Advertisement

উত্তরবঙ্গ

কলকাতা বাদ, নেদারল্যান্ডের মিউজিয়ামে যাচ্ছে শিলিগুড়িতে তৈরি বুদ্ধমূর্তি

জয়দীপ বাগ
  • শিলিগুড়ি,
  • 10 Dec 2021,
  • Updated 2:25 PM IST
  • 1/6

এই প্রথমবার শিলিগুড়ি কোনও মৃৎশিল্পীর হাতের তৈরি মূর্তি পারি দিচ্ছে ইউরোপ দেশের নেদারল্যান্ড শহরে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি সপ্তাহের শেষে বুদ্ধ ও তারা মূর্তি পৌঁছে যেতে পারে বিদেশে। তাই এখন জোর কদমে চলছে মূর্তির তৈরির শেষ মুহূর্তের কাজ। রাজ্যের শিল্পকলাকে বিদেশে তুলে ধরতে পেরে খুশি মৃৎশিল্পী উৎপল পাল।

  • 2/6

কৃষ্ণনগর এবং কলকাতার কুমোরটুলি বরাবরই রাজ্যের মধ্যে সুনাম অর্জনকারী। তবে এবার সেই তালিকায় নাম নথিভুক্ত করালো শিলিগুড়ি মাটিগাড়ার কুমোরটুলি। এতদিন পর্যন্ত কলকাতা কিংবা কৃষ্ণনগরের কুমোরটুলি থেকে প্রচুর প্রতিমা বিদেশে পাড়ি দিত। এই প্রথমবার শিলিগুড়ির কুমারটুলি প্রতিমা পাড়ি দিচ্ছে বিদেশের মাটিতে। তবে এই অসাধ্যকে বাস্তব রূপ দিয়েছে মাটিগাড়া বছর ২৯ এর মৃৎশিল্পী উৎপল পাল। জানা গিয়েছে তার তৈরি দুটি মূর্তি সজ্জিত হবে নেদারল্যান্ড শহরের "Museum of contemporary tibetan art" সেন্টারে। 

  • 3/6

মাটিগাড়ার পালপাড়া এলাকারই বাসিন্দা মৃৎশিল্পী উৎপল পাল ছোটো থেকেই মূর্তি তৈরি কাজ করেন। তবে গত ১০ বছর ধরে তিনি তিব্বতীয় আর্টের কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তার দক্ষতা ও সৃষ্টিকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করেছিলেন তিনি। আর তাতেই তার সৃষ্টি পৌঁছে যাচ্ছে বিশ্বের দরবারে।

  • 4/6

তার হাতের তৈরি শিল্পকলা দেখে নেদারল্যান্ড শহরের ওই মিউজিয়ামের তরফে তার সাথে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়। এবং ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে একটি বুদ্ধ ও তারা মূর্তি তৈরির জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় মিউজিয়ামের তরফে। এর মধ্যে উৎপলকে অগ্রিম ২০ হাজার টাকা বায়না দেয় ওই সংস্থা। অবশেষে কাজ সম্পন্ন হওয়ায় চলতি সপ্তাহে মূর্তি দুটি ট্রান্সপোর্ট এর মাধ্যমে পৌঁছে যাবে সুদূর নেদারল্যান্ড শহরে। মূর্তি দুটি তৈরি করা হয়েছে ফাইবার দিয়ে। এই মূর্তি দুটির উচ্চতা প্রায় ৩ ফুট ৩ ইঞ্চি এবং ওজন প্রায় ১৫ কেজি করে। 

  • 5/6

প্রসঙ্গত করোনা প্রতিমারির সময়ে এই মৃৎশিল্প বড় ধাক্কা খেয়েছিল। এই মাটিগাড়ার পালপাড়া থেকেও বহু মৃৎশিল্পী ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন ভিন্ন পেশার সন্ধানে। অনেকে আবার অভাবের তাড়নায় আজ পেশাও বদলে ফেলেছে। কিন্তু ২৯ বছরের যুবক উৎপল পাল তার পৈতৃক ভিটে ছেড়ে কোথাও যাননি। জানা গিয়েছে বাড়িতে থেকেই তিনি নিজের শিল্পকলা সৃষ্টির কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। উৎপল বাবু মাধ্যমিক পাস করার পর আর পড়াশোনা করেননি। তার পূর্ব পুরুষেরা মাটির হাড়ি পাতিল তৈরি করলেও কোনদিনই মুর্তি তৈরি করেননি। এদিন উৎপলবাবু বলেন, প্রতিবেশীদের অনেকেই মূর্তি তৈরির কাজ করতেন। তারপর শিলিগুড়ি কুমোরটুলিতে দেবেন পালের তত্ত্বাবধানে দীর্ঘদিন থেকে তিনি এই মূর্তি তৈরির কাজ শিখে নিজেই মূর্তি তৈরি আরম্ভ করেন। 

 

  • 6/6

মৃৎশিল্পী উৎপল পাল বলেন, ছোটবেলা থেকেই মূর্তি তৈরি কাজ ভালো লাগতো। তখন থেকেই মনে একটা স্বপ্ন ছিল আমার শিল্পকলা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরব। তারপর থেকে প্রতিনিয়ত আমার তৈরি জিনিস সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার চালাতাম। সেই ছবি ও তথ্য দেখে নেদারল্যান্ডের ওই সংস্থার পছন্দ হওয়ায় আমার সাথে ফেব্রুয়ারি মাসে যোগাযোগ করে তারা এবং তারপরেই দুটি মূর্তি বানানোর বরাদ্দ দেয় আমাকে। তবে আমি আমার হাতের তৈরি মূর্তি এবং আমার শিল্প সত্তাকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে পেরে আমি গর্বিত। শুধু তাই নয় বিশ্বের দরবারে ও শিলিগুড়ির কুমারটুলির শিল্পীদের আলাদা স্থান হবে এটা আমার বিশ্বাস।

Advertisement
Advertisement