বাঙালির পাত থেকে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে ‘বাইন’ মাছ, যাকে আমাদের মধ্যে অনেকেই ‘বাইম’ মাছ নামেও চিনি। কেউ কেউ একে আবার ‘বান’ মাছ নামেও ডাকেন। এখন আর এই মাছ সচরাচর দেখতে পাওয়া যায় না।
এ মাছ বাংলার কয়েকটি বিশেষ নদী-সংলগ্ন অঞ্চল ছাড়া অন্য জায়গায় পাওয়া খুবই দুষ্কর। জলপাইগুড়ির লাটাগুড়ি প্রায় দেড় কেজি ওজনের বাইন মাছ ২৫০-৩০০ টাকা কিলো দরে বিক্রি হয়। কলকাতা বা শহরতলির বাজারে এর দাম আরও খানিকটা বেশি।
নদীর তীরবর্তী এলাকায় যদি কোথাও সর্ষে চাষ হয়, তাহলে সর্ষে শাক বা ফুলের গন্ধে এই মাছ হামেশাই ডাঙায় উঠে আসে বাইন মাছ। আমাদের দিশি বাইন মাছের বিজ্ঞানসম্মত নাম জিম্নোথোরাক্স টাইল (Gymnothorax tile)। ইংরাজিতে একে বলে Indian mottled eel fish। অর্থাৎ, এটি হল ইল মাছ বা ইলেকট্রিক মাছের খাঁটি দিশি সংস্করণ!
এটি বাংলার স্বাদু জলের মাছ। বর্তমানে এটি দুষ্প্রাপ্য মাছের তালিকায় ঢুকে পড়েছে। দক্ষিণবঙ্গের নদীগুলিতে বাইন মাছের আর তেমন একটা দেখা মেলে না। নদীর জলে দূষণের মাত্রা বাড়ার ফলে এই মাছ ক্রমশ হারিয়ে যেতে বসেছে।
দক্ষিণবঙ্গের নদীগুলিতে বাইন মাছের আনাগোণা কমলেও উত্তরবঙ্গের নদীগুলিতে এখনও মাঝে মধ্যেই এই মাছের দেখা মেলে। নদীর পাশের পাথুরে বা ঘাস জমিতে মাঝে মধ্যেই উঠে আসে বাইন মাছ। ধরা পড়ে অপটু হাতেও।
তবে এই মুহূর্তে বাইন মাছের সংরক্ষণ এবং প্রজনন বিশেষ ভাবে প্রয়োজন। না হলে অচিরেই বাঙালির পাত থেকে চিরতরে হারিয়ে যাবে বাইন মাছের ঝাল বা চচ্চড়ির মতো সুস্বাদু পদ।