ্গীর বন্ধুবান্ধব ও পরিচিত মানুষের আচরণ নজর করুন
সঙ্গীর বন্ধুবান্ধব ও অন্যান্য পরিচিত মানুষের সঙ্গে আপনার পরিচয় থাকলে তাহলে তাঁদের দিকে খেয়াল করুন। লক্ষ করুন, তাঁরা আগের মতো আপনার সঙ্গে ভালো আচরণ করছেন কি না। যদি খেয়াল করেন অনেকের মধ্যে আগের মতো আন্তরিকতা আর নেই, তবে বুঝতে হবে এর পেছনে রয়েছেন আপনার সঙ্গী। তিনি ব্রেকআপ চাচ্ছেন বলেই নিজের বন্ধুবান্ধব ও পরিচিত মানুষকে আপনার কাছ থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন।
আপনার নানা বিষয় নিয়ে কটাক্ষ করা
যদি সঙ্গী আপনাকে আর ভালো না বাসেন তাহলে তিনি আপনার রুচি নিয়ে, আপনার পছন্দের বিষয়গুলো নিয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করবেন। আপনার সঙ্গী যদি আপনাকে বলেন তুমি আগের চেয়ে দেখতে খারাপ হয়ে গেছো বা একটু স্টাইলিশ হওয়ার চেষ্টা করো, তবে অবশ্যই আপনাকে বুঝতে হবে আপনার সঙ্গী আপনাদের সম্পর্ক নিয়ে আর খুশি নন। সম্পর্কে হঠাৎ করে কটাক্ষ করার মূল কারণ হচ্ছে সম্পর্কের ইতি টানার চেষ্টা করা।