টোটো নাকি অটো রিকশা—কোনটি কিনলে বেশি লাভজনক? এই প্রশ্নটি আজকের অনেক বেকার যুবক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও গ্রামীণ উদ্যোক্তার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে।
কারণ যাত্রাপথে মানুষের চাহিদা যেমন বেড়েছে, তেমনই পরিবহণ খাতে বিনিয়োগও লাভজনক হয়ে উঠেছে। তবে টোটো (ব্যাটারি চালিত রিকশা) আর অটো রিকশার মধ্যে কোনটা ব্যবসায়িকভাবে বেশি লাভের হবে, তা নির্ভর করছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর।
নতুন একটি টোটো কিনতে খরচ পড়ে ₹১.২ লাখ থেকে ১.৬ লাখ টাকা। চার্জিংয়ের জন্য বিদ্যুৎ খরচ কম (প্রতি দিনের চার্জে গড়ে ১৫–২০ টাকা)। ইনস্যুরেন্স, রক্ষণাবেক্ষণ খরচও তুলনায় কম।
পেট্রোল/ডিজেল অটো: ২.৫–৩.৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম হতে পারে। CNG অটোর দাম পড়ে যায় ৩ লাখ টাকার কাছাকাছি। জ্বালানির খরচ (দৈনিক ৩০০–৪৫০ টাকা), মেরামতির খরচ তুলনায় বেশি।
নির্দিষ্ট এলাকাভিত্তিক, বিশেষত মফস্বল ও শহরতলি রুটে চলে। একবার ফুল চার্জে চলে ৭০–৯০ কিমি। জ্যামে চলতে সুবিধাজনক, কিন্তু হাইওয়ে বা দীর্ঘ রুটে নিষিদ্ধ অনেক জায়গায়।
শহরাঞ্চলে ও হাইওয়ে ধরে চলার অনুমতি থাকে। দিনে ১৫০–২০০ কিমি পর্যন্ত চলতে পারে। যাত্রীসংখ্যা ও ভাড়ার ক্ষেত্রেও বেশি স্কোপ।
টোটো চালকরা গড়ে রোজ ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা উপার্জন করেন, যদি সঠিক রুটে চলাচল হয় এবং যাত্রী সংখ্যা ভাল হয়। অটো চালকরা ৭০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত রোজগার করতে পারেন, নির্ভর করছে দিনের ট্রিপ, শহর ও যাত্রীঘনত্বের উপর।
টোটো চালাতে সাধারণত ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রয়োজন হয় না (বেশিরভাগ রাজ্যে), কিন্তু ব্যবসায়িকভাবে চালালে ট্রেড লাইসেন্স জরুরি। অটো চালাতে বৈধ LMV ড্রাইভিং লাইসেন্স, ইনস্যুরেন্স, ফিটনেস সার্টিফিকেট প্রয়োজন।
টোটো সম্পূর্ণ বিদ্যুৎচালিত, কোনও দূষণ নেই। অটো (CNG ছাড়া) পরিবেশে কার্বন ছাড়ে।
আপনি যদি মফস্বল, ছোট শহর বা গ্রামীণ অঞ্চলে থাকেন, কম খরচে স্টার্টআপ চান, তাহলে টোটো লাভজনক হবে। আপনি যদি শহরে নিয়মিত রুটে বেশি আয়ের সুযোগ খোঁজেন এবং উচ্চ প্রাথমিক বিনিয়োগে রাজি থাকেন, তাহলে অটো রিকশা বেশি লাভজনক।
টোটোর গতি অনেকটাই কম। ফলে ব্যস্ত ও বড় রাস্তায় অসুবিধা হয়। কিন্তু অটোর গতি বেশি।
পুঁজি, লোকেশন, রুট অনুমতি ও দৈনিক চাহিদা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিন। প্রয়োজনে স্থানীয় ট্রান্সপোর্ট অফিস বা বিদ্যুৎ দফতর থেকেও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা যেতে পারে।