দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মকর সংক্রান্তি পূণ্য তিথিকে বিভিন্নভাবে পালন করা হল। কোথাও ঘুড়ি ওড়ানো হল, কোথাও চলল দানধ্যান, কোথাও আবার জাল্লিকাট্টুর মাধ্যমে করা হল উদযাপন। সেই জায়গায় আবার ইতিহাস এবং সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ রাজস্থানের বুন্দি জেলায় মকর সংক্রান্তির পার্বন উপলক্ষ্যে ৭০০ বছরের পুরনো পরম্পরাকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে।
বুন্দি জেলা থেকে ২৫ কিলোমিটার দুরে বরুন্ধন গ্রাম রয়েছে। সেখানে একটি পরম্পরা ৭০০ বছর ধরে সমান তালে চলে আসছে। এখানে দুটো গ্রাম দড়া (পুরনো কাপড় দিয়ে তৈরি ফুটবলের মতো গোলাকার বস্তু) নিয়ে মাঠে খেলতে নামে। সন্ধে পর্যন্ত চলে এই খেলা। প্রায় ৪০ কিলো কাপড় দিয়ে এই দড়া তৈরি করা হয়। দুটো দলের মধ্যে এই খেলা আয়োজিত হয়। একমাস আগে থেকেই এর প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়।
রাজপুত সম্প্রদায় এবং গ্রামের জনগণের মধ্যে এই ম্যাচের আয়োজন করা হয়। যুবক থেকে বৃদ্ধ প্রত্যেকেই এই খেলায় অংশগ্রহণ করেন। বলা হয়, এই খেলার মাধ্যমে নাকি বন্ধুত্বের সম্পর্ক আরও মজবুত হয়। তবে এই খেলায় প্রচুর টানটান উত্তেজনার মুহূর্ত তৈরি হয়। কিন্তু, মাথা ঠান্ডা রেখেই প্রত্যেকে খেলেন।
যখন এই খেলা চলে, দেখে মনে হয় যেন গ্রামের মধ্যেই ফুটবল বিশ্বকাপ শুরু হয়ে গেছে। দর্শকেরা নিজেদের বাড়ির ছাদে বসে এই খেলা উপভোগ করেন। আর এই খেলায় চিৎকার এত বেশি হয় যে আশপাশের গ্রাম থেকেও লোকজন ভিড় করে দেখতে আসেন।
প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা খেলার এই পরম্পরাকে আজও এই গ্রামের লোকেরা বাঁচিয়ে রেখেছেন। নিয়ম অনুসারে, প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলে এই খেলা। কিন্তু, গ্রামের লোকেরা সারাদিন ধরেই খেলেন। এবছর দুই দলের মধ্যে ম্যাচ টাই হয়ে গেছে।
কথিত আছে, প্রাচীনকালে রাজপুত দরবারের সঙ্গে সাধারণ জনগণের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার জন্যই এই ম্যাচের আয়োজন করা হত। আজও সেই পরম্পরা সাধারণ মানুষকে আনন্দ দিয়ে আসছে।