মাছের নাম শুনলেই অনেকের জিভে জল গড়িয়ে আসে। বাঙালির মাছ ছাড়া গতি নেই। এমনিতে ছোট-বড় সব রকম মাছই বাজারে পাওয়া যায়, আর সব মাছেরই অনুষ্ঠান আর স্বাদভেদে কদর রয়েছে। তবু ভাল আর দামী মাছ বলতে আমাদের চোখে ভেসে ওঠে ইলিশ, চিতল, পমফ্রেট, ভোলা জাতীয় মাছ। তার দাম কত? ভাল আকারের বড় মাছ সর্বাধিক ৪-৫ হাজার টাকা ওঠে। কখনও কখনও অবশ্য ১০-১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত পৌঁছে যায়। এর বেশি নয়।
কিন্তু ভোজ্য মাছের মধ্যে সবথেকে বেশি দামের মাছের কথা জিজ্ঞাসা করলে বলতে পারবেন? আমি জানি মাথা চুলকোতে হবে। পাশাপাশি যদি মাছের দাম কত টাকা পর্যন্ত হতে পারে বলে জিজ্ঞাসা করি, তাহলেও বিপাকে পড়তে পারেন। আজ আমরা পৃথিবীর সবচেয়ে দামী মাছ নিয়ে আলোচনা করব, যা খেতেও সুস্বাদু, চাহিদাও প্রচুর।
আজ যে মাছটি সম্পর্কে বলতে যাচ্ছি, এটিই পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মাছ (Most Expensive Fish In The World)। তাহলে চলুন প্রতিবেদন থেকে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মাছ সম্পর্কে জেনে নিন। এর নাম হল আটলান্টিক ব্লুফিন টুনা (Atlantic Bluefin Tuna)।
এটিই বিশ্বের সবচেয়ে দামী ভোজ্য মাছ। তবে আজ এই মাছটি বিলুপ্তির পথে। এ জন্য বিভিন্ন দেশের সরকার এই মাছগুলি শিকার করা আইনত নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। ধরতে দেখলে জরিমান তো বটেই জেলও হয়।
দাম কত?
আটলান্টিক ব্লুফিন টুনার এক একটির দাম আকার অনুযায়ী কয়েক কোটি টাকা। ন্যূনতম এক-দেড় কোটি টাকায় বিক্রি হওয়া জলভাত। কয়েক বছর আগের একটি বড় সাইজের টুনার দাম উঠেছিল ২২ কোটি টাকা।
প্রায় ২২ কোটি টাকা খরচ করে বিশালাকার টুনা মাছটি কেনেন জাপানের এক ব্যবসায়ী। জাপানের উত্তর উপকূলে বিপন্ন প্রজাতির এই মাছটি ধরা পড়ে। তোয়োসু নামক টোকিওর একটি মাছের বাজারে নিলামে উঠেছিল ২৭৮ কেজির এই মাছটি। জাপান ও আমেরিকা, ইউরোপের অনেক দেশে এই মাছের কদর প্রচুর।
ব্লুফিন টুনা শিকারি। স্কুইড এবং ক্রাস্টেসিয়ান খায় এবং প্রাপ্তবয়স্করা প্রধানত হেরিং, ব্লুফিশ এবং ম্যাকেরেলের মতো বেটফিশ খায়। এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে বড় টুনা ছিল নোভা স্কটিয়া থেকে ধরা আটলান্টিক ব্লুফিন যার ওজন ছিল ১,৪৯৬পাউন্ড। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক ব্লুফিন টুনার খাদ্য শুধু মাছেই সীমাবদ্ধ নয়। এছাড়াও তারা কাঁকড়া, লবস্টার, ক্রেফিশ, চিংড়ি, ক্রিল এবং বারনাকল সহ বিভিন্ন ধরণের ক্রাস্টেসিয়ান খায়। তারা অক্টোপাস, স্কুইড, কাটলফিশ এবং এমনকি কেল্প খেতেও পরিচিত ।
এটাই বিশ্বের সবচেয়ে দামি মাছ। এই মাছ দ্রুত গতিতে জলে সাঁতার কাটতে পারে। তিন মিটার লম্বা ও গড়ে ২৫০ কেজি পর্যন্ত ওজন হতে পারে এই মাছের। ওমেগা থ্রিতে ভরপুর এই মাছ থেকে ওষুধ তৈরি হয়। প্রায় ৪০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে এই মাছ।