২০১১-এর পর ফের বিশ্বজয় ভারতের। ৭ রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে টি২০ বিশ্বকাপ জয় রোহিতদের। জয়ের পরেই টি-২০ থেকে বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মার অবসর।
অবশেষে দীর্ঘ ১৭ বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ রানে হারিয়ে আবার নতুন করে ট্রফির স্বাদ পেলেন রোহিত শর্মারা। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে বিপ্লব ঘটাল ভারতীয় ক্রিকেট দল। নিমেষে পাল্টে গেল মাঠের পরিবেশ।
শুরুতে কিছুটা চাপ তৈরি হলেও, ২০ ওভারে ১৭৬ রান তুলতে সমর্থ হয় ভারত। যার জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৬৯ রানে শেষ হয়ে যায় প্রোটিয়াদের ইনিংস। কঠিন মুহূর্তে ঘুরে দাঁড়াল ভারত। বল হাতে শেষ ৪ ওভারে ভেল্কি দেখালেন জশপ্রীত বুমরা, অর্শদীপ সিং ও হার্দিক পাণ্ডিয়ারা।
এরকম একটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জয়ের পর স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভাঙে টিম ইন্ডিয়ার প্রত্যেক সদস্যের। আনন্দে কেঁদে ফেলেন টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও সহ-অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ডিয়া।
ম্যাচ শেষে তখন সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন হার্দিক। সেইসময় রোহিত এগিয়ে এসে তাঁর গালে চুমু খেয়ে জয় উদযাপন করেন। যে মুহূর্ত ভারতীয় ক্রিকেট দলের অগুণিত ভক্ত মনে গেঁথে রাখবে সারাজীবন।
দেশের জার্সিতে শেষ টি-২০ ম্যাচ খেলে ফেললাম, বিশ্বকাপ জয়ের পরই ঘোষণা করে দিলেন বিরাট কোহলি। ম্যাচের সেরার পুরস্কার নিতে এসে নিজেই এই ঘোষণা করলেন। টি-২০ বিশ্বকাপ জিতে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাট থেকে অবসর ঘোষণা করলেন কোহলি। জানালেন, বিশ্বকাপ ফাইনালই ভারতের জার্সিতে তাঁর শেষ টি-২০ ম্যাচ হয়ে থাকবে। পরের প্রজন্মের জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে চান।
কোহলি বলেন, 'এটাই আমার শেষ টি-২০ বিশ্বকাপ ছিল। বিশ্বকাপ জিততে চেয়েছিলাম, সেটা পেরেছি। মাঝে মাঝে মনে হয় যে আমি রান পাচ্ছি না। তারপরই আবার বড় রান হয়ে যায়। যেদিন সবচেয়ে বেশি দরকার ছিল, সেদিন আমি দলের জন্য অবদান রাখতে পেরেছি। আমি স্থির করে নিয়েছিলাম, হলে এখনই, নয়তো আর নয়।'
বিরাট কোহলির পথেই হাঁটলেন রোহিত শর্মাও। আন্তর্জাতিক টি২০ থেকে অবসরের ঘোষণা করে দিলেন ভারত অধিনায়কও। শনিবার ২০২৪ কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরেই, সাংবাদিক সম্মেলনে এই ঘোষণা করে দেন রোহিত। রোহিত অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, টি২০ থেকে অবসর নিলেও, তিনি টেস্ট এবং ওয়ানডে ফর্ম্যাটে ভারতের হয়ে খেলা চালিয়ে যাবেন। তবে সংক্ষিপ্ততম ফর্ম্যাটে তিনি আর খেলবেন না।
এবার আমেরিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই টুর্নামেন্টে পিচ নিয়ে অনেক অভিযোগ ছিল। ফাইনালের পিচে সেই আক্ষেপ যেন অনেকটাই মিটিয়ে দিল আইসিসি। বিশ্ব ক্রিকেটে চোকার্স নামেই পরিচিত দক্ষিণ আফ্রিকা। বড় টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল থেকেই তাঁদের বিদায় সব সময় নিশ্চিত। কিন্তু আইডেন মারক্রমের হাত ধরে অভিশাপ কাটিয়ে এবার ফাইনালে ওঠে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফাইনালে শুরুটা ভাল করলেও শেষ হাসি হাসতে পারলেন না রাবাদা, ক্লাসেনরা। সেই চোকার্স হয়েই থেকে গেলেন তাঁরা।
২০০৭ সালে ধোনির হাত ধরে প্রথম চ্যাম্পিয়ন। তারপর ক্রিকেটপ্রেমীদের বিশ্বাস দৃঢ় হয়, যে ভারতও ক্রিকেটবিশ্বে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা পেতে পারে। ২০১১ ও ২০১৩ সালের পর সেই বিশ্বাস আরও মজবুত হয়। কিন্তু ধোনির বিদায়ের পর বড় শূন্যতা তৈরি হয়। বিরাটের নেতৃত্বেও সাফল্য পায়নি ভারত। রোহিত শর্মা দায়িত্ব নিয়েও ভারতকে এতদিন চ্যাম্পিয়ন করতে পারেননি। শনিবার কেনসিংটন ওভালে ভারতের সেই ট্রফির খরা যেন কাটল। ১১ বছর পর আইসিসি ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরছেন রোহিত ব্রিগেড।
ভারত জিতেই মধ্যরাতে গোটা দেশজুড়ে উৎসব। গান, নাচ, ঢাক বাজিয়ে উৎসব। জয়ের পর উৎসবে মাতলেন সকলে।
টসে জিতে ব্যাটিং নেয় ভারত। কিন্তু শুরুতেই ক্যাপ্টেনকে কে হারায় তারা। কিন্তু, ইনিংসের হাল ধরলেন কিং কোহলি।
তাঁর স্থিতধী ৭৬-এর জোরেই ঘুরে দাঁড়ালো ভারতের ইনিংস। সঙ্গে অক্সরের ঝোড়ো ৪৭ ও শিবম দুবের ২৭ রানের ক্যামিওর জোরেই শেষ পর্যন্ত ১৭৬ এ পৌঁছয় ভারতের ইনিংস।
ফাইনালে শুরুটা ভাল করলেও শেষ হাসি হাসতে পারলেন না রাবাদা, ক্লাসেনরা। সেই চোকার্স হয়েই থেকে গেলেন তাঁরা।