শেফালি বর্মা:
খেলার কথাই ছিল না। প্রতীকা রাওয়াল চোট না পেলে ঘরে বসে টিভিতে দেখতে হতো সতীর্থদের খেলা। রাওয়ালের চোটের পর দলে ফেরেন বিগহিটার শেফালি। সেমিফাইনালে ব্যর্থ হলেও ফাইনালে খেলেন অনবদ্য ৭৮ বলে ৮৭ রানের ইনিংস, সঙ্গে নেন দু’টি উইকেট। সেই পারফর্ম্যান্সেই হন Player of the Match।
হরমনপ্রীত কৌর
ভারতীয় মহিলা দলের অধিনায়ক হিসেবে এটাই ছিল হরমনপ্রীত কৌরের প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপ। আর সেই প্রথমবারেই ট্রফি ঘরে তুললেন তিনি। পুরো টুর্নামেন্টে তিনি দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন শান্ত মাথায় ও দৃঢ় কৌশলে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে লিগ ম্যাচে তাঁর ৭০ রানের ইনিংস হারলেও নজর কাড়ে। এরপর সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৮৮ বলে ৮৯ রান করে জেমিমাহ রদ্রিগেসের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়েন। ফাইনালে ঝুঁকি নিয়ে তিনি শেফালি বর্মাকে বল হাতে দেন এবং সেই সিদ্ধান্তেই দু’টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট আসে। ট্রফি জেতার শেষ মুহূর্তেও সেই হারমনপ্রিতই ধরেন শেষ ক্যাচটি।
ক্রান্তি গৌড়
রেণুকা না খেললে দায়িত্ব নেন তিনিই। তরুণ এই পেসার ৯ উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপ শেষ করেন, দলের পেস আক্রমণে ভরসা জোগান।
দীপ্তি শর্মা
ভারতের নির্ভরযোগ্য অলরাউন্ডার দীপ্তি ফাইনালেও প্রমাণ করলেন তাঁর মান। ৫০ রানের ইনিংসের সঙ্গে তুলে নেন ৫ উইকেট। সেই সঙ্গে দলকে এনে দেন বিশ্বজয়ের আনন্দ। পুরো টুর্নামেন্টে ২২ উইকেট ও ২১৫ রান করে জিতে নেন Player of the Tournament-এর পুরস্কার।
অরুন্ধতী রেড্ডি
একটিও ম্যাচ না খেলেও ফিল্ডিংয়ে নজর কাড়েন। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিকল্প ফিল্ডার হিসেবে দারুণ এক ক্যাচ নিয়ে সকলকে চমকে দেন।
অমনজোত কৌর
চাপের মুহূর্তে নেমে ঠান্ডা মাথায় খেলেছেন গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেও রান করেছেন। বল হাতে ৬ উইকেট তুলে নিয়েছেন গোটা টুর্নামেন্টে।
রাধা যাদব
যদিও বেশি ম্যাচ খেলেননি, কিন্তু ফিল্ডিংয়ে দলকে সাহায্য করেছেন বারবার। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৬ ওভারে ৩ উইকেট নিয়ে প্রভাব ফেলেন।
এন. শ্রী চরনি
এই তরুণ বাঁহাতি স্পিনার ভারতীয় দলে নতুন সংযোজন। নিজের প্রথম বিশ্বকাপেই নিয়েছেন ১৪ উইকেট। ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৩/৪১ ছিল তাঁর সেরা ফিগার।
স্নেহ রানা
অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার হিসেবে স্নেহ রানা ছিলেন দলের অন্যতম ভরসা। বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে দিয়েছেন, রান আটকেছেন। শান্ত মাথায় নিজের কাজ করে গিয়েছেন তিনি।
দীপ্তি শর্মা
ভারতের নির্ভরযোগ্য অলরাউন্ডার দীপ্তি ফাইনালেও প্রমাণ করলেন তাঁর মান। ৫০ রানের ইনিংসের সঙ্গে তুলে নেন ৫ উইকেট— দলকে এনে দেন বিশ্বজয়ের আনন্দ। পুরো টুর্নামেন্টে ২২ উইকেট ও ২১৫ রান করে জিতে নেন Player of the Tournament-এর পুরস্কার।
ঊমা ছেত্রী
অসম থেকে আসা তরুণী ঊমা চেত্রী যোগ দেন ইনজুরি রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে। নিউজিল্যান্ড ম্যাচে ঋচার চোটের পর পান সুযোগ। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিজের ওয়ানডে অভিষেকও সেরে ফেলেন তিনি।
রেণুকা সিং ঠাকুর
সব ম্যাচে না খেললেও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দু’উইকেট নিয়ে দাপট দেখান। ফাইনালে তেমন ঝলক না থাকলেও ৮ ওভারে মাত্র ২৮ রান দিয়ে ছিলেন যথেষ্ট কৃপণ।
রিচা ঘোষ
উইকেটকিপিংয়ে কিছু ভুল থাকলেও ব্যাট হাতে ছিলেন জ্বলে ওঠা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৯৪ রানের ঝড়ো ইনিংসই তার প্রমাণ। ফাইনালেও ২৪ বলে ৩৪ রান করে দলের স্কোর টেনে তোলেন কঠিন পিচে।
জেমিমাহ রদ্রিগেজ
শুরুটা ব্যর্থ হলেও সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলে ফেলেন জীবনের সেরা ইনিংস। অপরাজিত ১২৭ রানে ভারতকে ফাইনালে তোলেন জেমিমাহ। এর আগে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধেও ৫০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।
হারলিন দিওল
নম্বর তিনে নেমে হরলিন খেলেছেন ধারাবাহিকভাবে ৩০–৪০ রানের ইনিংস। তবে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তাঁকে নামানো হয় নিচের ক্রমে, পরে সেমিফাইনালে তাঁকে বিশ্রাম দেওয়া হয়।
প্রতীকা রাওয়াল
টুর্নামেন্টে ভারতের ইনিংসের ভিত্তি গড়েছেন প্রতিকা রাওয়াল। ২৫ বছরের এই ওপেনার নিজের প্রথম বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঝকঝকে সেঞ্চুরি করে নজর কাড়েন। চোটের কারণে টুর্নামেন্ট শেষ করতে পারেননি, তবে ছয় ইনিংসে ৩০৮ রান করে সেরা পারফর্মারদের মধ্যে জায়গা করে নেন। ফাইনাল জয়ের পর তিনিও ছিলেন উদ্যাপনের মুহূর্তে, হুইলচেয়ারে বসেই দলের সঙ্গে উৎসবে যোগ দেন।
স্মৃতি মন্ধানা
ফর্মে থাকা স্মৃতি কিছু ম্যাচে ছন্দে ফিরতে সময় নেন। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম হাফসেঞ্চুরি পাওয়ার পর থেকেই ঝলক দেখাতে থাকেন। এরপর তাঁর ইনিংস ৮৮, ১০৯, ৩৪*, ২৪-ধারাবাহিকভাবে রান করেছেন। এই সংস্করণে ৪৩৪ রান করে তিনি ভেঙেছেন মিতালি রাজের রেকর্ড (২০১৭ সালে ৪০৯ রান)। স্মৃতি এবার ভারতের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।