সুন্দরবন বায়োস্ফিয়ার বাদ দিয়ে, রাজ্যের বাকি সব জাতীয় উদ্যান, টাইগার রিজার্ভ, অভয়ারণ্য, সহ বনদপ্তরের অধীনে থাকা সকল সংরক্ষিত অঞ্চলের দরজা খুলে গেল। শেষ পর্যন্ত কোভিড পরিস্থিতিতেও এক্কেবারে প্রায় সময় মেনেই ১৬ সেপ্টেম্বর জঙ্গল খুলেছে। যার দরুণ স্বস্তি মিলেছে রাজ্যের পর্যটন মহলেও।
জানা গিয়েছে, ১৫ সেপ্টেম্বর রাতেই জঙ্গল খোলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে রাজ্য সরকার। এদিন সকাল থেকেই বনদপ্তরের সবকটি ডিভিশনে রাজ্য সরকারের সেই বিজ্ঞপ্তি পৌঁছে গিয়েছে।শুক্রবার থেকেই উত্তরবঙ্গের প্রতিটি জঙ্গলে নিয়ম মেনেই পর্যটকরা প্রবেশ করতে পারবেন।
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প,জলদাপাড়া জাতিয় উদ্যান, চিলাপাতা, গরুমারা,জাতীয় উদ্যানে কোভিভ বিধি মেনেই জঙ্গল সাফারি,নিয়ম মেনে ঘুরে বেড়াতে পারবেন পর্যটকেরা। তবে জলদাপাড়া,গরুমারায় এলিফ্যান্ট সাফারি আপাতত বন্ধই থাকছে। উল্লেখ্য, দেশ জুড়ে প্রতিবছরের মত এবারেও ১৫ জুন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর তিন মাস বন্ধ ছিল সব জঙ্গল।
তবে মূলত পর্যটন মহলেই জল্পনা ছিল ১৫ সেপ্টেম্বর জঙ্গল খুলবে কিনা। পুজোর মরসুমে জঙ্গল বন্ধ থাকলে উত্তরবঙ্গের পর্যটনে আর ক্ষতির সম্ভাবনা ছিল। পর্যটন মহলের তরফেও সম্মিলিত ভাবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের,বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কাছে আবেদন করা হয়। এদিকে,জঙ্গল খুলে দেওয়া হলেও কড়া ভাবে কোভিড প্রটোকল মানার উপর বিশেষ নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য সরকার।
জঙ্গলে বেড়াতে আসা পর্যটকদের মাস্ক, স্যানিটাইজার, সামাজিক দূরত্ব বিধি মানতেই হবে।হোটেল, লজ,রিসর্ট,হোমস্টে গুলিতে কোভিভ নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়েই প্রবেশ করতে হবে। থাকতে হবে করোনা টিকার দুই ডোজের শংসাপত্র।
জিপসি সাফারিতেও গত বছরের মতই একই নিয়মে নির্দিষ্ট সংখ্যায় যাত্রী নিয়ে দূরত্ব বিধি মেনেই জঙ্গল সাফারি চলবে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যটক আবাস গুলি নিয়মিত ভাবে স্যানিটাইজ করা হচ্ছে কিনা তার উপর কড়া নজরদারি চালাবেন বনাধিকারিকরা।
হিমালয়ান হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট এ্যান্ত ট্যুরিজম নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যল জানিয়েছেন "কোভিডের থাবায় আমাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত পর্যটকদের জন্য জঙ্গল খোলার নির্দেশিকা জারি হওয়ায় স্বস্তি অনুভব করছি।
তবে আমাদেরও কোভিড বিধি কড়া ভাবে মেনে চলার বিষয়টিকে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। উত্তরবঙ্গের অতিরিক্ত প্রধান মুখ্য বনপাল উজ্জ্বল ঘোষ জানিয়েছেন " কোভিডের আতঙ্ক কাটিয়ে জঙ্গল পর্যটন চালু করা হলেও আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।"
উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণ শাখার মুখ্য বনপাল রাজেন্দ্র জাখর জানিয়েছেন "জঙ্গলে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কোভিড বিধি মেনে চলার উপর কড়া নজরদারি থাকবে বনদপ্তরের।কেউ যাতে ওই সতর্কতা না অমান্য করেন, সে বিষয়ে বিনম্র আবেদন জানাচ্ছি।" এদিকে,কোভিডের তৃতীয় ঢেউ এসে না পৌঁছলেও ইতিমধ্যেই অজানা জ্বরে উত্তরবঙ্গে আক্রান্ত হয়েছে শিশুরা।বিষয়টি কিছুটা হলেও চিন্তায় রেখেছে বিভিন্ন মহলকে।