মাস খানেক আগে তেলের দামের প্রসঙ্গে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান সম্প্রতি রাজ্যসভায় জানান, যেখানে তেলের দামের রদবদল আন্তর্জাতিক দামের উপর নির্ভর করে, তাতে সরকারের কোনও ভূমিকা নেই।
পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী দাবি করেন, শুধুমাত্র পেট্রোলিয়াম সংস্থাগুলিই তেলের দাম নির্ধারণ করছে। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে ফের অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়লেও ২৭ ফেব্রুয়ারির পর থেকে আর বাড়েনি তেলের দাম।
বিগত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দেশে পেট্রল ও ডিজেলের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে তেলের দাম না বাড়লেও আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন পরিস্থিতিতেও তাহলে কি করে স্থিতিশীল রয়েছে তেলের দাম?
প্রশ্ন উঠছে, পাঁচটি রাজ্যে নির্বাচনের কারণেই কি পেট্রল ও ডিজেলের দামের কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না? ফেব্রুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে দেশে জ্বালানির দামও বাড়তে থাকে।
ফেব্রুয়ারিতে তেল সংস্থাগুলি জানিয়েছিল যে, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়ার কারণেই দেশজুড়ে বাড়ছে পেট্রল এবং ডিজেলের দাম। এই কারণেই, পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম দেশের সর্বকালীন উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছে।
দেশের অনেক জায়গায় পেট্রোলের দাম ১০০ টাকায় পৌঁছে গিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও ২৭ ফেব্রুয়ারির পর থেকে পেট্রোল এবং ডিজেলের দামে কোনও পরিবর্তন হয়নি।
দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলের মতে, ফেব্রুয়ারির শেষে পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাডু, অসম, কেরল এবং পুডুচেরিতে নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়লেও স্থিতিশীল রয়েছে পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম।
বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলের মতে, নির্বাচন শিয়রে। তাই রাজ্যের তেল বিপণন সংস্থাগুলি আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়লেও রাজ্যগুলিতে মার্চে এখনও পর্যন্ত বাড়েনি পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম।
২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে আন্তর্জাতিকভাবে অপরিশোধিত তেল ব্যারেল প্রতি ৭ ডলার বেড়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেশে নির্বাচনের দিণ-ক্ষণ ঘোষণার পর থেকে পেট্রোল এবং ডিজেলের দামে কোনও পরিবর্তন হয়নি। পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
ধর্মেন্দ্র প্রধান জানান, বর্তমানে কেন্দ্র লিটার প্রতি পেট্রোলে ৩২.৯০ টাকা, ডিজেলে লিটার প্রতি ৩১.৮০ টাকা উৎপাদন শুল্ক নিয়ে থাকে। ২০১৮-এ পেট্রোলে কেন্দ্রীয় শুল্কের পরিমাণ ছিল প্রতি লিটারে ১৭.৯৮ টাকা আর প্রতি লিটার ডিজেলে ১৩.৮৩ টাকা। অর্থাৎ, এই দু’বছরে দ্বিগুণ বেড়েছে তেলের উপর কেন্দ্রীয় শুল্কের পরিমাণ। নিবার্চনের মুখে কি তাহলে এই শুল্কের সঙ্গেই আপোস করে তেলের দাম স্থিতিশীল রেখেছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার? উঠছে প্রশ্ন।