সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তৃতীয় টেস্ট ম্যাচ খেলতে নেমেছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। এই ম্যাচে খেলার সুযোগ পেয়েছেন হায়দরাবাদের তরুণ স্পিডস্টার মহম্মদ সিরাজ। তবে আজ ম্যাচ শুরুর আগেই জাতীয় সঙ্গীত শুনে কেঁদে ফেললেন তিনি।
নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারলেন না সিরাজ। তাঁর চোখ থেকে বেরিয়ে এল জল। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার ওয়েবসাইট Cricket.com.au-তে সেই ছবি ধরা পড়েছে। তারা নিজেদের টুইটার হ্যান্ডেলে ভিডিওটি পোস্ট করেছেন।
আপনাদের জানিয়ে রাখি যে এটা সিরাজের দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ। মেলবোর্নে সিরাজ টেস্ট ডেবিউ করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়া সফরের মধ্যেই মারা গেছেন তাঁর বাবা। কিন্তু, সিরাজ দেশে ফিরে যাননি।
কবজিতে চোটের কারণে চলতি সিরিজ় থেকে ছিটকে গেছেন মহম্মদ শামি। তাঁর জায়গাতেই টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয় মহম্মদ সিরাজের। মেলবোর্নে তিনি মোট পাঁচটি উইকেট শিকার করেছিলেন। ২০১৩ সালের মহম্ম শামির পর সিরাজ দ্বিতীয় ভারতীয় ক্রিকেটার যিনি অভিষেক টেস্ট ম্যাচেই পাঁচ উইকেট শিকার করলেন। ২০১৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে শামি ৯ উইকেট নিয়েছিলেন। সিরাজ প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৩৮টি ম্যাচে ১৫২টি উইকেট শিকার করেছেন।
অস্ট্রেলিয়ার কড়া কোভিড বিধির কারণে বাবার অন্তিম সময়ে পাশে থাকতে পারেননি মহম্মদ সিরাজ। শেষবারের দেখাটুকুও দেখতে পারেননি। বাবা ছেড়ে চলে যাওয়ার কষ্ট বুকের মধ্যে চেপে রেখেই তিনি অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেছেন। বিরাট কোহলি তাঁকে মানসিকভাবে শক্ত হওয়ার পরামর্শ দেন। সেই পরামর্শ মাথায় রেখেই তিনি সামনের দিকে এগিয়ে যান।
গত বছর ফুসফুসে সংক্রমনের কারণে হায়দরাবাদে মারা গেছেন সিরাজের বাবা মহম্মদ ঘাউস। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৩ বছর। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সিরাজকে দেশে ফেরার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু ভারতের এই স্পিড স্টার জাতীয় দলের সঙ্গে থাকা এবং খেলার সিদ্ধান্ত নেন।
২৬ বছর বয়সি সিরাজকে তাঁর বিরাট ভাই বলেছিলেন, মিঞাঁ বেশি চিন্তা করো না। আরও শক্ত হও। তোমার বাবা চাইতেন যে তুমি দেশের হয়ে খেলো। সেকারণে নিজের খেলাটাই খেলে যাও অযথা চিন্তা করো না। তৃতীয় টেস্ট ম্যাচেও একটি উইকেট তুলে নিয়েছেন সিরাজ। তাঁর বলে ডেভিড ওয়ার্নার মাত্র ৫ রান করে পূজারার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান।