দীপাবলির আগের দিন মহা ধুমধাম করে পালিত হয় ধনতেরাস। কার্তিক মাসের ত্রয়োদশী তিথিতে এই ধনতেরাস পালিত হয়। ধনতেরাসের দিন সোনা কেনা শুভ মনে করা হয়। আসলে এসময় দেবী লক্ষ্মীর ও ধনদেবতা কুবেরের আরাধনা করা হয়। তাই মনে করা হয়, এই সময় যা কিনবেন তা দেবীর আশীর্বাদে দ্বিগুন হয়ে যাবে।
তবে কেবল ধনতেরাসের দিনই না, সোনার চাহিদা চিরকালীন। বিয়ে হোক বা জন্মদিন প্রিয়জনকে উপহার দিতে, সোনার জুড়ি মেলা ভার। মেয়েদের কাছে সোনার গয়না অতি পছন্দের। ।দামী ধাতু হওয়ায় সোনা শুধু অলঙ্কার হিসেবেই নয়,ভবিষ্যতের পুঁজি হিসেবেও কাজে লাগে। আবার অনেক পুরুষ আছেন, যারা সোনা ব্যবহার করতে ভালবাসেন।
জানেন কি, সৌন্দর্য বৃদ্ধি আর আর্থিক দিক নয়, চিকিৎসা বিজ্ঞানেও রয়েছে সোনার কদর। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, সোনায় এমন অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। সোনায় রয়েছে প্রাকৃতিক অ-বিষাক্ত খনিজ, যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
বৈদিক অ্যাস্ট্রোলজির উপর লেখা একাধিক বইয়ে তো বটেই, সেই সঙ্গে বেশ কিছু আধুনিক গবেষণাতেও এমনটা উল্লেখ পাওয়া যায় যে সোনার নথ পড়া মাত্র দেহের ভিতরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে একাধিক শারীরিক উপকার মিলতে সময় লাগে না। বিশেষত, স্ট্রেস এবং মানসিক অবসাদের প্রকোপ থেকে বাঁচতে এই ধাতুটি নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। শুধু তাই নয়, সোনা দিয়ে তৈরি যে কোনও গয়না দেহের সংস্পর্শে আসা মাত্র সারা শরীরে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের প্রবাহ নাকি এতটা বেড়ে যায় যে প্রতিটি অঙ্গ চাঙ্গা হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে মেলে আরও অনেক উপকার। চলুন জেনে নেওয়া যাক, সোনার বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা।
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে খাঁটি সোনায় প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সোনার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য শরীরে ব্যথা এবং ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তবে সোনার পাশাপাশি এই বৈশিষ্ট্যগুলো তামাতেও আছে।
মেনোপজের সময় নারীদের জন্য সোনা উপকারী। কিছু বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, মেনোপজের মধ্য দিয়ে যাওয়া নারীদের সমস্যা কমাতে সোনার গয়না সাহায্য করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে,সোনার ব্যবহার ক্ষতের চিকিৎসাতেও ব্যবহৃত হয়। প্রাচীন কয়েকটি চিকিৎসা শাস্ত্রে দেখা গেছে, ক্ষতে সোনা প্রয়োগ করা হলে তা সংক্রমণ রোধ করতে সাহায্য করে।
সোনা ত্বকে উষ্ণতা বাড়ায় এবং স্নিগ্ধ কম্পন সরবরাহ করে বলে কোনো কোনো গবেষক দাবি করেছেন। সোনা দেহের কোষগুলোকে পুনরায় জন্মাতে সহায়তা করে। এছাড়া একজিমা, ছত্রাকের সংক্রমণ, ক্ষত, পোড়া ইত্যাদির মতো ত্বকের সাথে সম্পর্কিত সমস্যার সমাধেনরো জন্যও সোনা ব্যবহৃত হয়। চিকিৎসা ক্ষেত্রে সরাসরি সোনার ব্যবহার দেখা যায়। আকুপাংচারের চিকিৎসকরা ব্যথা কমাতে এবং শরীরে শক্তি প্রবাহ ছাড়তে সোনার টিপড সুঁচ ব্যবহার করা হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক স্বর্ণ ধারণ করার সঠিক নিয়ম।
ছোট বয়সে
লেখাপড়া করা ছাত্রছাত্রীদের যদি ছোট্ট একটা সোনার মাদুলি বানিয়ে তাতে ইষ্টদেবতার ফুল দিয়ে গলায় পরিয়ে দেওয়া হয়, তা হলে সন্তানের লেখাপড়ার প্রতি একাগ্রতা বেড়ে যায় এবং সুন্দর সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে।
দাম্পত্য সমস্যা
দাম্পত্য সমস্যা কাটাতে ছোট্ট একটি সোনার লকেট বা সরু সোনার চেইন পরলে, অনেক ক্ষেত্রেই দাম্পত্য কলহ কমে যায়। জীবন সুখ-শান্তিতে ভরে থাকে।
অনামিকায় সোনা পরার উপকারিতা
অনামিকায় সোনার আংটি ধারণ করলে জীবনে সাফল্যের শিখরে পৌঁছনো যায় খুব সহজেই। বৃহস্পতি তুঙ্গে রাখতে অনামিকায় সোনা ধারণ করার পরামর্শ দেন জ্যোতিষবিদরা।
কর্মে উৎসাহ ও আত্মবিশ্বাস
সঠিকভাবে সোনার ব্যবহার মানুষের আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে তোলে, এটাই মনে করেন জ্যোতিষবিদরা। একটু সোনার ব্যবহার কর্মে উৎসাহ ও আত্মবিশ্বাস প্রচুর বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।